Home বাংলা নিউজ দেশে অস্থিরতার সুযোগে রমরমা ভারতের পোশাক রপ্তানি

দেশে অস্থিরতার সুযোগে রমরমা ভারতের পোশাক রপ্তানি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আর পোশাকশিল্পের শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ভারতের রপ্তানি বাজার রমরমা। ফলে দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন এই খাতের দেশীয় উদ্যোক্তারা। আর এই শঙ্কা যে বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে সে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠেছে সেপ্টেম্বরের রপ্তানির চিত্রে।

এতে দেখা যায়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ভারতের তৈরি পোশাকের রপ্তানি এক লাফে ১৭.৩ শতাংশ বেড়েছে।গতকাল সোমবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের তৈরি পোশাক খাতের এই প্রবৃদ্ধি এমন এক সময় ঘটেছে, যখন অন্যান্য পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলো মন্দার সম্মুখীন হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ও সরবরাহ চেইনে বিঘ্নসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সত্ত্বেও ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ভূমিকা রয়েছে।

ভারতীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এইপিসি) চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে নানা সংকট আর অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতির চাপ সত্ত্বেও ভারতের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধির রেকর্ড হয়েছে।’

কেয়াররেটিংয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে যদি আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা বছরের এক বা দুই-চতুর্থাংশের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে রপ্তানিকারকদের সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘এমন পরিস্থিতিতে ভারত ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত মাসিক রপ্তানি আদেশ পেতে পারে।’

সুযোগকে কাজে লাগাতে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেওয়ার ও ভারত টেক্স-২০২৫ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন এইপিসি চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি। সুধীর সেখরি জানিয়েছেন, ভারতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্য স্পেন ও নিউ ইয়র্কে আন্তর্জাতিক রোড শো আয়োজন করবে এইপিসি।

এইপিসি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘বর্তমানে ভারতকে পছন্দের সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতীয় পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি চমৎকারভাবে দুই সংখ্যার ঘর ছাড়িয়ে গেছে।’  

ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে এমন সব দেশে বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির গতিপথকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এফটিএ অংশীদার দেশগুলো এখন আরএমজির বাজার সম্প্রসারণ ও বৃদ্ধির পথ তৈরি করছে।

এদিকে সম্প্রতি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এক সংবাদ সম্মেলনে স্বস্তির কথা বললেও গত দুই মাসের শ্রমিক অসন্তোষে উৎপাদন খাতে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির সভাপতি।

এদিকে প্রচলিত বড় বাজারগুলোতে পোশাক আমদানি কমে আসছে। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি পরিমাণের দিক থেকে বেড়েছে ১.৫ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশ থেকে কমে গেছে ৩.৮ শতাংশ। ভারত থেকে বেড়েছে ৭.৬ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here