এতদিন যে টি-শার্টের দাম ২ ডলার দিতো, এখন তা ১ ডলার ৯০ সেন্ট অফার করবে। ফলে আলটিমেটলি এর প্রভাব আমাদের উপরই পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি-নির্ধারণী সুদহার বাড়ানোর চক্রবৃদ্ধি প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ফলত; বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্য আনতে অন্যান্য উন্নত অর্থনীতিকেও তাদের সুদহার বাড়াতে হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপে অন্যান্য মুদ্রার চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে ডলারের মান। ডলার যেভাবে শক্তিশালী হচ্ছে- তা বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির জন্য দুঃসংবাদ।
ফেডারেল রিজার্ভের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম
সারা বিশ্বই এক ধরনের মন্দার দিকে যাচ্ছে। করোনার কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে একটা টালমাটাল পরিস্থিতি গেলো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এটা আরও বড় আকার ধারণ করছে এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মন্দার দিকে যাচ্ছে। আমরাও এর বাইরে থাকতে পারবো না।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের বায়ারদের সেল কমবে, আমাদের রপ্তানি আদেশও কমবে। আবার, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে ইন্টারেস্ট বাড়াচ্ছে, তাতে বায়াররা চেষ্টা করবে আমাদের তৈরি পোশাকের দাম কমিয়ে বাড়তি ইন্টারেস্ট আদায় করতে।
এতদিন যে টি-শার্টের দাম ২ ডলার দিতো, এখন তা ১ ডলার ৯০ সেন্ট অফার করবে। ফলে আলটিমেটলি এর প্রভাব আমাদের উপরই পড়বে।
ক্রয়াদেশ ও দাম কমে গেলে আমরা চিন্তা করবো যে, কম দামে অর্ডার নিয়ে কারখানা চালু রেখে ব্যাংকের দেনা ও শ্রমিকদের বেতন দিলে লোকসান কম হবে, নাকি কারখানা বন্ধ রাখলে লোকসান কম হবে।
তখন দেখা যাবে, ১০ সেন্ট কম পেলেও অর্ডার নিয়ে রপ্তানি করলে আমার লোকসান কম হবে। তখন আমি লোকসান দিয়েই কারখানা চালাতে বাধ্য হব।
এদিকে, আমাদের সকল প্রকার খরচ বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় বাজেটে সোর্স ট্যাক্স ০.৫০ থেকে ১ শতাংশ করা কোনো যুক্তিতেই উচিত হয়নি।
ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, এক্সপোর্ট করে আমরা ওই রেট পাই না।
এক্সপোর্ট করে আমরা ৮৯-৯০ টাকা পাচ্ছি। কিন্তু আমদানি করতে হলে আমাদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। তাই দেশে ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানিকারকদের লাভ হয়নি।
দেশে মূ্ল্যস্ফীতি বাড়ায় শ্রমিকরা নতুন মজুরি কাঠামোর দাবি তুলছে, যা যৌক্তিক। কিন্তু এই ধরনের বিশ্ব পরিস্থিতিতে কোথাও শ্রমিকের বেতন বাড়ে না, বরং কমে।
কোভিডের সময় বিমান তার কর্মীদের বেতন কমিয়েছে, আমরা উল্টো ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিয়েছি।
বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আমরা কর্মীদের জন্য রেশনিং চালু করার অনুরোধ জানাচ্ছি সরকারকে, যাতে স্বল্প মূল্যে খাদ্য পণ্য পায়।