যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পরিমাণের বিবেচনায় চীনকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেশটিতে ১৭ কোটি ৯৩ লাখ কেজি পোশাক রপ্তানি হয় বাংলাদেশ থেকে। একই সময়ে চীন থেকে রপ্তানি হয় ১৫ কোটি ৯৩ লাখ কেজি পোশাক। ওই ১০ মাসে বিশ্ববাজার থেকে ৬০ কোটি ৪০ লাখ কেজি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাজ্য।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইইউ জোটের দেশগুলোতে নিট, অর্থাৎ গেঞ্জি জাতীয় পোশাক রপ্তানিতে প্রথমবারের মতো চীনকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। জোটে ডেনিম রপ্তানিতে তিন বছর আগেই চীনকে পেছনে ফেলে আসে বাংলাদেশ।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে থাকা চীনের হিস্যা ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিসটিক্যাল রিভিউ-২০২৩ প্রতিবেদনে সর্বশেষ এই তথ্য প্রকাশ করা হয় গত আগস্টে।
অবশ্য পরিমাণে চীনের তুলনায় রপ্তানি বাড়লেও দামের বিবেচনায় এখনও পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। অর্থমূল্যের হিসাবে দেখা যায়, অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৩১৮ কোটি ৩১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে চীন। এ সময় বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩০১ কোটি ১৪ লাখ ডলার। ওই ১০ মাসে সব দেশ থেকে ১ হাজার ২০৯ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করে যুক্তরাজ্য।
পরিমাণ এবং অর্থমূল্য দুই বিবেচনায়ই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে প্রতিযোগী অন্য দেশগুলো। দামের বিবেচনায় যুক্তরাজ্যে রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনামের অবস্থান এখন সপ্তম। পরিমাণের বিবেচনায়ও দেশটি একই অবস্থানে রয়েছে। তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে তুরস্ক। যদিও রপ্তানির পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় অত্যন্ত কম, মাত্র ৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ভারতের রপ্তানি ৪ কোটি ডলারের।
উদ্যোক্তাদের মতে, সব দেশেরই রপ্তানি পরিস্থিতি খারাপ যাচ্ছে গত প্রায় তিন বছর ধরে। তবে রপ্তানিকারক অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদ উল্লাহ আজিম বলেন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় পোশাক রপ্তানিকারক অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশ এগিয়েছে বাংলাদেশ। অতিমারি করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও দেশে জ্বালানি সংকটে উৎপাদন বিঘ্নিত এবং উৎপাদন ব্যয় না বাড়লে আলোচ্য সময়ে রপ্তানি আরও অনেক বাড়তে পারত। নতুন বছর রপ্তানি খুব ভালো যাবে বলে আশা করেন তিনি।