Home বাংলা নিউজ বিজিএমইএতে হট্টগোল, কমিটি ভেঙে দেওয়ার চাপ

বিজিএমইএতে হট্টগোল, কমিটি ভেঙে দেওয়ার চাপ

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ওপর অনাস্থা জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে সাধারণ সদস্যদের একটি অংশ। তারা স্মারকলিপি দিয়ে কমিটি ভেঙে দিতে বর্তমান পর্ষদকে চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনায় বেশ হট্টগোল হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরামের নেতা–কর্মীরাই মূলত স্মারকলিপি দেন। পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন গত মার্চে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর নির্বাচনে ফোরামের দলনেতা ফয়সাল সামাদ ও ওয়েগা নিটেক্সের চেয়ারম্যান মেসবাহ উদ্দিন আলী।

জানা যায়, আজ বেলা দুইটার দিকে সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে ফোরামের শতাধিক নেতা–কর্মী স্মারকলিপি দিতে বিজিএমইএ কার্যালয়ে যান। প্রধান ফটকে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তাঁদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তখন তাঁরা ‘সভাপতি কই’, ‘এমন বিজিএমইএ চাই না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। তবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম তাঁদের স্বাগত জানান।

কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর সভাকক্ষে সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বর্তমান পর্ষদের কিছু সদস্য। শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিবসহ পর্ষদের অন্যদের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন ফয়সাল সামাদ ও মেসবাহ উদ্দিন।

স্মারকলিপিতে বিজিএমইএর সাধারণ সদস্যরা দাবি করেন, বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তরা ও মিরপুরে দমন–পীড়নে অংশ নেয়। এস এম মান্নান মার্চে প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। সেই নির্বাচনে ভোট চুরির ঘটনা ঘটে। চলমান ছাত্র আন্দোলনে কয়েক শ ছাত্র–জনতা নিহত হওয়ার পরও বর্তমান পর্ষদ কিংবা সভাপতি কোনো শোক বার্তা দেননি। এমনকি গত কয়েক সপ্তাহে বিজিএমইএর মূল দায়িত্ব ব্যবসা পরিচালনায় কার্যকর নির্দেশনা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও গণজোয়ারে বর্তমান সভাপতি ও পর্ষদের সদস্যরা বিপরীতমুখী ভূমিকা পালন করায় তাঁরা দায়িত্ব পালনে নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সহসভাপতির সঙ্গে আলোচনায় সাধারণ সদস্যরা বিজিএমইএর সংস্কার দাবি করেন। তাঁরা বলেন, বিজিএমইএকে দুর্নীতির আখড়া বানানো হয়েছে। সাধারণ সদস্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্তমান পর্ষদ ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন পর্ষদ গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে তফসিল ঘোষণার দাবি করেন। একপর্যায়ে সাধারণ সদস্যদের কয়েকজন সভাকক্ষে থাকা বিজিএমইএর সাবেক তিন সভাপতি সালাম মুর্শেদী, আতিকুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলেন।

সভায় ফয়সাল সামাদ বলেন, বর্তমান পর্ষদকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদ গঠন করতে হবে।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের দাবির প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব। সব সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।’

রফিকুল ইসলামের বক্তব্য শেষ না হতেই ফোরামের নেতা–কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষের ৫ জন করে ১০ জনকে নিয়ে বৈঠকের জন্য চাপ দেন। তাঁদের চাপের মুখে আলোচনা শুরু হয়। তবে বেশ কিছুক্ষণ পর আবার হট্টগোল শুরু হওয়ায় সেই আলোচনা ভেস্তে যায়।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফোরামের নেতা–কর্মীরা যেভাবে হট্টগোল করেছেন, হুমকি দিয়েছেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমরা নিজেরা বর্তমান পর্ষদের সংস্কার নিয়ে দুই দিন ধরে আলোচনা করছি। সেটি আমরা ফোরামের নেতাদের জানিয়েছি। তারপরও তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁদের স্মারকলিপি নিয়ে আমরা পর্ষদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here