মহাসড়কে তৈরি পোশাক চুরি রপ্তানিকারকদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পোশাক শিল্পে আইন-শৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিজিএমইএ সভাপতি এ কথা বলেন।
এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রপ্তানিমুখী পণ্যবাহী পণ্যবাহী ট্রাক চুরির সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
তার মতে শুধু ২০২২ সালে প্রায় ২০-২২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “পোশাকপণ্য চুরির বিষয়টি নিয়ে আমরা দফায়-দফায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন আইন প্রয়াগকারী সংস্থার প্রধান এবং ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সর্বশেষ র্যাব ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের পণ্য চুরির একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মূল হোতা শাহেদসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।”
“এজন্য বিজিএমইএ পরিবারের পক্ষ থেকে র্যাবসহ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি, অনতিবিলম্বে এই চক্রের অন্যান্য অপরাধীদেরও গ্রেপ্তার করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি কয়েকজন চোর ধরা পড়লেও চুরির মামলায় আইনের দুর্বলতার কারণে গ্রেফতারকৃত চোর চক্র ১৫-৩০ দিনের মধ্যে জামিনে মুক্ত হয়।”
“পোশাক শিল্পের অসাধু কর্মচারী, বায়িং হাউস, শিপিং লাইন ও সিঅ্যান্ডএফও অনেক সময় এসব কাজে জড়িত থাকে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা বসানোর চলমান কাজ আগামী মার্চের মধ্যে শেষ করার সুপারিশ করেছে বিজিএমইএ।
তিনি বলেন, “যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করুন।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু বেসরকারি কোম্পানি এসব চোরাই পণ্য কিনে বিভিন্ন দেশে স্টক লট হিসেবে রপ্তানি করে।”
“স্টক লট রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের উৎস নিশ্চিত করতে হবে।”
এছাড়া ড্রাইভার এবং সহকারীর একটি ডাটাবেস কম্পাইল করার জন্য অন্যান্য সমিতিকে অনুরোধ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অশান্ত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশ ও দোকানে পোশাকের পণ্যের অবিক্রিত মজুদের কারণে, বহুজাতিক খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো পোশাক কারখানায় কাজের আদেশ বাতিল, বিলম্বিত বা আটকে রেখেছে।”
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সরকারকে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য পর্যালোচনা করার আহ্বান জানান। “কারণ নতুন বর্ধিত দাম বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য উৎপাদন খরচের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।”
তিনি আরও বলেন, “শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বহন করার মতো অবস্থায় নেই শিল্প।”
“এছাড়া চীন, ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমারের মতো অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক কাজের আদেশ স্থানান্তরিত হয়েছে,” তিনি উল্লেখ করেছেন।