কোটা আন্দোলনে তৈরি পোশাক খাতে পণ্য জাহাজীকরণে বাধা, উৎপাদন ব্যাহত এবং ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আস্থা ফেরাতে আগামীকাল সোমবার বায়ার্স ফোরামের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিজিএমইএ নেতারা।
জানা যায়, চার দিন কারখানা বন্ধ থাকায় উৎপাদন ব্যাহত ও বহির্বিশ্বে যোগাযোগ বিছিন্ন থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
এ সময় বিশ্ব মিডিয়ায় আন্দোলনের সংহিস চিত্র ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। এতে চরম ভাবমূর্তির সংকট তৈরি হয়েছে। বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, তৈরি পোশাক খাতে তাঁদের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভাবমূর্তির।এটি কিভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এসব বিষয় ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরা হবে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় চার দিনে ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকার রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সুতা ও বোতাম যাঁরা দেন, তাঁদের ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, এসব অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।এ ছাড়া পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এটাকে মিটিগেট করতে ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে শুরু করেছি। এরই মধ্যে ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে কম্পানির প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, অনেকে রপ্তানিকারক ভাবমূর্তির সংকট উত্তরণে এখন ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের সঙ্গে সশরীরে বৈঠক করছেন।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বহির্বিশ্বে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এর ফলে ক্রেতাদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। উৎপাদন বন্ধ ছিল। জাহাজীকরণ হয়নি। এসব পণ্য ক্রেতারা কতটা নেবে এ নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া নতুন কার্যাদেশ আছে কি না এসব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সব কিছু তুলে ধরতে সোমবার ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।
এস এম মান্নান কচি বলেন, “সারা বিশ্বে আমাদের শান্তিপূর্ণ ও ব্যাবসায়িক পরিবেশের যে ইমেজ ছিল, সেটি ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা ‘টাকার অঙ্কের’ চেয়েও বেশি।”
এদিকে এসব ক্ষতি কাঠিয়ে উঠতে সরকারের সঙ্গে দেনদরবারও করতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আন্দোলন সময়কালের ব্যাংকঋণের সুদের হার মওকুফ, পোর্ট ডেমারেজ চার্জ মওকুফ এবং শিপিং লাইন কনটেইনার ওভার চার্জ বন্ধ করতে এনবিআর ও চট্টগ্রাম কাস্টমসে আলোচনা করছেন বিজিএমইএ নেতারা।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, কারখানা বন্ধ ও পোর্ট জটিলতায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। শিপমেন্টেও তাঁদের বাড়তি খরচ করতে হবে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কার্যাদেশ ধরার ক্ষেত্রে দেখা দেবে জটিলতা।