চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বরে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী এই ছয় মাসে ২৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
ইপিবির হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে তৈরি পোশাক, ওষুধ এবং চামড়াসহ ২৭ ধরনের পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়েছে ২৭ হাজার ৫৪০ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।
তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের মধ্যে ১৩ হাজার ৪৮০ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার এসেছে নিটওয়্যার রফতানি থেকে, যা ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ৯ হাজার ৯১১ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার এসেছে ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসে কৃষিপণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ও হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে। হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি আয় ৩৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলারে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ কম। এছাড়া কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কমে ৫০৭ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫২৩ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলারে, যা গত অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ছিল ৬৩৭ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী সার্বিক ভাবে জুলাই-ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি মার্কিন ডলারে। আগের অর্থবছর; অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে তার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৩১ কোটি ডলারের। সেই হিসাবে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশে।
একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরের পণ্য রপ্তানি বিবেচনা করলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি ১ শতাংশের বেশি কমেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ৫৩৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, গত ডিসেম্বরে যা কমে ৫৩১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
গত ৬ মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশই ছিল পোশাক খাতের। সবমিলিয়ে অর্থবছরের প্রথমার্ধে রপ্তানি খাত খুব বেশি আশা জাগাতে পারেনি। পোশাকের বাইরে বড় বড় প্রায় সব খাতেই রপ্তানি কমেছে। ফলে ডলার-সংকটের এ সময়ে রপ্তানি আয় নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পোশাক খাতের রপ্তানি যে প্রবৃদ্ধি, সেটিও আশানুরূপ নয়। এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়াতে হলে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, শুধু গত ডিসেম্বরে প্রায় ৪৫৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। এই রপ্তানি গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৪৬৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।