সরকারিভাবে বিনা খরচে জর্ডানে নারী পোশাক শ্রমিক পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। সম্প্রতি এজন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি এবং মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানো হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন দেশের তৈরি পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিক ও ব্যবসায়ী নেতারা।
বোয়েসেল এর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বোয়েসেল জর্ডানে সরকারিভাবে বিনা খরচে নারী গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। প্রতি শুক্রবার বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (বিকেটিটিসি), বাংলাদেশ-জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্ৰ (বিজিটিটিসি) ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব টিটিসিতে কর্মী বাছাই করা হবে।’ তারা যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বরও দিয়েছে।
পোশাক শ্রমিক রাপ্তানির বিষয়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সরকারিভাবে কম খরচে বিদেশে শ্রমিক রপ্তানির উদ্যোগটি ভালো। তবে এই উদ্যোগের জন্য তাদের নিজেদের কোনো কৃতিত্ব নেই। কারণ তাদের নিজেদের কোনো দক্ষ শ্রমিক নেই। অন্যদের তৈরি করা শ্রমিক নিজেদের নামে পাঠাচ্ছে। আর যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারাও ভালো নেই। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের নারী শ্রমিকরা। কিছু দিন আগে জর্ডানে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছিলো। অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাদের সঙ্গে করা চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একই অবস্থা মরিশাসে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় আন্তর্জাতিক বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এজন্য দেশের কারখানাগুলোতে শ্রমিকের চাহিদা বেড়েছে। সে ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ চাহিদা না মিটিয়ে উল্টো কারখানায় কর্মরত শ্রমিককে রপ্তানির উদ্যোগ নেতিবাচক হয়ে উঠতে পারে।’
সরকারিভাবে জনশক্তি রপ্তানিকারক একমাত্র প্রতিষ্ঠান- বোয়েসেল । ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিশেলস ও মরিশাসে দক্ষ, কম দক্ষ এবং অদক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করে আসছে বোয়েসেল।
নারী শ্রমিক রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) পরিচালক ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘আমরা এমনিতেই দক্ষ শ্রমিক পাই না, তার উপরে বোয়েসেল নিজেরা কোনো ট্রেনিং না দিয়ে, আমাদের শ্রমিকদের সরকারিভাবে বিদেশ পাঠাচ্ছে। তাও আবার ‘জর্ডানে নারী শ্রমিক’। যেখানে শ্রম নিরাপত্তার কিছুই নেই। এরপরও যদি ভালো মনে করে প্রয়োজনে পাঠাক। কিন্তু বোয়েসেল বা সরকারের নিজস্ব ট্রেনিং দিয়ে পাঠানো উচিত।’