Home বাংলা নিউজ যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি পেলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়বে

যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি পেলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়বে

দেশের তৈরি পোশাক খাতের বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কে বড় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর দেশটি শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহার করে। এক দশকে তা আর পুনর্বহাল হয়নি।অথচ ভিয়েতনাম মাত্র ৭ শতাংশ শুল্কে দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি করলেও বাংলাদেশকে দিতে হয় ১৮ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি পেলে নতুন বাজার ছাড়াই মোট রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি বাড়াবে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর দেশের বাণিজ্যে সুফল নিয়ে আসবে। 

 ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের প্রভাব পড়েছে এই খাতে।তারা বলেন, এই সুবিধা বাংলাদেশ আগেই পেতে পারত যদি ড. ইউনূসের সহযোগিতা নিত। তবে তাদের আশা, এখন সুযোগ এসেছে, ড. ইউনূস চেষ্টা করলে এর জট খুলতেও পারে।

এ প্রসঙ্গে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রত্যাহার হওয়ার পর কখনো শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়নি বাংলাদেশ। ড. ইউনূসের কল্যাণে এবার সুযোগ তৈরি হয়েছে।বাংলাদেশ যদি ন্যূনতম পাঁচটি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, আর এর মধ্যে পোশাক খাতকে নিশ্চিত করা গেলে দেশের রপ্তানি আয় অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এটা করা গেলে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি।’


এদিকে গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকে হয়েছে। বাইডেন এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে জিএসপি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বিগত সরকারের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পররাষ্ট্রনীতির কারণে বৈষম্যের বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে ইউনূস-বাইডেনের এই বৈঠকে এ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ বা ভিয়েতনামের সমান করার প্রস্তাব দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের ধাক্কার মুখে পড়বে। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারনির্ভরতাও কমাবে। তবে তিনি মনে করেন, শুধু শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেই হবে না; একই সঙ্গে ঢালাও সুবিধা পেলেই হবে না; বিশেষ ক্যাটাগরি অনুসারে পেলেই বাংলাদেশ এর সুবিধা পাবে। 

 রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৯.৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো তা ১০ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১০.২৮ শতাংশ কমে চার বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময় ছিল ৪.৫৬ বিলিয়ন ডলার।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর মার্কিন সরকার বাংলাদেশের জন্য জিএসপি বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করে। দীর্ঘ ১১ বছরে পোশাক খাতে নিরাপত্তা ও শ্রমের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হলেও বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত বাজারের সুবিধা আর ফিরে পায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here