বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বেশ কিছুদিন অস্থির ছিল আশুলিয়া ও গাজীপুরের পোশাক কারখানাগুলো। মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় ফিরেছে স্বস্তি। আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেই দিনগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা রাখা হয়েছিল অধিকাংশ কারখানা। শুক্রবার কর্মচঞ্চল দিন পার করেছেন শ্রমিকরা। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।
জানা গেছে, গতকাল আশুলিয়ায় স্বাভাবিক পরিবেশে ১৫০টিরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেছেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া গাজীপুরের কোনো কোনো এলাকায় ৭০-৮০ শতাংশ এবং কোনো কোনো এলাকায় ৪০-৫০ শতাংশ কারখানাই খোলা ছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
বিভিন্ন কারখানার ব্যবস্থাপকরা জানান, বেশ কিছু দিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। এখন যথাসময়ে পণ্য রপ্তানির চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনে অতিরিক্ত কাজ করছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা বলেন, ‘আমাদের কিছু যৌক্তিক দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে ছিলাম। অধিকার আদায়ে নানা কর্মসূচি পালন করেছি। কারখানা মালিকরা অধিকাংশ দাবি মেনেও নিয়েছে। এখন আমাদের এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, তাদের ক্ষতি হওয়া মানে নিজেদের পেটে লাথি মারা। তাই লোকসান পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও স্বতস্ফুর্তভাবেই আমরা কাজে যোগ দিয়েছি।’
বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে শ্রমিক অধ্যুষিত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ১ হাজার ৮৬৩টি কারখানায় কাজ করেন ৯ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক। স্বাভাবিক কারণেই এই শিল্পাঞ্চলের দিকে সবার দৃষ্টি থাকে। দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ায় এখন সবাই একযোগে দেশের উন্নয়নে কাজ করবেন।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম জানান, কিছু কারখানা এখনও বন্ধ থাকলেও ছুটির দিনে অধিকাংশ গার্মেন্টে নির্বিঘ্নে কাজ চলেছে। পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সতর্ক ছিল।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, শিল্প পুলিশ, জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করছেন।