fbpx
Home Blog Page 12

লোকসান পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও কর্মচঞ্চল পোশাক কারখানা

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বেশ কিছুদিন অস্থির ছিল আশুলিয়া ও গাজীপুরের পোশাক কারখানাগুলো। মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় ফিরেছে স্বস্তি। আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেই দিনগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও খোলা রাখা হয়েছিল অধিকাংশ কারখানা। শুক্রবার কর্মচঞ্চল দিন পার করেছেন শ্রমিকরা। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।

জানা গেছে, গতকাল আশুলিয়ায় স্বাভাবিক পরিবেশে ১৫০টিরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেছেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া গাজীপুরের কোনো কোনো এলাকায় ৭০-৮০ শতাংশ এবং কোনো কোনো এলাকায় ৪০-৫০ শতাংশ কারখানাই খোলা ছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেন। 

বিভিন্ন কারখানার ব্যবস্থাপকরা জানান, বেশ কিছু দিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। এখন যথাসময়ে পণ্য রপ্তানির চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনে অতিরিক্ত কাজ করছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা বলেন, ‘আমাদের কিছু যৌক্তিক দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে ছিলাম। অধিকার আদায়ে নানা কর্মসূচি পালন করেছি। কারখানা মালিকরা অধিকাংশ দাবি মেনেও নিয়েছে। এখন আমাদের এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, তাদের ক্ষতি হওয়া মানে নিজেদের পেটে লাথি মারা। তাই লোকসান পুষিয়ে নিতে ছুটির দিনেও স্বতস্ফুর্তভাবেই আমরা কাজে যোগ দিয়েছি।’

বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে শ্রমিক অধ্যুষিত আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ১ হাজার ৮৬৩টি কারখানায় কাজ করেন ৯ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক। স্বাভাবিক কারণেই এই শিল্পাঞ্চলের দিকে সবার দৃষ্টি থাকে। দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ায় এখন সবাই একযোগে দেশের উন্নয়নে কাজ করবেন।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম জানান, কিছু কারখানা এখনও বন্ধ থাকলেও ছুটির দিনে অধিকাংশ গার্মেন্টে নির্বিঘ্নে কাজ চলেছে। পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সতর্ক ছিল।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, শিল্প পুলিশ, জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি পেলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়বে

দেশের তৈরি পোশাক খাতের বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কে বড় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর দেশটি শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহার করে। এক দশকে তা আর পুনর্বহাল হয়নি।অথচ ভিয়েতনাম মাত্র ৭ শতাংশ শুল্কে দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি করলেও বাংলাদেশকে দিতে হয় ১৮ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি পেলে নতুন বাজার ছাড়াই মোট রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি বাড়াবে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর দেশের বাণিজ্যে সুফল নিয়ে আসবে। 

 ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের প্রভাব পড়েছে এই খাতে।তারা বলেন, এই সুবিধা বাংলাদেশ আগেই পেতে পারত যদি ড. ইউনূসের সহযোগিতা নিত। তবে তাদের আশা, এখন সুযোগ এসেছে, ড. ইউনূস চেষ্টা করলে এর জট খুলতেও পারে।

এ প্রসঙ্গে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রত্যাহার হওয়ার পর কখনো শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়নি বাংলাদেশ। ড. ইউনূসের কল্যাণে এবার সুযোগ তৈরি হয়েছে।বাংলাদেশ যদি ন্যূনতম পাঁচটি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, আর এর মধ্যে পোশাক খাতকে নিশ্চিত করা গেলে দেশের রপ্তানি আয় অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এটা করা গেলে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের বেশি।’


এদিকে গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকে হয়েছে। বাইডেন এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে জিএসপি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বিগত সরকারের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পররাষ্ট্রনীতির কারণে বৈষম্যের বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে ইউনূস-বাইডেনের এই বৈঠকে এ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ বা ভিয়েতনামের সমান করার প্রস্তাব দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের ধাক্কার মুখে পড়বে। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারনির্ভরতাও কমাবে। তবে তিনি মনে করেন, শুধু শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেই হবে না; একই সঙ্গে ঢালাও সুবিধা পেলেই হবে না; বিশেষ ক্যাটাগরি অনুসারে পেলেই বাংলাদেশ এর সুবিধা পাবে। 

 রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৯.৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো তা ১০ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১০.২৮ শতাংশ কমে চার বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময় ছিল ৪.৫৬ বিলিয়ন ডলার।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর মার্কিন সরকার বাংলাদেশের জন্য জিএসপি বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করে। দীর্ঘ ১১ বছরে পোশাক খাতে নিরাপত্তা ও শ্রমের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হলেও বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত বাজারের সুবিধা আর ফিরে পায়নি।

ঘাটতি পুষিয়ে নিতে উৎপাদন বাড়াতে তোড়জোড় পোশাক ব্যবসায়ীদের

দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও কারফিউ, আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ এবং প্রধান প্রধান শিল্পাঞ্চলে সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গত তিন মাস ধরে পোশাক শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পোশাক রপ্তানিকারকরা উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অনেক পোশাক কারখানা এখন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয়েছে। কারণ রপ্তানিকারকরা ক্রিসমাসকে সামনে রেখের পশ্চিমা অর্ডার ও আসন্ন শরৎ ও শীতের রপ্তানি আদেশ নিশ্চিত করতে চায়।

এর পাশাপাশি দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ধরে রাখতে সাব-কন্ট্রাক্টরদের দিকে ঝুঁকছেন। তারা বিদেশি বিক্রেতাদের কাছে রপ্তানির মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করছেন।

ভারতীয় রেটিং এজেন্সি কেয়ারএজ রেটিংসের মতে, এই সংকট যদি এক থেকে দুই বছরের বেশি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি আদেশের প্রায় ১০ শতাংশ ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে চলে যেতে পারে।

বর্তমানে অনেক রপ্তানিকারক আশঙ্কা করছেন, উৎপাদন বিলম্বের কারণে তাদের বড় ধরনের ছাড় দিতে হবে বা উড়োজাহাজে পণ্য পাঠাতে হবে। এতে পণ্যপরিবহন খরচ অনেক বাড়বে। এমনকি তারা কিছু রপ্তানি আদেশ বাতিলের আশঙ্কা করছেন।

পোশাক প্রস্তুতকারকদের তথ্য অনুযায়ী, আকাশপথে ঢাকা থেকে ইউরোপে এক কেজি শুকনো কার্গো পরিবহনে খরচ হতে পারে চার ডলারের বেশি। অথচ একই পরিমাণ পণ্য সমুদ্রপথে ১০ সেন্টেরও কম খরচে পরিবহন করা যায়।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বিদেশি খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো যদি শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করে মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দেয়, তাহলে তারা বিরূপ প্রভাব এড়াতে পারবেন।

জানতে চাইলে হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, ‘আমি যে সব খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করি তাদের কাছে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছি। তাদের কাছে দেশের সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছি।’

‘কারখানাগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তারা মেয়াদ বাড়াবেন বলে আমি আশাবাদী,’ বলেন তিনি।

তিনি জানান, সময়মতো পণ্য উৎপাদন ও শিপমেন্ট নিশ্চিত করতে সাব-কন্ট্রাক্টর খোঁজা হচ্ছে।

এর আগে, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় বড় পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবির মধ্যে হাজিরা বোনাস ও টিফিন ভাতা বাড়ানোর দাবি আছে।

ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ইউনিয়ন নেতা ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর, কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের ১৮ দাবির সবকটিতেই সম্মত হন এবং ২৪ সেপ্টেম্বর একটি যৌথ বিবৃতি দেন।

তিনি জানান, শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় হা-মীম গ্রুপের সব কারখানা এখন চালু।

ঢাকার একটি প্রধান ইউরোপীয় খুচরা বিক্রেতার প্রতিনিধি বলেছেন, তার কোম্পানি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, কারফিউ, ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, রাজনৈতিক পরিবর্তন বা শ্রমিক অস্থিরতার কারণে কোনো ছাড় চায় না। কারণ তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত।

তিনি বলেন, ‘আমরা খুশি যে, এই খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। আমাদের পণ্যের শিপমেন্ট এখন স্বাভাবিক হচ্ছে।’

এইচ অ্যান্ড এম ও মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের মতো প্রতিষ্ঠানে পোশাক সরবরাহকারী শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, শ্রম পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল এবং প্রায় সব কারখানা উৎপাদনে ফিরেছে।

