বিজিএমইএর ১৭ নির্দেশনা
মহামারি করোনার নতুন ধরন অমিক্রন বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। ধরনটি দ্রুত ছাড়তে পারে এ আশঙ্কায় রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলোর প্রতি ১৭টি নির্দেশনা দিয়ে তা মানতে বলেছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
নিজেদের সদস্য কারখানার প্রতি গত সপ্তাহে দেওয়া এ নির্দেশনায় বিজিএমইএ বলেছে, পোশাক কারখানায় উৎপাদন শুরু ও ছুটির সময় শ্রমিকদের ভিড় এড়ানোর জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময় নির্ধারণে জোর দিতে হবে। তা ছাড়া শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের ব্যবস্থা করা দরকার। সম্ভব হলে বিভিন্ন বিভাগের কর্মঘণ্টার জন্য আলাদা শিফটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কারখানায় প্রবেশের সময় শ্রমিকদের দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ এবং প্রয়োজনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে।
কারখানায় প্রবেশের সময় প্রধান ফটকসংলগ্ন এলাকায় শ্রমিকদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানির ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ। এ ছাড়া কাজের জায়গায় শ্রমিকদের ভিড় এড়িয়ে চলার জন্য শ্রমিকদের উৎসাহিত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুপুরের খাবারের বিরতিসহ অন্যান্য বিরতির সময় বিভিন্ন বিভাগের শ্রমিকদের আলাদা আলাদা সময় নির্ধারণ করতে হবে।
কর্মক্ষেত্রে সার্বক্ষণিকভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে সদস্য কারখানাগুলোর প্রতি এ নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ। এ ছাড়া সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য লোকসমাগম এড়িয়ে চলতে শ্রমিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হলে রোগীকে আইসোলেশনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট রোগীর সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে কারখানা কর্তৃপক্ষকে।
বিজিএমইএর সচিব মো. ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি পোশাকশিল্পে করোনার সংক্রমণের মাত্রা ছিল খুবই সামান্য। সরকারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা গাইডলাইন ও হেলথ প্রটোকল যথাযথভাবে অনুসরণ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছিল। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে করোনার নতুন ধরন অমিক্রনও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
করোনার নতুন ধরন অমিক্রন ৩৮ দেশে শনাক্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই ধরনে আক্রান্ত কারোর মৃত্যু হয়নি। গতকাল শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এসব তথ্য জানিয়েছে। ডব্লিউএইচও বলেছে, অমিক্রন ধরনের সংক্রমণে এখনো কোনো মৃত্যুর কথা তারা জানাতে পারেনি। তবে নতুন এ ধরন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় সব দেশকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচও বলছে, আগামী কয়েক মাসে ইউরোপে মোট কোভিড সংক্রমণের অর্ধেকই হতে পারে অমিক্রনের কারণে।