মহামারী করোনা ভাইরাসের ধকল কাটিয়ে উঠছে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প। নতুন বাজার ধরতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা শুরু করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন দেশে দূতাবাসগুলোকে কাজে লাগাতে চান উদ্যোক্তারা। দূতাবাসগুলো ক্রেতাদের আকৃষ্ট, নতুন দেশের বাজার তৈরি এবং পোশাক খাতকে ব্র্যান্ডিং করাই মুখ্য উদ্দেশ্য। আবার দেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের কাছেও নিরাপদ ও টেকসই পোশাক উৎপাদনের বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে। এভাবে বাজার প্রসার ও দেশকে পোশাক খাতে নেতৃত্ব দিতে শুধু রাষ্ট্রদূত, দূতাবাস নয়, সরকারি সহায়তাও চাওয়া হচ্ছে। সভা-সেমিনার করা হচ্ছে ক্রেতা বা ব্র্যান্ডের সঙ্গে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদ উল্লাহ আজিম বলেন, করোনার ধাক্কা সামাল দিতে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি নতুন বাজার তৈরি করতে। রপ্তানির ধারা ধরে রাখতে হলে সার্বিকভাবে চেষ্টা অব্যাহত রাখা দরকার।
নিরাপদ কর্মপরিবেশ আর বিশ্ববাজার আয়ত্তে রাখতে কূটনৈতিক তৎপরতা কাজে লাগাতে চান দেশীয় পোশাক খাত উদ্যোক্তারা। এ জন্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সাবেক রাষ্ট্রদূত যারা বাংলাদেশে নিযুক্ত ছিলেন, তাদের মাধ্যমে দেশের পোশাক খাতের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরছেন। সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করছেন ক্রেতা বা ব্র্যান্ডের সঙ্গে। এরই অংশ হিসেবে আমেরিকা-কানাডার মতো দেশে বিজিএমইএর প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, মার্কিন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের উদ্যোগে গোলটেবিল বৈঠক হয়। সভায় অংশ নেন দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন, টেক্সটাইলবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি উইলিয়াম জ্যাকসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক জেনিফার লারসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের পরিচালক মরিন হ্যাগার্ডসহ ম্যাকলার্টি অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিনিধিরা।
এ ছাড়া ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ), ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সভায় পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা (আরএসসি), কর্মস্থলের নিরাপত্তা বজায় রাখতে ট্রাইপাট্রাইট কনসালটেটিভ কাউন্সিল গঠন, রানা প্লাজার পর সরকারের নেওয়া শ্রমিকদের কল্যাণ ও শিল্পকে রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি, কারখানার কর্মপরিবেশ তুলে ধরা হয়। এ সময় পোশাকের ন্যায্যমূল্য দিতে মার্কিন ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সহযোগিতার আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতিসহ একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় আমেরিকায় পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে সহায়তা চান বিজিএমইএ নেতারা। টেক্সটাইল খাতে, বিশেষ করে নন-কটন খাতে মার্কিন ব্যবসায়ী ও অনাবাসিক বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণ করার বিষয়ে আমেরিকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের কাছে সহযোগিতার কথা বলা হয়।