রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) সোমবার দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৭তম আসর শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ। এবারের প্রদর্শনীর প্রতিপাদ্য হলো দ্য ব্লু নিউ ওয়ার্ল্ড। এতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক, স্পেন, ইতালিসহ ৭টি দেশের ৪৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
এক্সপোতে দুটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার বাংলাদেশ পোশাকশিল্পকে সুরক্ষিত করা : আমরা কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি কম মূল্যের পোশাক উত্পাদন কেন্দ্র থেকে উচ্চ মানের ও টেকসই পোশাক উত্পাদনের কেন্দ্র হিসাবে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় কেৌশলগত পদক্ষেপগুলো আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি আধুনিক উত্পাদন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ডিজিটাল কেৌশলসমূহের মাধ্যমে এ শিল্পে উদ্ভাবনকে এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। যাতে শিল্পটি বৈশ্বিক বাজারের পরিবর্তিত চাহিদাগুলো পূরণ করতে সক্ষম হয়।
আজ দ্বিতীয় দিনে জিএসপি+ এবং এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে তৈরি পোশাকশিল্পের প্রস্তুতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা হবে। এতে ২০২৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের গুরুত্ব এবং বাজারে প্রবেশাধিকার বজায় রাখার জন্য জিএসপি+ নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে আলোচনা হবে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী কমপ্লায়েন্স মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রাখা, নিরাপত্তা ধারাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে বাণিজ্য সুযোগ সম্প্রসারণের কেৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের রূপান্তরের সময় এসেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চমানের, টেকসই পোশাকের বৈশ্বিক নেতৃস্থানীয় দেশ হিসাবে রূপান্তরিত করতে কেৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সরেজমিন মেলা ঘুরে দেখা যায়, সোমবার এক্সপোর প্রথম দিনে সকালের চেয়ে বিকালে দর্শনার্থীর উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তাদের বেশির ভাগই ছিল দেশি বিভিন্ন গার্মেন্টে কর্মরত তরুণ মার্চেন্ডাইজার। তারা বিদেশি স্টলগুলোতে ঘুরে পণ্য গুণগত মান সম্পর্কে ধারণা নেন। এছাড়া বিদেশি ক্রেতা ও তাদের প্রতিনিধিরা ঘুরে ঘুরে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উত্পাদিত ডেনিম কাপড় ও তৈরি পণ্যের মান যাচাই করেন। এর মধ্যে অনেক বিদেশি ক্রেতা দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার এবং অর্ডার বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এক্সপোতে অংশ নেওয়া যমুনা ডেনিমের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বলেন, এ ধরনের এক্সপোতে বিদেশি দর্শনার্থীরা সাধারণত আসে বাংলাদেশি টেক্সটাইল মিলগুলোর উদ্ভাবনীমূলক ফেব্রিক্স দেখতে। এবার আমরা নতুন উদ্ভাবিত ৪০ ধরনের ফেব্রিক্স নিয়ে এসেছি, যার কম্পোজিশন অসাধারণ। এসব ফেব্রিক্সে ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেয়েছি। যমুনা ডেনিমের উদ্ভাবনী পণ্যে নতুন অনেক ক্রেতা প্রশংসা করেছেন এবং একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। যা রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, বিদেশি ক্রেতাদের জন্য যমুনা ডেনিম একটি কমপি্লট প্যাকেজ। কারণ দেশের সবচেয়ে বড় ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড ডেনিম লাইন রয়েছে যমুনা ডেনিমের। এছাড়া নিজস্ব গার্মেন্টসও রয়েছে। যেখান থেকে ক্রেতারা ফেব্রিক্স অর্ডার করতে পারবেন, আবার পছন্দসই ডিজাইন সরবরাহ করলে খুব কম সময়ে সে অনুযায়ী ডেনিম পণ্য প্রস্তুত করে দেওয়া হয়ে থাকে।