Home Apparel জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত

# উদ্যোক্তারা বলছেন উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৫ শতাংশ # পরিবহন ধর্মঘটে ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি কমার আশঙ্কা

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতির মুখে পড়ল তৈরি পোশাক খাত। কাঁচামাল আমদানি, পণ্য উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্য বন্দরে পৌঁছানো- এসব কাজে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। তারা জানান, পোশাক উৎপাদনে ব্যবহূত এক্সেসরিজ উৎপাদনের বাড়তি ব্যয়ের বোঝাও এসে পড়বে পোশাক খাতে। এ ছাড়া গত তিন দিন পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বন্দরে সময়মতো পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এসব পণ্য এখন আকাশপথে তিনগুণ বেশি ব্যয়ে ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে হবে। সব মিলিয়ে উৎপাদন ব্যয় বাড়ল অন্তত পাঁচ শতাংশ। অন্যদিকে, প্রতিযোগী অন্য কোনো দেশে জ্বালানির মূল্য বাড়ানো হয়নি। এর অর্থ, প্রতিযোগিতায় আরেক দফা পিছিয়ে পড়ল দেশের পোশাক খাত।

পোশাক উৎপাদনে জেনারেটর, বয়লার, ওয়াশিং, ডায়িংয়ের এমব্রয়ডারিতে ডিজেল ব্যবহার হয়ে থাকে। আমদানি করা কাঁচামাল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের কারখানা গেটে পৌঁছাতে হয় ট্রাক বা কনটেইনারে। একইভাবে উৎপাদিত পণ্যও কারখানা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে দিতে হয়। কাঁচামাল আমদানি এবং রপ্তানি পণ্য বন্দরে পৌঁছাতে পরিবহন খাতের মাধ্যমে ডিজেলের ব্যবহার হয় পোশাক খাতে।

গত বুধবার ডিজেল এবং কেরোসিনের দর লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এ দুই ধরনের জ্বালানির দর দাঁড়িয়েছে প্রতি লিটার ৮০ টাকা। যেটি এতদিন ছিল ৬৫ টাকা। জ্বালানির দর বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন পরিবহন মালিকরা। ভাড়া সমন্বয়ের আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। উদ্যেক্তাদের দাবি, ডিজেলের দর যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া দাবি করছেন পরিবহন মালিকরা।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, ডিজেলের দর বৃদ্ধিতে পোশাক উৎপাদন ব্যয় বাড়ল অন্তত ৫ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় আরও কিছুটা পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরে হাতে প্রচুর রপ্তানি আদেশ। রপ্তানির পরিমাণেও রেকর্ড হচ্ছে। তবে এর মানে এই নয় যে, খুব মুনাফা হচ্ছে। কারণ, নানা খাতে ব্যয় বাড়ছেই। সর্বশেষ বাড়ল জ্বালানি খাতে। এতে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, নতুন করে দরবৃদ্ধির আগে ঢাকা এবং আশপাশের এলাকার কারখানা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এক কনটেইনার পণ্য পৌঁছাতে গড় ভাড়া ছিল ১২ হাজার টাকা। এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা অতিরিক্ত দাবি করা হচ্ছে। ১০ শতাংশের মতো কারখানা নিজস্ব কনটেইনারে পণ্য পরিবহন করে থাকে। বাকিরা মাসিক কিংবা ট্রিপ ভিত্তিতে ট্রাক ভাড়ায় পণ্য আনা-নেওয়া করে।

বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম সমকালকে বলেন, করোনার ক্ষতি এবং নানা খাতে ব্যয় বৃদ্ধিতে এমনিতেই চাপে আছে পোশাক খাত। এর মধ্যে সরকার ডিজেলের দাম বাড়াল। তার ওপর পরিবহন মালিকরা সিন্ডিকেট করে অস্বাভাবিক ভাড়া হাঁকাচ্ছেন। এটা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। এ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সঙ্গে বসে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করতে গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাক মালিক সমিতিকে নির্দেশ দিয়েছে। সমিতি দুই দিন সময় নিয়েছে। গত কয়েক দিনের পরিবহন ধর্মঘটে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি কম হবে বলেও মনে করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here