দেশে নতুন করে সবুজ কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে আরেকটি কারখানা। বিশ্বের আর কোনো দেশেই এতো সংখ্যক সবুজ কারখানা নেই।
১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম-ভিত্তিক কেডিএস আইডিআর লিমিটেড ৮৪ স্কোরসহ এলইইডি ও+এম এর জন্য ভবনে ভি৪.১ রেটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে একটি প্লাটিনাম সার্টিফিকেট পেয়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তথ্য অনুসারে, দেশের পোশাক শিল্পে এখন পর্যন্ত ১৮৭টি কারখানার এলইইডি সার্টিফিকেশন রয়েছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই চারটি কারখানা ইউনিট এলইইডি সার্টিফিকেশন পেয়েছে।
২০২২ সালে মোট ৩০ কারখানা ইউনিট এলইইডি সার্টিফিকেশন পেয়েছে, যা এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বর্তমানে, দেশের পোশাক শিল্পে প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতে ৬৩টি, স্বর্ণ ১১০টি, সিলভারে ১০টি ও আরও চারটি এলইইডি প্রত্যয়ন পেয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করেছে।
বিজিএমইএ জানায়, এর বাইরে ৫৫০টি কারখানা হয় নিবন্ধিত বা ইউএসজিবিসি এর এলইইডি সার্টিফিকেশনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিজিএমইএ কর্মকর্তা জানান, শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে ৫০টি বাংলাদেশের। শীর্ষ ১০টি টির মধ্যে ৮ টি বাংলাদেশের।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সবুজ কারখানার দিক দিয়ে তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতিতে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এমন কারখানা শুরু করতে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যয় লাগলেও পরে এতে অন্যান্য অনেক খরচ কমে আসে।
বিজিএমইএর তথ্য বলছে, সবুজ কারখানাগুলো ৪০% প্রাকৃতিক শক্তি, পানি ৩০% ও কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকে আরও সহজ করে। এতে করে পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
এজন্য কারখানার মালিকদের যেমন ভবন নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হয়। তেমনই কারখানাগুলো কর্মীদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ দেয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থায়িত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূগর্ভস্থ পানি হ্রাস এবং দক্ষতার ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবেলা করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
বিজিএমইএ কর্মকর্তারা উন্নয়নশীল পোশাক খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি সবুজ ক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “উদ্যোক্তারা সবুজ কারখানার প্রয়োজনীয়তা অনেক আগেই বুঝেছিলেন। ফলে সবুজ কারখানায় এই বিপ্লব।”
তিনি বলেন, “টেকসই ও সবুজ কারখানাই এই খাতের ভবিষ্যত। এটি একটি গর্বের বিষয়। শীর্ষ ১০০টি কারখানার মধ্যে ৫০টি বাংলাদেশে রয়েছে। যা উদ্যোক্তা, সরকার এবং ব্যাংকগুলির প্রচেষ্টার ফল।”
“ভবিষ্যত পোশাক শিল্প সত্যিই মূল্য ভিত্তিক, যে বেশি মূল্য যোগ করতে পারে তারা তাদের প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে থাকবে এবং সবুজ কারখানা নিঃসন্দেহে একটি দুর্দান্ত সংযোজন।”
“এছাড়া, সবুজ কারখানাগুলো পরিবেশ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতিও দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে,” তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, “মূল্য সংযোজন ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সবুজ কারখানা সব সময়ই বাংলাদেশকে তার প্রধান প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে রাখবে।”
পোশাক প্রস্তুতকারকদের মতে, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর গ্রিন ফ্যাক্টরি বিল্ডিংয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল। ওই ঘটনায় ১,১৩৪ জন প্রাণ হারান ও ২,০০০ হাজার জনের বেশি আহত হন।