তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সর্বোপরি গার্মেন্ট খাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিবেশবান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে SREUP নামের এই প্রকল্পের আওতায় প্রাক-অর্থায়ন সুবিধার (প্রতীকী ঋণ বিতরণ) উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রকল্প থেকে প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতা সর্বোচ্চ ৩ মিলিয়ন ইউরো সমমূল্যের ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রকল্পটির গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বোচ্চ আরোপিত সুদ ৭ শতাংশ হারে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এ প্রকল্পের আওতায় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত। প্রতীকী ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু ফরাহ মো. নাছের। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. কামাল হোসেন। এ সময় গ্রাহক স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের প্রতিনিধির হাতে প্রতীকী চেক তুলে দেওয়া হয়। ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলি এবং গ্রাহক ভার্চুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেডের প্রতিনিধি প্রতীকী চেক গ্রহণ করেন। প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুল মান্নানসহ প্রকল্প কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতে আরও নিরাপদ; তথা অগ্নি, বিদ্যুৎ ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন, সবুজতর অর্থাৎ ইটিপি, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও পানিসম্পদের ব্যবহার হ্রাস করা এবং কর্মপরিবেশ আরও স্বস্তিদায়ক—এয়ার কন্ডিশনিং, ক্যান্টিন ও শৌচাগার নির্মাণ, বাচ্চাদের ডে-কেয়ার নির্মাণ ইত্যাদির জন্য আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান করা। এছাড়া করোনা মহামারি সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগেও ঋণ প্রদান করা। এই প্রকল্পের আওতায় ঋণের যথাযথ ব্যবহারকরণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ঋণপ্রস্তাব অনুযায়ী যথাযথভাবে কার্যসম্পাদন সাপেক্ষে ঋণ গ্রহণকারী তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দিষ্ট আনুপাতিক হারে আর্থিক প্রনোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া, তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিরাপত্তা ও পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের আওতায় ঋণপ্রস্তাব তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদান এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর ফলে, এ খাতের টেকসই উন্নয়ন ঘটবে, যা প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সম্ভাবনাকে আরও বেগবান ও টেকসই করবে।