ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ডের সদস্য পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ত্রুটির ৭৫ শতাংশই সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০০ কারখানার ৯০ শতাংশের বেশি ত্রুটি সংশোধন করেছে। তবে সব ধরনের ত্রুটি সংশোধন শেষ করেছে—এমন কারখানার সংখ্যা মাত্র ৪৮টি।
অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ গতকাল রোববার পোশাক কারখানার সংস্কারকাজের চলতি মাসের অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের পর কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত অ্যাকর্ড ১ হাজার ৬৪৯টি কারখানা পরিদর্শন করেছে। এসব কারখানায় প্রায় ২০ লাখ পোশাকশ্রমিক কাজ করেন। প্রাইমার্ক, সিঅ্যান্ডএ, বেনেটনসহ ২১৫টি ব্র্যান্ড অ্যাকর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ।
অ্যাকর্ডের প্রকৌশলীরা জোটের সদস্য কারখানায় প্রাথমিক পরিদর্শন করে অগ্নিকাণ্ড, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি চিহ্নিত করেন। সেই ত্রুটি সংশোধনের জন্য কারখানাগুলো একটি সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) প্রস্তুত করে অ্যাকর্ডে জমা দেয়। তারা ক্যাপ যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিলে কারখানা কর্তৃপক্ষ ত্রুটি সংশোধন কাজ শুরু করে।
সংস্কারকাজের সাম্প্রতিক অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পরিদর্শনে যেসব ত্রুটি পাওয়া গিয়েছিল তার মধ্যে ৭৫ শতাংশ ত্রুটি সংশোধন শেষ হয়েছে। তবে ফলোআপ পরিদর্শনে পাওয়া ত্রুটি হিসেবে নিলে সংখ্যাটি কমবেশি হতে পারে। অন্যদিকে ক্যাপ বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট সময়সূচির চেয়ে পিছিয়ে আছে ১ হাজার ৩৪৮ কারখানা।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত রাতে বলেন, ‘৭৪ শতাংশ ত্রুটি সংশোধন অবশ্যই সন্তোষজনক। যত তাড়াতাড়ি শেষ হয় ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।’ তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে ক্যাপ বাস্তবায়নে কারখানাগুলো নির্দিষ্ট সময়সূচির থেকে পিছিয়ে আছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিক পরিদর্শনে পাওয়া ৩৪ হাজার ২৭৮ বৈদ্যুতিকসংক্রান্ত ত্রুটির মধ্যে ২৬ হাজার ৮৮৩টি সংশোধন শেষ হয়েছে। ৩ হাজার ৩৯৩টি ত্রুটি সংশোধন শেষ হলেও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়নি। আর ৪ হাজার ২টি ত্রুটি সংশোধনের কাজ চলছে।
প্রাথমিক পরিদর্শনে বিভিন্ন কারখানায় ৩৩ হাজার ৩১৫টি অগ্নিকাণ্ডসংক্রান্ত ত্রুটি খুঁজে পেয়েছিল অ্যাকর্ড। এসব ত্রুটির মধ্যে ১৯ হাজার ৩২৯টি সংশোধন শেষ। ৪ হাজার ২৭১টি ত্রুটি সংশোধন শেষ, তবে এখনো যাচাই-বাছাই হয়নি। সংশোধন প্রক্রিয়াধীন আছে ৯ হাজার ৭১৫টি অগ্নিকাণ্ডসংক্রান্ত ত্রুটি।
বৈদ্যুতিক ও অগ্নিকাণ্ডসংক্রান্ত ত্রুটির চেয়ে ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি সংশোধন কম হয়েছে। প্রাথমিক পরিদর্শনে পাওয়া কাঠামোগত ১৯ হাজার ৮৩৬টি ত্রুটির মধ্যে ৬ হাজার ২৩০টি সংশোধন শেষ। ৪ হাজার ৩১৭টি ত্রুটি সংশোধন শেষ হলেও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে ৯ হাজার ২৮৯টি ত্রুটি সংশোধন কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।