Home Blog Page 26

আশুলিয়া থেকে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর হচ্ছে অন্য এলাকায়

রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার অধীন আশুলিয়ায় রয়েছে পোশাক খাতের প্রায় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস কিংবা কারখানা।

সার্বিক দিক বিবেচনায় কমপ্লায়েন্ট বা মানে উত্তীর্ণ বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও রয়েছে অনেকগুলোর। সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদেরও দাবি কারখানার কর্মীদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন তারা। কিন্তু তা দিয়েও লাভ হচ্ছে না। নিয়মিত বিরতিতে শ্রম অসন্তোষের কারণে বন্ধ রাখতে হচ্ছে কাজ। পোশাক শিল্প-কারখানার প্রেক্ষাপটে এটি একটি বড় ধরনের বিপর্যয়।

বিরাজমান শ্রম অসন্তোষের কারণে প্রায় ২১ দিন বন্ধ রাখতে হয়েছে ওই এলাকার একটি মাঝারি আকারের কারখানা (নাম প্রকাশ করতে চায়নি কর্তৃপক্ষ)। এ পরিস্থিতিতে ক্রয়াদেশ দেয়া নিয়ে অস্বস্তির মধ্যে রয়েছেন কারখানাটিতে নিয়মিত কাজ করানো এক বিদেশী ক্রেতা। আশুলিয়ার বাইরে অন্য এলাকায় কারখানা থাকলে ক্রয়াদেশ দিতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে এরই মধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

শিল্প পুলিশের হিসাবে দেশের শিল্প অধ্যুষিত আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা, কুমিল্লা ও সিলেট—এ আট এলাকায় কারখানা রয়েছে নয় হাজারের বেশি। এর মধ্যে পোশাক কারখানা ৩ হাজার ৪২৬টি। পোশাক পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর হিসাবে দেশে সরাসরি রফতানি করা সক্রিয় কারখানা প্রায় ২ হাজার ২০০। যার উল্লেখযোগ্য অংশই আশুলিয়ায় অবস্থিত। কিন্তু ধারাবাহিক শ্রম অসন্তোষের জেরে এ এলাকায় ক্রয়াদেশ দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন বিদেশী ক্রেতারা।

সাভারের আশুলিয়া অঞ্চলের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোয় নিয়মিত বিরতিতে শ্রম অসন্তোষ চলমান রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আশুলিয়া অঞ্চলের শিল্প মালিকদের নিয়ে স্বতন্ত্র একটি প্লাটফর্ম গঠন করা হয়েছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক খান বাবলু। জানতে চাইলে তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সবদিক বিবেচনায় আশুলিয়ার কারখানাগুলো দেশের সেরা। খুব রক্ষণশীল হিসাবেও পোশাক রফতানি বাবদ মোট আয়ের অন্তত ২৫ শতাংশ আসে এ এলাকার কারখানাগুলোর কাজের মাধ্যমে। অন্যান্য এলাকার কারখানাগুলো মজুরি ও সুযোগ-সুবিধার বিচারে করুণ দশা। তাই আশুলিয়া এলাকায় যখন কিছু ঘটে তখন বুঝতে হবে যে “‍সামথিং ইজ ভেরি রং”।’

আশুলিয়ার কারখানাগুলো নিয়ে ক্রেতারা বেশ অস্তস্তিতে আছেন জানিয়ে এনামুল হক খান বলেন, ‘ক্রয়াদেশ দেবে না—এ কথা না বলে তারা বলছে, দেশের মধ্যে অন্য এলাকায় ক্রয়াদেশ দিতে আগ্রহী। উদ্যোক্তাদের মধ্যে যাদের শিল্প অধ্যুষিত একাধিক এলাকায় কারখানা রয়েছে, তারা ক্রয়াদেশ ধরে রাখতে পারছেন। কিন্তু যাদের কারখানা শুধু আশুলিয়ায় তারা ক্রেতাদের অস্বস্তি নিয়ে ভীষণ বিপদের মধ্যে রয়েছেন।’

