Home Recent ভারত-পাকিস্তানের সুতায় অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কারোপের প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তানের সুতায় অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কারোপের প্রস্তাব

ভারত ও পাকিস্তান থেকে ডাম্পিং মূল্যে সুতা রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশে এ মোকাবেলায় আপত্কালীন ব্যবস্থা হিসেবে বিকল্প নগদ সহায়তা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প সুতা-কাপড় উৎপাদনকারী মালিক সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানীকৃত সুতার ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি ধার্যসহ অন্যান্য দাবিরও প্রস্তাব জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারক মালিক সংগঠন দ্য ক্লদিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএমএআই) বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিতে শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকারপক্ষকে। বস্ত্রমন্ত্রীকে দেয়া চিঠির বিষয়বস্তুর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশের সুতা ও কাপড় উৎপাদনকারী বস্ত্র খাতের শিল্প মালিক সংগঠন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ভারত থেকে বাংলাদেশে যে পরিমাণ অর্থের টেক্সটাইল সামগ্রী আমদানি হয়ে থাকে বা ভারত রফতানি করে তার পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা বিটিএমএর বিশ্লেষণে বলা হয়, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ৫৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের। অথচ এর বিপরীতে একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের টেক্সটাইল পণ্যসামগ্রী আমদানির পরিমাণ হচ্ছে ৭৭৪ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের নেতিবাচক ৯২.৭ : ৭.৩ যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, শতাংশে যা প্রায় ১৩০০ গুণ। এতদসত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধির অজুহাতে ডাম্পিং মূল্যে সুতা রফতানির প্রয়াস এবং একই সঙ্গে আমাদের তৈরি পোশাক রফতানিতে শুল্ক আরোপের প্রস্তাবনা অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য।

নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব সম্পর্কে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ইইউতে আমাদের রফতানি ৪০ শতাংশের মতো হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে বলে জানিয়ে বিটিএমএ বলছে একদিকে দেশী-বিদেশী ক্রেতা কর্তৃক কভিড-১৯-এর অজুহাতে তৈরি পোশাকের মূল্য কমিয়ে দেয়ার ঘটনা। পাশাপাশি তৈরি পোশাকের কাঁচামাল তথা সুতা ও কাপড়ের করোনাজনিত কারণে রফতানি ব্যাহত হওয়ায় মজুতকৃত অংশের বিপুল পরিমাণ উৎপাদন খরচ অপেক্ষা অনেক কম মূল্যে রফতানি করবে। এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যা শুরু হয়েছে। এছাড়া প্রতিযোগী দেশ তথা চীন, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম তাদের মার্কেট শেয়ার ধরে রাখাসহ আমাদের তৈরি পোশাকের শেয়ার দখলের জন্য বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে বিটিএমএ।

কভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ও প্রতিযোগী দেশ কর্তৃক গৃহীত আগ্রাসী প্রচারণামূলক নীতির প্রভাবে টেক্সটাইল সেক্টর তীব্র সংকটের সম্মুখীন, ফলে নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে সৃষ্ট এ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের একটি পরিকল্পিত অথচ টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে এমন আহ্বান জানিয়ে চিঠিতে বিটিএমএ বলছে, এক্ষেত্রে বিকল্প নগদ সহায়তার হার বৃদ্ধি, সুতার ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি আরোপসহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই এক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত ৬ শতাংশ বিকল্প নগদ সহায়তা, বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত অর্থাৎ ১০ শতাংশ প্রদান করা হয়, তাহলে ভারত কর্তৃক ডাম্পিং মূল্যে সুতা রফতানি হলে বিদ্যমান প্রাইস ডিসঅ্যাডভান্টেজ মিলগুলোর পক্ষে কম্পেনসেট বা মিনিমাইজ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আমাদের স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলো তাদের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখাসহ টেকসই হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here