তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান আজ বলেছেন, নির্দোষ গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাউকে চাকরিচ্যুত করা হবে না।
আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তৈরি পোশাক খাতের এই শীর্ষ সংগঠনের সভাপতি বলেন, যদি এমন কোনো শ্রমিককে পাওয়া যায় যিনি অসন্তোষের সময় সরাসরি কারখানায় ভাঙচুর, লুটপাট বা অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত- তাহলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। অন্যথায় নয়।
তবে এখন পর্যন্ত কত কারখানা থেকে কতজন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বিজিএমইএ জানে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউকে চাকরিচ্যুত করা হলে শ্রম আইন অনুযায়ী তার সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
তবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নেতারা অভিযোগ করছেন, বেতন বৈষম্য ও মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে গত সপ্তাহে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ঢাকায় বিভিন্ন কারখানায় প্রায় তিন হাজার জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর মধ্যে আশুলিয়ায় ১৬টি কারখানায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ১,৪১১ জন শ্রমিককে।
দ্য ডেইলি স্টারের সাভার প্রতিনিধি আজ বৃহস্পতিবার এরকম বেশ কয়েকটি কারখানায় গিয়ে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এসব কারখানায় চাকরিচ্যুতদের ছবিসহ তালিকা গেট ও আশপাশের দেয়ালে সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ শুধু ছাঁটাই নয়, আন্দোলন করার কারণে বেশ কয়েকজন শ্রমিককে তুলেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আন্দোলন শুরু হওয়ার দুদিন পর থেকে আমাদের সংগঠনের লোকজন নিখোঁজ হওয়া শুরু করে। আজকে পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন নিখোঁজ হয়েছে। দুদিন আগে আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জয়নাল আবেদীনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সাদা পোশাকে এসে আমাদের সংগঠনের লোকজনদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “দক্ষিণ খানের ক্যাসিওপিয়া গার্মেন্টস কারখানা থেকে তুলে নিয়েছে আমাদের সংগঠনের মাসুদ রানাকে। এছাড়াও, দক্ষিণ খানের নিপা ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড ইন্ড্রাস্ট্রিস লিমিটেড থেকে তুলে নিয়েছে সাজু ও মাসুদসহ সাত জনকে। জয়নাল আবেদীনকে নেওয়া হয়েছে তার বোনের বাসা থেকে। কোনাবাড়ীর রেজাউল অ্যাপরেলস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তিন জনকে। অন্য একটি কারখানা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরও সাত জনকে।”
“জয়নাল, সাজু, মাসুদসহ আমরা সন্ধান পেয়েছি পাঁচ জনের। একজনকে পেয়েছি বিমানবন্দর থানায় এবং বাকি চার জনকে আদালতে পেয়েছি। তাও আবার নিখোঁজ হওয়ার তিন-চারদিন পর।”
“আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে সেই হিসাবে আন্দোলনের কারণে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের কাছাকাছি শ্রমিককে বিভিন্ন কারখানা থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে,” অভিযোগ করেন এই শ্রমিক নেতা।