Home বাংলা নিউজ পোশাক কারখানা খুলছে আজ

পোশাক কারখানা খুলছে আজ

তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে আজ বুধবার। কারফিউ থাকলেও পোশাক খাত-সংশ্লিষ্ট পণ্য পরিবহন করা যাবে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে এ বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, পোশাক শ্রমিকদের কারখানা থেকে দেওয়া কার্ড দেখালেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহায়তা করবে। পোশাক কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া পোশাক কারখানা অধ্যুষিত এলাকায় সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিদের মধ্যে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে এ বৈঠক হয়। জানতে চাইলে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ায় বিদেশি ব্র্যান্ড-ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন হয়েছে। আশা করছি, পুরোদমে কাজ করে বিগত কয়েক দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে পোশাক খাত।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শাটডাউন কর্মসূচি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে কারফিউ জারি হলে গত শনিবার যৌথ সভায় পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। পরে বুধবার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্দরের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। এতে শিল্পের জন্য আমদানি করা কাঁচামাল বন্দর থেকে ছাড় করানো যায়নি। বন্দরে পৌঁছানো রপ্তানি পণ্যও জাহাজীকরণ সম্ভব হয়নি। এক বিবৃতিতে বিজিএমইএ সভাপতি দাবি করেছেন, কারখানা বন্ধের কারণে পোশাক খাতে দিনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামে খুলল এক দিন আগে

চার দিনের অচলাবস্থা শেষে গতকাল চালু হয় চট্টগ্রামের পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা। শ্রমিকরা দিনভর কর্মস্থলে মুখর ছিলেন। যদিও কারফিউর কারণে গণপরিবহন কম থাকায় কর্মস্থলে যেতে ও ফিরতে ভোগান্তি পোহান শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেশির ভাগ কারখানায় ৯৭ শতাংশ শ্রমিক এসেছেন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অন্যতম প্রধান ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাত কারখানাও গতকাল খুলে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের বিশেষ পাসে চলে কারখানাটি। জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল বলেন, গত কয়েক দিনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, দেশের স্বার্থে আমরা নতুনভাবে শুরু করতে পারব।

জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ধাপে ধাপে স্বাভাবিক হবে পুরো পরিস্থিতি। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়। বুধবার থেকে অন্যান্য কারখানার চাকাও সচল হবে। কারখানা কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

আশুলিয়ায় চলেছে ১০% কারখানা

ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় গতকাল সীমিত পরিসরে চলেছে পোশাক কারখানা। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কারখানাগুলোর প্রধান ফটকে রাখা হয় বাড়তি নিরাপত্তা। শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার হয় নিজস্ব পরিবহন। সকাল ৮টার মধ্যে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশুলিয়া এলাকায় পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার ১০ শতাংশের মতো কারখানা কার্যক্রম চালায়।

সরেজমিন বেলা ৩টায় হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একেএইচ গ্রুপের কারখানায় শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায়। কারখানার ডিএমডি আবুল কাশেম সমকালকে জানান, সকাল ৮টায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। নিজস্ব নিরাপত্তায় শ্রমিকদের কর্মস্থলে আনা ও বিকেলে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। একই এলাকায় আল মুসলিম গ্রুপের কারখানার নিরাপত্তা কর্মকর্তা সজীব হোসেন জানান, কিছু কারখানায় সীমিত পরিসরে কাজ হয়েছে। বুধবার থেকে পুরোদমে চলবে আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here