দেশে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প হলেও এ খাতের শ্রমিকদের আমরা মালিকপক্ষ ঠিকমতো বেতন দিতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ হবে কীভাবে- এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি বলেছেন, বিশ্ববাজারে চাহিদা কমছে। তার সঙ্গে বাজার ধরার অসম প্রতিযোগিতা তো আছেই। এত সমস্যা থাকলে বিনিয়োগ হবে কীভাবে?
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি বলেন, বিগত ২০১৪ থেকে ২০১৯ এই পাঁচ অর্থবছরের পোশাকশিল্পের গড় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। অথচ এর আগের ২০০৩ থেকে ২০১৩ এই ১০ অর্থবছরে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনাম ও কম্বে¦াডিয়ার প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। তিনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চলমান সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বাড়ছে উৎপাদন খরচ। বিগত ৫ বছরে এই উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ব্যাংকের সুদ ও কমিশন বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মজুরি বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। বিদ্যুতের খরচ বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। গ্যাসের খরচ বেড়েছে ৫ শতাংশ। পরিবহন খরচ বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
ড. রুবানা হক মালিকদের দক্ষতা ও ত্রুটি প্রসঙ্গে বলেন, কিছু ত্রুটি হয়তো সবারই আছে। মালিকরা সবাই এখন অনেক কষ্ট করছেন। ছোট ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেকে লজ্জায় বলতে পারেন না। দু-তিন কোটি টাকাও নাই অনেক মালিকের। তারা বেতন দিতে পারছেন না। ব্যবসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার একটা নীতিমালা লাগবে। যে ব্যবসা করতে পারছে না, তাকে বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা করে দিতে হবে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক পণ্যের ক্রেতাদের পছন্দ বদলে গেছে। ছোট কারখানাগুলোকে অসম প্রতিযোগিতা থেকে বের করতে একত্রীকরণ করতে হবে। তার মতে, পোশাকশিল্পের জন্য অবকাঠামো সমস্যা বড় চ্যালেঞ্জ। সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরের মান উন্নয়ন করতে হবে। তাইওয়ানে যেখানে পণ্য খালাসে ৮ ঘণ্টা লাগে, সেখানে বাংলাদেশে লাগছে ১০ দিন। এ ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রের ভিতর অনেক মারপ্যাঁচ আছে।