রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের প্রথম সভা ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে।
গত বুধবার নিম্নতম মজুরি বোর্ড প্রথম সভার বিষয়ে নোটিশ জারি করে।
সভাটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার সেগুনবাগিচায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডে সভাকক্ষে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বোর্ডের চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা।
গত ৯ এপ্রিল পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সাধারণত নিম্নতম মজুরি বোর্ড ছয় সদস্যের হয়ে থাকে। তার মধ্যে চার সদস্যের একটি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হন মালিক ও শ্রমিকপক্ষের দুজন প্রতিনিধি।
এবার মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ২০১৮ সালের সর্বশেষ মজুরি বোর্ডেও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তিনি ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়া নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চার সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন সিনিয়র জেলা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা। অন্য সদস্যরা হলেন, মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের উপমহাসচিব মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী এবং শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ। নিরপেক্ষ প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন।
মজুরি বোর্ডের প্রথম সভার বিষয়ে জানতে চাইলে আজ শুক্রবার শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত প্রথম সভা পরিচিতিমূলক হয়। একই সঙ্গে পুরো কার্যক্রমটি কীভাবে করা হবে, সে বিষয়েও আলোচনা করেন বোর্ডের সদস্যরা। দ্বিতীয় বা তৃতীয় সভায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ মজুরিসংক্রান্ত তাদের প্রস্তাব জমা দিয়ে থাকে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির জন্য বোর্ডে প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে আমি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। তাঁদের পরামর্শ নিচ্ছি।’
তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য ১৯৯৪ সালে প্রথমবার নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। সেই বোর্ড ৯৩০ টাকা নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে। ২০০৬ সালে সেটি বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ২০১০ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি ৩ হাজার টাকা করা হয়। ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ড ৫ হাজার ৩০০ টাকা নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের মজুরি বোর্ড পোশাকশ্রমিকদের জন্য ৮ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি চূড়ান্ত করে। তার মধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ১০০ টাকা।