Home বাংলা নিউজ গাজীপুরে সব কারখানা খুলেছে, কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা

গাজীপুরে সব কারখানা খুলেছে, কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর-মিডিয়া) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান জানান, নিরাপত্তা নিয়ে মালিকদের উদ্বেগ দূর হওয়ার পর সকলেই তাদের কারখানা খুলেছে।

ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্প এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে সাময়িক ও অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা সব পোশাক কারখানাই মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) খুলে দিয়েছে কৃর্তপক্ষ। এদিন সকালে শ্রমিকরা নিজ নিজ কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কারখানা এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করেছে। 

কলকারখানা অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক সঞ্জয় দাস জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্প অঞ্চলের সকল পোশাক কারখানা সম্পূর্ণভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। ইতিমধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে যেসকল কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল, সেসব প্রতিষ্ঠানেও মঙ্গলবার স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।  

পুলিশের সূত্র জানায়, পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মৌচাক এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে এ আন্দোলন ঢাকা ও গাজীপুরের অন্যান্য পোশাক কারখানা থাকা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকরা সড়ক, মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। বিভিন্ন কারখানা, পুলিশের গাড়িসহ যানবাহন ভাঙচুর করেন। 

এরপর গত ৭ নভেম্বর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু, ঘোষিত মজুরি প্রত্যাখ্যান করে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার গাজীপুর মহানগরীর কয়েকটি এলাকায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন কারখানা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ, শ্রমিক-পুলিশ ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কয়েকজন শ্রমিক ‍মৃত্যুবরণ করেন, শ্রমিক ও পুলিশসহ আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। পরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অধিকাংশ কারখানা সাময়িক ও ১৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ফাইল ছবি।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর-মিডিয়া) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান জানান, এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে পোশাক কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনায় ১৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে ৪টিতে বাদী পুলিশ, বাকীগুলোতে বাদী ক্ষতিগ্রস্থ কারখানা কর্তৃপক্ষ। এসব মামলায় এজাহার নামীয় আসামির সংখ্যা ১০৭ জন এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ১২২ জনকে। আর অজ্ঞাতনামা আসামি ১২ হাজারের বেশি। যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি টহল জোরদার করা হয়। ফলে সকলের চেষ্টায় গাজীপুরের শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসে। নিরাপত্তা নিয়ে কারখানা মালিকদের উদ্বেগ দূর হওয়ার পর সকলেই তাদের কারখানা খুলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রমিক আন্দোলনের সময়ে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা কারখানা। এ কারখানাসহ একই মালিকের ৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মঙ্গলবার এসব কারখানাও খুলেছে। এগুলো হলো- তুসুকা জিন্স লি., তুসুকা ট্রাউজার্স লি., তুসুকা প্রসেসিং লি., তুসুকা প্যাকেজিং লি. এবং নিডেল আর্ট এমব্রয়ডারি লিমিটেড। 

ওই কারখানার মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন জানান, কারখানার অভ্যন্তরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও চলমান আন্দোলনের কারণে বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় কারখানা মঙ্গলবার চালু করা হয়েছে। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here