নানামুখী উন্নয়নের মাধ্যমে পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনসহ ১০ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আদলে গড়া এ ফান্ডের একটি অংশ পাটের বীজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কাঁচাপাট রপ্তানিকারকদের বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হবে।
সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত্ম নিয়ে ২ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার ‘পাটশিল্প উন্নয়ন তহবিল’ গঠন এবং তহবিলের গ্যারান্টি পেতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। স্বাধীনতা সংগ্রামে পাটপণ্যের প্রেক্ষাপটকে গুরম্নত্ব দিয়ে গত বছরের ৬ মার্চ পাটপণ্যকে ‘প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য’ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এ বছরের পাট দিবসেও তা বাস্ত্মবায়িত না হওয়ায় নতুন করে এসব উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাসিমা বেগম বলেন, পাটশিল্পের উন্নয়নে ইডিএফের আদলে ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, এগুলোর বাস্ত্মবায়নে পাটখাত পুনরম্নজ্জীবিত হয়ে অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, পাটের ঐতিহ্য ফেরাতে বাজেট থেকে বরাদ্দ দিয়ে ইডিএফের মতো পাটশিল্প উন্নয়ন তহবিল গঠন করা যেতে পারে। পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত্মদের মতো পাটশিল্প তহবিল গঠনেও সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- আনকাট পাট রপ্তানি না করা এবং কাঁচাপাট রপ্তানিকারকদের সমস্যার সমাধানে পাটশিল্প খাতকেও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সুযোগ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়া।
‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০’ যথাযথ বাস্ত্মবায়নে তফসিলে অন্ত্মর্ভুক্ত ১৭টি পণ্য মোড়কীকরণে অবশ্যই পাটের বস্ত্মা ব্যবহার, এ তালিকায় সিমেন্টকে অন্ত্মর্ভুক্ত করা এবং জোরালোভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা।
পাটের বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ এবং তাদের উৎপাদিত বীজ উচ্চমূল্যে কিনতে বাজেট ভর্তুকির তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। পাটশিল্প যেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রিন ফান্ডের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল ব্যবহার করতে পারে- সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, এফএসএসপি ফান্ড থেকে ঋণ নিতে বেসরকারি ব্যাংকে পাটশিল্পগুলোর আবেদন জানানো ও এর অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠানো। যারা সরকারি ব্যাংকের গ্রাহক, তারাও বেসরকারি ব্যাংক থেকে এফএসএসপি ঋণ পেতে নিজ নিজ সরকারি ব্যাংকের এনওসির আবেদন করে এর অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। বহুমুখী পাটপণ্যের রপ্তানি ভর্তুকি পেতে পাটপণ্যের সংজ্ঞাসহ জেডিপিসির প্রত্যয়ন প্রদান সম্পর্কিত সার্কুলার প্রণয়ন এবং উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাটশিল্প সেক্টরের বিএমআরই বা নতুন মেশিনারিজ কিনতে ক্রয়মূল্যের ২০ শতাংশ অনুদান দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধও জানানো হবে।