চামড়া শিল্পে কোনো ট্যাক্স হলিডে বা কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, এ মুহূর্তে আর ট্যাক্স হলিডে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। চামড়া শিল্পনগরীতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে ৭ থেকে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে দেয়ার জন্য বলেছিলেন এই শিল্পের মালিকরা।
গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাথে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি মো: শাহিন আহমদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রীর সাথে দেখা করে। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
বিটিএ সভাপতি বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে চামড়া খাত একটি উদীয়মান রফতানিমুখী শ্রমঘন খাত। বর্তমানে এ খাত রফতানি বাণিজ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাতে উন্নীত হয়েছে। পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্পনগরী সাভারে স্থানান্তরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে চামড়া খাতে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ৫ বিলিয়ন ডলার (৫০০ কোটি ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে হবে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চামড়া শিল্পসহায়ক ভূমিকা পালনে বদ্ধপরিকর।
বিটিএ সভাপতি বলেন, আমরা আমাদের লিখিত বক্তব্য অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করেছি। আমরা আশা করছি দেশের অন্যতম একটি শিল্প খাতের স্বার্থ বিবেচনা করে আগামী বাজেটে আমাদের দাবিগুলো তিনি বিবেচনা করবেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে চামড়া শিল্প হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরের পর এ খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে ৭ থেকে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে সুবিধা ছাড়াও চামড়া শিল্পে অপরিহার্য কেমিক্যালের ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি জাননো হয়েছে। এ ছাড়াও চামড়া রফতানিতে বিদ্যমান আর্থিক প্রণোদনা ৫ বছরের জন্য বহাল রাখারও দাবি জানানো হয়।
এর আগে বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাথে অর্থমন্ত্রীর প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি বিজয় কৃঞ্চ দে প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশে যত দিন সিগারেট থাকবে তত দিন বিড়ি শিল্প টিকিয়ে রাখতে তারা অর্থমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। এ ছাড়া তারা ভারতের মতো বিড়ি শিল্পের ওপর শুল্ক নির্ধারণ, বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প ঘোষণা, প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা করা এবং যেসব বিড়ি কারখানায় ২০ লাখ শলাকার কম উৎপাদন হয় তাদের কাছ থেকে শুল্ক না নেয়ার দাবি জানানো হয়।
তবে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি। বিড়ি শিল্প দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকারক বিধায় এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যদের তার অবস্থান অবহিত করে চিঠি দিয়েছেন। সমিতির পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর ওই চিঠি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।