দেশের বাইরে অন্য দেশে ক্রয়াদেশ চলে যাচ্ছে, এ কথাটি আংশিক সঠিক, আংশিক ভুল—এ তথ্য জানিয়ে এনামুল হক খান বলেন, ‘অনেক ক্রয়াদেশ এখন চীন থেকে সরে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এগুলোর গন্তব্য হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ। বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায়ও সে ক্রয়াদেশ যাচ্ছে। ঢালাওভাবে সব ক্রয়াদেশ চলে যাচ্ছে এটি ঠিক নয়। কারণ কারখানাগুলো এখন ক্রয়াদেশে পরিপূর্ণ। সব কারখানায়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্ডার রয়েছে। কিন্তু এর মানে এও না যে ভারতে ক্রয়াদেশ যাচ্ছে না। উদ্বৃত্ত হলে তা অন্যান্য গন্তব্যে যেতেই পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতির প্রভাবে চীন থেকে প্রচুর ক্রয়াদেশ সরে যাচ্ছে বিধায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগে এ ধরনের পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ ক্রয়াদেশ বাংলাদেশেই চলে আসত।’

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংগঠনটির সক্রিয় কারখানার মধ্যে সচল ছিল ২ হাজার ৯৩। শ্রম আইনের ১৩-এর (১) ধারায় বন্ধ ছিল ছয়টি। কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ, স্ব-বেতনে ছুটি বা শ্রমিক চলে গেছে এমন কারখানা ছিল তিনটি। এর মধ্যে আশুলিয়া এলাকায় গতকাল ১৩-এর (১) ধারায় বন্ধ কারখানাগুলো হলো এজে সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড, এমএএম গার্মেন্টস লিমিটেড, ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড ও নাসা সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড। শ্রমিকরা কাজ না করে চলে গেছেন বা কাজ বন্ধ রাখা হয় নাসা বেসিকস লিমিটেড ও বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে আশুলিয়ার অধিকাংশ কারখানায়ই ক্রেতারা আর ক্রয়াদেশ দিতে চাচ্ছেন না। সেগুলো ওইখান থেকে অন্য এলাকায় যাচ্ছে। অনেক মালিক আছেন যাদের আশুলিয়ায়ও কারখানা আছে, আবার অন্য এলাকায়ও রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এখন আশুলিয়ার বাইরে যে মালিকের কারখানা নেই, তিনি হয়তো ক্রয়াদেশ পাবেন না বা কমে যাবে। তবে দেশের বড় ও ভালো কারখানাগুলো আশুলিয়ায়। ওই এলাকায় অসন্তোষের ইন্ধনদাতারা অন্য এলাকায়ও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে। আজ (গতকাল) ১৩-এর (১) ধারায় চারটা কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। যদিও কারখানাগুলো ক্রয়াদেশে পূর্ণ ছিল। যদি শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কার্ড পাঞ্চের পর কাজ না করে বসে থাকেন তাহলে তো চালু রেখে কোনো লাভ নেই। দাম কম হলেও এখন ক্রয়াদেশ ভালো আসছে কিন্তু কাজের পরিবেশের কারণে নেয়া যাচ্ছে না।’

US policy changes likely to impact Asia-Pacific’s textile growth

The Asian Development Bank (ADB) has highlighted that recent changes in US economic policies could significantly impact the growth prospects of the Asia-Pacific region. According to the ADB, the US’s policy shifts, including potential changes in trade, monetary, and fiscal policies, may have far-reaching effects on emerging economies in Asia.

In particular, the US’s stance on trade relations, especially with China, could influence the flow of goods and investments within the region. The ongoing trade tensions between the two global powers could disrupt supply chains and affect the broader economic stability of Asia-Pacific nations. Furthermore, shifts in US monetary policy, such as interest rate changes, could influence capital flows into the region, potentially raising borrowing costs for developing countries.

Despite these challenges, the ADB remains cautiously optimistic about the region’s growth. The bank notes that strong domestic demand, particularly in countries like India and Southeast Asia, could help offset the external risks posed by the changing US policies. Additionally, the Asia-Pacific’s diversified economies and robust infrastructure development plans provide a buffer against potential economic headwinds.

The ADB has called for continued regional cooperation and policy adjustments to minimize the impact of global uncertainties. As Asia-Pacific nations navigate these challenges, maintaining resilient economic strategies and fostering regional integration will be key to sustaining long-term growth in the face of external pressures.

Recycled polymers driving circular economy: China and US lead the way

The global shift towards a circular economy is accelerating, with recycled polymers playing a pivotal role in this transformation. According to a recent report, China and the United States are leading the charge in advancing the use of recycled materials in various industries, particularly in plastics and textiles. These nations are investing heavily in infrastructure and technologies to promote the recycling of polymers, ensuring that plastic waste can be reprocessed and reused to create new products.

