২০১২ সালে অক্টোবরের ১৩ তারিখে তুলার দাম ছিল পাউন্ডপ্রতি ৭১ দশমিক ৪২ সেন্ট। সর্বশেষ গতকাল তুলার দাম হয়েছে পাউন্ডপ্রতি ১ ডলার ৬ সেন্ট। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দামের এ ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তৈরি পোশাক পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাসহ আগামীতে সুতার প্রাপ্যতা নিশ্চিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। এ প্রেক্ষাপটে চার দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুলাজাত সুতা উৎপাদনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
বিটিএমএ জানিয়েছে, তুলার মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে ১২ অক্টোবর জরুরি বৈঠকে অংশ নেয় সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। সভায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় তুলার দাম ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সভায় তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানের রফতানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং সুতার প্রাপ্যতা নিশ্চিতের জন্য পর্ষদ সভায় চার দফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আর এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিটিএমএ সভাপতিকে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএতে উত্থাপনের মাধ্যমে কার্যকর করার বিষয়ে কর্তৃত্ব দেয়া হয়।
সভায় গ্রহণ করা সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে প্রথমেই আছে তুলার বর্তমান প্রাইস ইনডেক্স বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতাদের কাছে উত্থাপন এবং তার ভিত্তিতে সুতার বিক্রয়মূল্য এখন ও আগামীতে কী হতে পারে তা তিন পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ এবং তা কতদিনের জন্য বহাল থাকবে তা নির্ধারণ। দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি হলো, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতার ভিত্তিতে সুতার যে মূল্য নির্ধারণ হবে, তার ভিত্তিতে যদি বিটিএমএর কোনো সদস্য মিল পিআই ইস্যু এবং পিআইতে বর্ণিত ১৫ দিনের সময়সীমায় সুতা সরবরাহে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাহলে সংশ্লিষ্ট মিলের নাম সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ পাঠানো হলে বিটিএমএ কর্তৃক ওই মিলের অনুকূলে প্রদেয় সব ধরনের সেবা বন্ধের বিষয় বিবেচনা করা।
তৃতীয় সিদ্ধান্তটি হলো, একইভাবে পিআইতে বর্ণিত সময়ের মধ্যে যে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান এলসি প্রদানে ব্যর্থ হবে, ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও বিজিএমইএ, বিকেএমইএ কর্তৃক অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা বিটিএমএকে অবগত করতে হবে। চতুর্থ সিদ্ধান্তটি হলো, তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ গ্রহণের ক্ষেত্রে সুতা একটি নিয়ামক বা ফ্যাক্টর, তাই প্রতি ১৫ দিন অন্তর বিটিএমএ একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বা অন্য কোনো মাধ্যমে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুতার মূল্য কী হতে যাচ্ছে বা কী হতে পারে, সে বিষয়ে আগাম তথ্য সরবরাহ করবে।