তার ভাষ্য, ‘আমরা বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের একটি অংশ। আমরা যেসব অর্ডার নিই তার বেশিরভাগই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠাতে হয়। আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা সময়মতো পণ্য পৌঁছে দিতে পারব।’

তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিস্থিতির আর্থিক প্রভাবগুলো কাটিয়ে উঠতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনোযোগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘আমদানি, রপ্তানি, বেতন, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও বকেয়া পরিশোধে অসামঞ্জস্যতার কারণে প্রায় সব তৈরি পোশাক কারখানা বর্তমানে ঋণের ভারে জর্জরিত। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের পোশাক ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা না গেলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বুধবার বলেন, যেহেতু পোশাক খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে, তাই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য তারা রোববার বা সোমবার বড় খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন। ক্রেতারা দ্রুত ডেলিভারি আশা করছেন, তবে তারা এখনো কোনো অর্ডার বাতিল করেননি।

তার ভাষ্য, ‘সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাক খাত ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ অনেক কারখানা পণ্য উৎপাদন করতে ও সময়মতো সরবরাহ করতে পারেনি। এমনকি ক্রেতারা কারখানা পরিদর্শন করতে পারেনি।’

Situation in Ashulia returns to normal as most RMG factories reopen

The situation in Ashulia Industrial Zone has started to return to normal since yesterday (25 September) after RMG owners agreed to accept the 18 demands of the workers through a meeting between the owners, the workers and the government.

Most factories in Ashulia reopened today (26 September) and workers joined work spontaneously.

Contacted, Superintendent of Industrial Police-1 Md Sarowar Alam said, “Since the morning, we have seen that workers have joined work as usual and no untoward incident has been reported anywhere.”

However, 17 factories in Ashulia still remained closed, including three non-RMG factories. Among these factories, general holiday has been declared at eight and the other nine are closed following Section 13 )1) of Bangladesh Labour Act which stipulated no work no pay.

“Some factories are closed due to unpaid wages and internal issues. There is an unpaid wages issue in at least eight factories. We are trying to resume operations at the factories by discussing the issue with BGMEA and the owners,” Sarowar added.

Labour leaders and industrial police hoped that the situation will remain normal and the industry will get back to its usual pace soon.

পোশাকশিল্পের সার্বিক পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি : বিজিএমইএ

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সাধারণ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 

রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার পরও দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। এখন বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে।এর আগে সন্ধ্যায় কিভাবে শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, আর ক্রেতাদের দেওয়া কথা রেখে কিভাবে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা যায়, এই দুই বিষয়কে সামনে রেখেই আলোচনা করেন পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা। 

বিজিএমইএর তথ্য বলছে, আশুলিয়া এলাকার মোট ২৭২টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে আজ ১৩/১ ধারায় বন্ধ ছিল ২৭টি। কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধ রাখা হয় বা ছুটি দেওয়া হয় এমন কারখানার সংখ্যা ১২টি। আর স্বাভাবিক উত্পাদনে ছিল ২৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা।

গত মাসের শেষদিকে এসে হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে দেশের প্রধান এই রপ্তানি খাত। এরপর শ্রমিক, মালিক, সরকার, স্থানীয় রাজনীতিবিদ সবাই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক উত্পাদনে ফিরতে পারেনি কারখানাগুলো।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএ নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর অনেক কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়। এরপর কারখানা সচল হওয়ার সংখ্যাও বেড়েছিল।

তবু সংকট থেকে বের হতে পারেনি এই খাত। এ অবস্থায় অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। কারখানায় হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ১৫ জনেরও বেশি মানুষকে আটকের কথা জানানো হয়। শ্রমিকদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগে নেত্রকোনা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।গত ১৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিতিতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সভা করে বিজিএমইএ। সেদিন সিদ্ধান্ত হয়, যে কারখানায় অসন্তোষ দেখা দেবে, শ্রম আইন অনুযায়ী সেই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ নীতি, অর্থাৎ কাজ না করলে সেদিনের মজুরি না দেওয়ার ঘোষণাও হয়।

বিদেশি চক্রান্তে গার্মেন্টসে অস্থিরতা!

রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প এখন সংকটে। কথায় কথায় কারখানায় বিক্ষোভ, ধর্মঘট, আন্দোলন আর দাবিদাওয়ার কবলে পড়ে ক্রয়াদেশ ও উৎপাদন ঝুঁকিতে। নানা ছুতায় কর্মীরা অপ্রচলিত ইস্যু সামনে এনে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে খারাপ বার্তা যাচ্ছে বহির্বিশ্বে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান এই খাত নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে ষড়যন্ত্রের।

উদ্যোক্তাদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের শত প্রচেষ্টার মধ্যেও শিল্পে স্থিতিশীলতা না ফেরায় তাঁরাও এর পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রের শিল্প ধ্বংসের ইন্ধন রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন। তাঁরা বলেন, আর্থিকভাবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই খাতকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিদেশি অদৃশ্য শক্তি টাকা ছিটিয়ে দেশি এজেন্টদের দিয়ে শিল্পাঞ্চলগুলোকে অস্থিতিশীল করার জন্য পর্দার আড়ালে কলকাঠি নাড়ছে বলেও তাঁদের ধারণা।

এদিকে গতকালও অস্থিতিশীলতা তৈরির আশঙ্কায় সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের অন্তত ৬০টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠক করেন পোশাকশিল্প মালিকরা। অন্যদিকে শ্রমিকরাও অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়ে তাঁদের ১৮ দফা দাবি জমা দিয়েছেন।

জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই পুরো পোশাক খাত একটি খারাপ সময় পার করছে। কয়েক মাস আগে বেতনসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরও থেমে থেমে নানা দাবিদাওয়া নিয়ে মাঠে নামছে কর্মীদের একাংশ। শ্রমিকদের আগের সরকারের দলীয় একটি চক্রসহ আরো নতুন নতুন গোষ্ঠী প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে সরকারের নানা প্রচেষ্টার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এমনকি সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার পরও থামছে না অস্থিরতা। এ জন্য নেপথ্যে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পোশাক খাতে অস্থিরতার ফলে ক্রয়াদেশ কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কেউ কেউ বলছেন, তাঁদের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ক্রয়াদেশ কমে গেছে। বৈশ্বিক ক্রেতারা ভারতসহ অন্য দেশে তাদের ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি যখন ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, তখন ভারতে পোশাকের ক্রয়াদেশ ১২ শতাংশ বেড়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে একটি চক্রের ইন্ধন দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। কালের কণ্ঠের এই প্রতিবেদকের কাছে একটি ভিডিও এসেছে, যেখানে একজন নারী শ্রমিক নেত্রীকে আগের সরকারকে ফেলে দেওয়ার ধারাবাহিকতায় প্রয়োজনে বর্তমান সরকারকেও ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতে শোনা যায়।

বিভিন্ন সূত্র থেকে আরো জানা যায়, আগের সরকারের দলীয় সুবিধাভোগীদের একটি অংশ এর সঙ্গে জড়িত। পালিয়ে যাওয়া অনেক নেতা আবারও পোশাক শিল্পাঞ্চলে ফিরতে শুরু করেছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পোশাকশিল্পের চলমান অস্থিরতার ফলে লাভবান হচ্ছে প্রতিযোগী দেশ ভারত। সম্প্রতি ভারতে রপ্তানি বেড়েছে, আর দেশের কর্মসংস্থান কমছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বড় বড় পোশাক ব্যবসায়ীর নজরদারিতে আনলেই এর প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। পরিস্থিতির অবনতিতে কার্যাদেশ এবং বিদেশি ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিলে দেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পোশাক খাতের একজন উদ্যোক্তা বলেন, দেশের পোশাকশিল্পে অস্থিরতায় ভারতে রপ্তানি আয় বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে তাদের রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশ। শুধু আগস্টেই তাদের আয় হয়েছে ১২৬ কোটি ডলার। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত রপ্তানি থেকে ভারতের আয় হয়েছে ৬৩৯ কোটি ডলার। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধ, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি লজিস্টিক খরচ ও মূল্যস্ফীতির মতো সমস্যাগুলোকে পাশ কাটিয়ে রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে ভারত।

বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে দেশি ও বিদেশি গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে। এর মধ্যে রাজনীতিও ঢুকে পড়েছে উল্লেখ করে নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামিম ইহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই শ্রমিক আন্দোলন কোনো সাধারণ আন্দোলন নয়। এখানে বিদেশি শক্তি ঢুকে পড়েছে। ফলে শ্রমিক আন্দোলনের নামে দেশের পোশাকশিল্পসহ সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বহিরাগতরা এসব করছে। এই আন্দোলনে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বেকার যুব সংগঠনের নামে কারখানা ভাঙচুর করছে। এটা কোনো শ্রমিকের কাজ নয়।’

দেশের পোশাক খাতে চলমান অস্থিরতার পেছনে বিদেশি ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ভুল তথ্য ছড়িয়ে একটি মহল শিল্প এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এ খাতে অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে।’

এদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে গতকাল গার্মেন্টসশিল্প সেক্টরের শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হয়। এ সময় শ্রমিক নেতারা ১৮ দফা দাবি জানান। এর মধ্যে মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন ও শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ অন্যতম। শ্রমসচিব জানিয়েছেন, চলমান শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে আজ দুপুরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। এতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে শ্রমিকদের দাবি সম্পর্কে জানা যায়, মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে করা। ২৭ কারখানায় ন্যূনতম মজুরি দ্রুত বাস্তবায়ন করা, চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করা, সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ১৭ ধারাসহ অন্যান্য ধারা সংশোধন করা, বকেয়া মজুরি পরিশোধ, বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ, শ্রমিকদের জন্য রেশনব্যবস্থা, বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক কালো তালিকা না করা, বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা, সব ধরনের হয়রানিমূলক ও রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে আইন করা, কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করা, জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণের জন্য তদন্ত করা,  শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা এবং মহিলা শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করা।

গাজীপুরে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ-ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, ৬০ কারখানায় ছুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর  জানান, গতকাল সোমবারও চাকরিতে পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের কারণে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা নগরীর চান্দনা চৌরাস্তা, চৌধুরীবাড়ি, ভোগড়া বাইপাস, ছয়দানা হারিকেন, কাশিমপুর ও টঙ্গীতে বেশ কয়েকটি কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করেন। বিক্ষোভ করেন সাইনবোর্ড, জিরানি বাজার, কোনাবাড়ী, বাসন, বাঘের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গতকাল গাজীপুরে ৬০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে জানান গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ।

গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আরমান হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশ বেকার সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার আমরা আলোচনা করেছি। গতকাল থেকে তাঁদের কোনো কর্মসূচি থাকার কথা ছিল না। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বেকারত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার তাঁদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরও সকালে কয়েক শ লোক ভোগড়া বাইপাসে একত্র হয়ে আন্দোলনে নামেন।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, ‘বিক্ষোভ চলাকালে টঙ্গীতে ইস্ট ওয়েস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, কাশিমপুরে গ্রামীণ টেক্স, ডরিন গার্মেন্টস ও নরভান গার্মেন্টস কারখানায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালান। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান।’

শ্রীপুরে সিরামিক কারখানায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরে ১১ দফা দাবিতে একটি সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা গতকাল সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দফায় দফায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সকাল ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ও শিল্প পুলিশ সেখানে পৌঁছে কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহার কথা বললে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শ্রমিকরা।

উপজেলার ধনুয়া এলাকায় আরএকে সিরামিক বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা এই আন্দোলন করেন।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কারখানার কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতের নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের অপসারণ করতে হবে। এ ছাড়া বাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী মজুরি ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধিসহ (ইনক্রিমেন্ট) তাঁদের ১১ দফা দাবি রয়েছে।

পোশাক খাতে অস্থিরতা চলছেই, আবার বসল বিজিএমইএ

গতকাল উত্তরায় সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে উদ্যোক্তাদের ‘জরুরি মতবিনিময়সভা’য় ডাকা হয়। বৈঠকে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি, সদস্য কারখানাগুলোর মালিক, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, শিল্প পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইসহ বিভিন্ন অংশীজন। এ সময় তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি করেন।

Govt, RMG factory owners accepting workers’ demands a welcoming development

The government and garment factory owners accepting the 18-point demand from garment workers is a welcoming development. I hope this will put an end to all the vandalism and unrest.

