Home Apparel রপ্তানিতে আবারও চমক

রপ্তানিতে আবারও চমক

গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ৪৮ শতাংশ
গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ৪৮ শতাংশ

গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ৪৮ শতাংশ

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন যখন বড় রপ্তানি বাজারগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন শঙ্কা ঘিরে ধরেছে দেশের রপ্তানি খাতকে। কিন্তু সব শঙ্কা পেছনে ফেলে বছর শেষে সেরা চমক দেখাল বৈদেশি মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় এ খাত। গত ডিসেম্বরে ইতিহাসের সেরা প্রবৃদ্ধি হয়েছে রপ্তানি আয়ে। এ মাসে প্রবৃদ্ধি এসেছে ৪৮ শতাংশের বেশি। এ সময় আয় হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার।

এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আয় হয়েছে দুই হাজার ৪৬৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮.৪১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের এই সময় আয় হয়েছিল এক হাজার ৯২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের এ হালনাগাদ তথ্য  প্রকাশ করে। 

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৪৯০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার আয় হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা দরে টাকার অঙ্কে এই আয় ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি। একক মাস হিসেবে এত রপ্তানি আয়ের এটাই প্রথম রেকর্ড। এ আয় এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৪৮.২৭ শতাংশ। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আয় ছিল ৩৩০ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। এর আগে একক মাস হিসেবে গত অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪৭২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

রপ্তানিতে বরাবরের মতোই বেশির ভাগ অবদান পোশাক খাতের। ইপিবির পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০২১ সালের একই মাসে পোশাক রপ্তানি ৫২.৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ২০১৯-এর ডিসেম্বরের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি ৩৮ শতাংশ। ২০২১-এর ডিসেম্বর মাসে ৪০৪ কোটি ডলার সমমূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২১) রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৯০ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ শতাংশের বেশি। পণ্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে ৫৬.৫৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে ওভেন পোশাকের রপ্তানিতে ৪৮.১৭ শতাংশ বৃদ্ধি এসেছে।

এই বিষয়ে বিজিএমইএ পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী পোশাক খাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ করা গেলেও সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন—টেক্সটাইল, পণ্য জাহাজীকরণ খরচ, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক চড়া। কিন্তু পণ্য উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির অনুপাতে পোশাকের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাড়ছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে কভিডের নতুন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। কভিডের সংক্রমণ রোধে ও নিজেদের রক্ষার্থে দেশগুলো বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ফলে পোশাকের নতুন ও চলমান রপ্তানি আদেশের ওপর প্রভাব পড়ছে।’

অন্য প্রধান রপ্তানি আয়ের খাতগুলোর মধ্যে হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্যে আয় হয়েছে সাত কোটি ১০ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩৪ শতাংশ। হস্তশিল্পে আয় দুই কোটি ১৩ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ। হোম টেক্সটাইলে আয় ৭১ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ৩১ শতাংশ। হালকা প্রকৌশলে রপ্তানি আয় ৪৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ৬৮ শতাংশ। সিরামিক পণ্যে আয় এসেছে দুই কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩ শতাংশ।

তবে রপ্তানির এত জোয়ারেও ভালো যাচ্ছে না দেশের সোনালি আঁশ খ্যাত পাট ও পাটজাত পণ্যে। চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে এ খাতে আয় এসেছে ৫৯ কোটি ডলার। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ কম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here