ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে গেছে বাংলাদেশ। দাম ও পরিমাণ, উভয় ক্ষেত্রেই এখন ইইউতে শীর্ষ নিট পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। ইইউ’র পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাট সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ইইউ’র পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) এ তথ্য জানিয়েছে। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে বাংলাদেশ থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলো ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের নিট পোশাক নিয়েছে। একই সময়ে চীন থেকে তারা ৮৯৬ কোটি ডলারের নিট পোশাক আমদানি করে। বছরের ৯ মাস বিবেচনায় এই প্রথমবারের মতো ইইউতে বাংলাদেশের নিট পোশাক রপ্তানি চীনকে ছাড়িয়ে গেল। একই সঙ্গে পরিমাণের দিক থেকেও শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ৯ মাসে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ৫৭ কোটি ১০ লাখ কেজি নিট পোশাক আমদানি করেছে। একই সময়ে চীন থেকে তাদের আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি ২০ লাখ কেজি। বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে সংগঠনটির সদস্য ও সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। চিঠিতে তিনি বলেন, গত বছর ইইউতে পরিমাণের দিক থেকে বাংলাদেশ নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত বছর ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩৩ কোটি কেজি। একই সময়ে ইইউতে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি কেজি। ওই বছর ইইউতে বাংলাদেশ ৭৩০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল, যা ছিল চীনের চেয়ে কম। কিন্তু এ বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রথমবারের মতো নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে টপকে গেছে বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বিষয়। বিজিএমইএ সভাপতি তার চিঠিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোয় আরও কিছু তৈরি পোশাকপণ্যে নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ কয়েকটি গন্তব্যের অন্যতম হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। এই বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়লে সামগ্রিকভাবে তা রপ্তানির প্রবৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এদিকে, ইউরোস্ট্যাটের তথ্য মতে, নিট রপ্তানিতে বাংলাদেশ চীনকে টপকে ইইউতে শীর্ষ স্থান দখল করলেও সামগ্রিক পোশাক রপ্তানিতে চীন এখনো শীর্ষ স্থান দখলে রেখেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ইইউতে চীনের সামগ্রিক তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল পোশাকের মূল্যের দিক থেকে ১৮ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি; অন্যদিকে বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানি ছিল ১৪ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের তুলনায় চীন প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক বেশি রপ্তানি করেছে। জানা গেছে, গত বছরেও বাংলাদেশ নিট পোশাকের পরিমাণের দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে যায়। ২০২২ সালে ইইউতে পরিমাণের দিক থেকে মোট পোশাকের রপ্তানি ছিল ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন কেজি। অন্যদিকে চীন রপ্তানি করেছে ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন কেজি পোশাক। পরিমাণের দিক দিয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করার পরও মূল্যের দিক থেকে বাংলাদেশ চীনের চেয়ে ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার কম রপ্তানি আয় করতে পেরেছে। News Sources : probashirdiganta