Factories need to run smoothly now and clear the backlog.

The damage done to the industry is evident as we have seen orders being diverted and placed in other competing countries.

Today we have seen in the news that we can expect elections to take place after 18 months. With the history of violence centring elections, we can assume that we will not see increasing orders coming in.

This unfortunate series of events will have a negative impact in the near future.

Also, investments which were in the pipeline are on hold or cancelled. So, double-stage transformation requirements and carbon reduction strategies will now take a backseat.

Most of the garments have because of the chain of events become financially affected.

So, in the coming days, there will be some tough challenges and in the near future, the industry will go through consolidation with many factory closures, especially with the current monetary policy.

Sincerely hope we will see all factories operating from tomorrow so we can create a new chapter and move forward.

55 factories in Ashulia still remain closed

At least 55 factories in Ashulia industrial area remain closed amid workers protest and dissatisfaction.

Among them, 46 are closed under section 13 (1) of Bangladesh Labor Act 2006 (no work-no pay) and 13 have announced general holidays.

Apart from this, normal operations are continuing in other factories in the industrial area including Dhaka EPZ.

Labour leaders say that many factory workers arrived at the factories in the morning, but returned after finding the factories to be closed.

According to Superintendent of Industrial Police Mohammad Sarwar Alam, the factories that have stopped production are mainly located on Bypail-Abdullahpur road in Ashulia.

However, even if 55 factories are closed, not all of them are due to their workers protesting. Workers of only 10/12 factories are protesting which is causing unrest in chaos in the neighbouring factories, said the SP.

It is also reported that among the factories which are open, workers have stopped work in some factories due to various demands.

However, there was no news of any roadblock or any untoward incident anywhere in the industrial area today, added the SP.

In order to strengthen security, patrolling activities are ongoing in the industrial areas with additional members of law enforcement forces deployed in front of various factories.

BGMEA says the number is 35

Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) says production operations have been halted in 35 factories in Ashulia.

Among them, 29 factories are closed under Bangladesh Labour Act Section 13(1). The number of factories which were closed after opening in the morning or announced general holiday is six.

Factories closed under Section 13(1) of the Labor Act include Hamim Group, Anant Group, Ducati Apparels, NASA Group, New Age Group, Bando Design, Yagi Bangladesh Limited, Envoy Group, Vintage Garments, Generation Next.

In addition, the factories that have announced paid holidays or work is halted include Sidko Group, The Rose Dresses ltd, FnF trend Fashion, Trousers Line Ltd, Wucho Fashion, Fashion Forum Ltd.

BGMEA said that today 407 factories are open in Savar, Ashulia, Jirani area, on the contrary 35 are closed and in Gazipur 876 factories are open whereas four are closed.

The number of factories that remain open in Narayanganj, Dhaka and Chattogram are 209, 302 and 350. No factories are closed in these areas.

According to BGMEA, 267 (98.16%) factories in Ashulia area have paid their salaries for the month of August, and 5 (1.83%) factories have not paid their salaries.

3 new RMG factories get Leed certification

Three more readymade garment (RMG) factory units in Bangladesh have obtained United States Green Building Council’s (USGBC) leadership in energy and environmental design (Leed) certificates recently, according to the BGMEA.

With this, Bangladesh has further solidified its position as a global leader in environmentally friendly apparel manufacturing.

It now boasts 226 Leed-certified factories, including 91 platinum-rated, 124 gold-rated, 10 silver-rated, and four certified factories.

In August, Unitex Spinning Ltd Unit-2, a factory unit based in Sitakunda, Chittagong, received a platinum certificate from the USGBC at Leed O+M: Existing Building v4.1 rating system with a score of 83.

Sepal Garments Ltd, a Gazipur-based factory unit, also obtained a platinum certificate from the USGBC at Leed O+M: Existing Building v4.1 rating system with a score of 85 in August.

Ananta Huaxiang Limited, a factory unit based in Narayanganj, also obtained a gold certificate from the USGBC at Leed O+M: Existing Building v4 rating system with a score of 63 in August.

Currently, 61 of the world’s top 100 Leed factories, including nine of the top 10 and 18 of the top 20, are in Bangladesh.

This achievement is poised to attract additional investment and partnerships, cementing Bangladesh’s reputation as a sustainable manufacturing hub.

Moreover, Bangladesh is also home to the highest and the second-highest-scoring green factories.

