দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সাধারণ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার পরও দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। এখন বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে।এর আগে সন্ধ্যায় কিভাবে শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, আর ক্রেতাদের দেওয়া কথা রেখে কিভাবে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা যায়, এই দুই বিষয়কে সামনে রেখেই আলোচনা করেন পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা।
বিজিএমইএর তথ্য বলছে, আশুলিয়া এলাকার মোট ২৭২টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে আজ ১৩/১ ধারায় বন্ধ ছিল ২৭টি। কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধ রাখা হয় বা ছুটি দেওয়া হয় এমন কারখানার সংখ্যা ১২টি। আর স্বাভাবিক উত্পাদনে ছিল ২৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা।
গত মাসের শেষদিকে এসে হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে দেশের প্রধান এই রপ্তানি খাত। এরপর শ্রমিক, মালিক, সরকার, স্থানীয় রাজনীতিবিদ সবাই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক উত্পাদনে ফিরতে পারেনি কারখানাগুলো।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএ নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর অনেক কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়। এরপর কারখানা সচল হওয়ার সংখ্যাও বেড়েছিল।
তবু সংকট থেকে বের হতে পারেনি এই খাত। এ অবস্থায় অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। কারখানায় হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ১৫ জনেরও বেশি মানুষকে আটকের কথা জানানো হয়। শ্রমিকদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগে নেত্রকোনা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।গত ১৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিতিতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সভা করে বিজিএমইএ। সেদিন সিদ্ধান্ত হয়, যে কারখানায় অসন্তোষ দেখা দেবে, শ্রম আইন অনুযায়ী সেই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ নীতি, অর্থাৎ কাজ না করলে সেদিনের মজুরি না দেওয়ার ঘোষণাও হয়।