রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য রেশন–সুবিধা চালু করতে আগামী ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তিনটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেট পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষের জীবনে স্বস্তি আনতে পারেনি। উল্টো আছে দুর্ভোগ আর অনিশ্চয়তার শঙ্কা। কারণ, মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই বাজেটে। ফলে পোশাকশ্রমিকদের কম মূল্যে নিত্যপণ্য দিতে রেশন–সুবিধা চালু করা দরকার।
রেশনের জন্য বাজেটে বরাদ্দের দাবি আদায়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল শুক্রবার সকালে অনশন কর্মসূচিও পালন করে। এতে নারী পোশাকশ্রমিকেরা অংশ নেন। একই জায়গায় বেলা সাড়ে ১১টায় মিছিল ও সমাবেশ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতা-কর্মীরা। আর আশুলিয়ায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নারী কমিটির সভাপতি জেসমিন আক্তার প্রমুখ। তাঁরা বলেন, পাঁচ বছর ধরে শ্রমিকদের রেশন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চললেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার কোনো প্রতিফলন নেই। অথচ নিত্যপণ্যের পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল, বাড়িভাড়া, যাতায়াত ও চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা দিশাহারা অবস্থায় আছেন। ৪২ লাখ পোশাকশ্রমিকের রেশন–সুবিধা দিতে প্রায় আট লাখ কোটি টাকার বাজেটে মাত্র ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেই হবে বলে জানান তাঁরা।
এদিকে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক এফ এম নুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহা প্রমুখ।
শ্রমিকনেতারা বলেন, সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানারও কোনো উদ্যোগ নেই বাজেটে। উল্টো অপ্রদর্শিত আয় ও সম্পদের মালিক এবং অর্থ পাচারকারীদের জন্য আছে প্রশ্নাতীত করছাড়। পোশাকশ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নির্দিষ্ট বরাদ্দের দাবি জানান শ্রমিকনেতারা। তাঁরা বলেন, দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে। পোশাকশ্রমিকেরা যে মজুরি পান, তা দিয়ে তাঁদের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
অন্যদিকে আশুলিয়ায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, শ্রমিকনেত্রী শবনম হাফিজ, শ্রমিক নেতা হারুন সরকার প্রমুখ।