Home বাংলা নিউজ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি কমেছে ১৮ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি কমেছে ১৮ শতাংশ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ২০২০ সালের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি থেকে জুলাই ২০২০) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ১৮ শতাংশ। একইভাবে কমেছে আমদানির প্রধান উৎস চীন, ভিয়েতনাম, ভারত থেকেও। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সাত মাসে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম থেকে ৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক বেশি কিনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অধীন অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) গত ২ সেপ্টেম্বর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি কমেছে ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশটিতে পোশাকের মোট আমদানি হয় ২৯০ কোটি ৫৩ লাখ ২৫ হাজার ডলার। ২০১৯ সালের একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ২৭ হাজার ডলার। তবে মার্কিন ক্রেতারা পোশাক রফতানিকারক বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো থেকেও পোশাক আমদানি কমিয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম থেকেও পোশাক আমদানি কমেছে মার্কিন ক্রেতাদের। জানুয়ারি থেকে জুলাই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ভিয়েতনাম থেকে ৬৯৪ কোটি ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ডলারের পোশাক কিনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা। এ হিসেবে সাত মাসে বাংলাদেশের চেয়ে ৪০৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের পোশাক বেশি কিনেছে মার্কিনরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম সব সময়ই এগিয়ে ছিল। কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চীন সব দেশ থেকেই পোশাক আমদানি কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের। আর এ পরিস্থিতি আরো দীর্ঘমেয়াদে অব্যাহত থাকবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকরা। বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক এ বিষয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম সব সময়ই এগিয়ে ছিল। দেশটিতে আমাদের রফতানি কমেছে ১৮ শতাংশ, অন্যদিকে ভিয়েতনামের কমেছে ১১ শতাংশ। কভিডের কারণে ভিয়েতনামের রফতানির সবচেয়ে বড় পতন হয় মে মাসে। বাংলাদেশের জন্য বড় পতন ছিল মে ও জুন মাসে। ফলে কভিডের প্রভাব আমাদের ওপর বেশি বিস্তৃত। ডব্লিউটিওর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের গত ৪ আগস্ট ওটিইএক্সএর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি কমেছে ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশটিতে পোশাকের মোট আমদানি হয় ২৪৭ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। ২০১৯ সালের একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৮৪ লাখ ৬৬ হাজার ডলার। প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক পণ্য ক্রয়ের প্রধান গন্তব্যগুলোর বেশির ভাগ থেকেই আমদানি কমেছে। পোশাক পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গন্তব্যগুলোর মধ্যে প্রথমেই আছে চীন। জানুয়ারি থেকে জুলাই এ সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে পোশাক আমদানি কমেছে ৪৯ শতাংশ। ভিয়েতনাম থেকে কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এদিকে মার্কিন ক্রেতাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও পোশাক আমদানি কমেছে। দেশটি থেকে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ৩৩ শতাংশ। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি যথাক্রমে কমেছে ১৯ ও ৪১ শতাংশ। শুধু কম্বোডিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের আমদানি বেড়েছে ৬ শতাংশ। কভিড-১৯ ডিসেম্বরে চীনে উৎপত্তির পর জানুয়ারি থেকে এপিলের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত দেশগুলোর পদক্ষেপ অনুসরণ করে মার্চের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ ছুটির নামে শুরু হয় অঘোষিত লকডাউন। দেশে তৈরি পোশাক পণ্যের রফতানিকারকরা বলছেন, বৈশ্বিক ক্রেতারা বাংলাদেশকে দেয়া ৩১৮ কোটি ডলারের রফতানি ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here