The rapid increase in Leed-certified green factories in Bangladesh is a clear and direct result of the garment industry’s unwavering commitment to environmental sustainability.

This dedication to sustainability is crucial for ensuring this industry’s long-term viability and success.

Another 550 factories are waiting to get the USGBC’s Leed certification.

The factory units of Bangladesh have been obtaining the Leed certificate since 2001.

USGBC honours factories based on several criteria: transformation performance, energy, water, and waste management. The best performers are rated platinum, followed by gold and silver.

According to industry insiders, these criteria help green factories significantly reduce operational costs over time, even though they may initially cost more to set up.

These factories also provide a safe working environment for employees.

BGMEA Director Mohiuddin Rubel told Dhaka Tribune that it was thrilling to see Bangladesh’s RMG industry’s incredible progress towards sustainability.

“The rise in Leed-certified factories is a true testament to our collective commitment to a greener future, this is a game-changer. It is imperative to understand the growing importance of sustainable practices,” he further said.

He also said that consumers worldwide increasingly demand eco-conscious clothing, and Bangladesh is stepping up by embracing Leed certification. Bangladesh is not just protecting the environment but also strengthening its position as a responsible global player.

“This translates into a stronger brand reputation for Bangladesh, attracting investment and ensuring long-term success for the RMG sector. It’s a win-win for everyone – the environment, our industry, and ultimately, the future of fashion,” he added.

According to apparel manufacturers, the move towards green factory buildings helped regain Bangladesh’s image after the Rana Plaza tragedy, which claimed 1,134 lives and left more than 2,000 injured.

আশুলিয়ায় ২৫টি ছাড়া সব কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বেশিরভাগ পোশাক কারখানায় পুরোদমে চলছে উৎপাদন। ২৫টি ছাড়া বাকি সব কারখানায় শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন শ্রমিকরা। শ্রম আইন অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে ২০টি ও পাঁচটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন চারটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বুধবার সকাল থেকে টঙ্গীর বিভিন্ন কারখানার সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। আন্দোলনের পর থেকে বন্ধ আছে কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম। কারখানাগুলো হলো মেঘনা সড়ক এলাকার এমট্রানেট গ্রুপের গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো অ্যাপারেল লিমিটেড, টঙ্গীর পশ্চিম থানা এলাকার খাঁ পাড়ায় সিজন ড্রেসেস লিমিটেড ও টঙ্গী বিসিকের টসিনিট কারখানা।

শিল্প উদ্যোক্তারা জানান, চলতি সপ্তাহে আশুলিয়ায় নতুন করে কোনো কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেনি কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা প্রবেশ করে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়া ইউসুফ মার্কেট এলাকার জেনারেশন নেক্সট কারখানা ও পলাশবাড়ী এলাকার পার্ল গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছেন। মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে লুসাকা গ্রুপের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে কয়েকটি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তাই বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দিতে আমরা মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএর কাছে অনুরোধ করেছি। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম জানান, শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি বুধবার অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন কারখানার সামনে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে বুধবার বিকালে গাজীপুরের টঙ্গীতে সরেজমিনে কারখানাগুলোতে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিজন ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের গত জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতন বকেয়া আছে। বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করেন মালিকপক্ষ। বাকি অর্ধেক বেতনের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কারখানায় কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। আট দফা দাবি জানিয়ে কারখানার ভেতর কর্মবিরতি পালন ও স্লোগান দেন টঙ্গীর বিসিক এলাকার টসিনিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। অপরদিকে ঈদ বোনাস, কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগ ও পর্যাপ্ত ছুটিসহ ১৩ দফা দাবিতে গত কয়েক দিন কারখানার ভেতর কর্মবিরতি পালন করেন গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ ও ব্রাভো অ্যাপারেল কারখানার শ্রমিকরা। সকালে কারখানায় এসেই কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে কারখানার সামনে বিক্ষোভে নামেন কিছু শ্রমিক। পরে শিল্প পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে চলে যান। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (টঙ্গী জোন) মো. মোশারফ হোসেন জানান, গত কয়েকদিন যাবত এই চারটি কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছি। মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলেও আন্দোলন থামছে না।

RMG BANGLADESH NEWS