China, as the largest global producer and consumer of recycled polymers, is rapidly scaling up its capabilities in plastic recycling. The country’s policies and governmental support for waste management are driving innovation in the recycling sector. Similarly, the United States is witnessing increased adoption of recycled polymers in manufacturing, with several companies introducing eco-friendly alternatives to traditional plastic products. This trend is not only helping to reduce plastic waste but also fostering sustainable practices across industries.

Experts highlight that the circular economy model, which emphasizes the reuse and recycling of materials, is key to addressing the growing environmental concerns related to plastic pollution. By integrating more recycled content into production processes, both China and the US are setting a strong example for other countries to follow. The ongoing advancements in polymer recycling technologies will continue to play a critical role in achieving global sustainability goals and mitigating the impact of plastic waste on the environment.

With ongoing efforts, these two countries are spearheading the transition to a more sustainable and circular economy, encouraging the world to rethink its approach to plastic use and waste management.

Crisis in Bangladesh: A turning point for global apparel supply chains

The gas crisis, along with the political turmoil in Bangladesh, including the stepping down of Prime Minister Sheikh Hasina, has created uncertainty that is further straining the industry and economy. This instability has disrupted not only the overall industry but also the textiles and apparel sector, and it is likely to push international buyers to consider alternative sourcing destinations, potentially adopting a ‘Bangladesh-plus-one’ strategy. This shift could lead to a significant loss of market share for Bangladesh’s ready-made garments (RMG) sector. The countries that are major import partners of Bangladesh include the US, the UK, Germany, Canada, France, Spain, Italy, Belgium, Denmark, and Australia. Many of these countries are also investors in Bangladesh’s apparel industry. The countries that have heavily invested in Bangladesh’s apparel industry, such as the US, Germany, the UK, and Canada, are seriously considering sourcing products from other Asian nations, such as Vietnam, India, and Sri Lanka.

The ready-made garment (RMG) sector of Bangladesh has been the cornerstone of the country’s economy. The industry’s contribution to Bangladesh’s GDP is significant, with estimates suggesting that it accounts for around 18 per cent of the country’s total GDP and was growing at a rate of about 6 per cent, according to IMF data. The official estimate for Bangladesh’s GDP was $1.429 trillion at the end of 2023 in purchasing power parity terms.

The industry that has made a crucial contribution to rebuilding the country and its economy is none other than the RMG industry, which is now the single biggest export earner for Bangladesh. The country’s apparel exports in 2023 reached a staggering figure of $47.5 billion, accounting for over 86 per cent of the total export earnings from the textiles and apparel industry combined. More than 290,000 registered manufacturing units employ 4.22 million workers in the RMG industry, with strong female participation (41 per cent), according to estimates, which has grown at a rate of about 7 per cent over the years.

Bangladesh remains the second-largest RMG supplier to the world after China. The countries that are lagging include Vietnam, Germany, Italy, and India.

অর্ধ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির পথে নন-লেদার জুতা

দেশের সিনথেটিক ও অ্যাথলেটিক জুতা রপ্তানির পরিমাণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। রপ্তানি বাণিজ্যে তৈরি পোশাকের ব্যাপক আধিপত্যের প্রেক্ষাপটে নতুন খাত হিসেবে নন-লেদার জুতার রপ্তানি বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সুখবর।

২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হওয়ার আগের দশকে নন-লেদার জুতার রপ্তানি ১২০ শতাংশ বেড়ে ১৮৯ মিলিয়ন ডলার থেকে ৪১৬ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বলছে, চলতি অর্থবছরেও এই খাতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

ইপিবির তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে নন-লেদার জুতা রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ শতাংশ বেড়ে ২১৭ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলারে হয়েছে।

রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ চামড়ার জুতা, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ও কৃষিপণ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নন-লেদার জুতা শিল্প অর্ধ বিলিয়ন ডলারে প্রবেশ করবে।

শোয়েনিভার্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পশ্চিমের ক্রেতারা পণ্যের তালিকায় বৈচিত্র্য আনতে ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের ওপর বড় ধরনের শুল্ক এড়াতে শীর্ষ জুতা উৎপাদক চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’

ময়মনসিংহে রিয়াদ মাহমুদের জুতা কারখানায় প্রায় চার হাজার ৭০০ জন কাজ করেন। সেখান থেকে ইন্ডিটেক্স, আলদি, মাতালান ও রেডটেপের মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের জন্য জুতা পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি বহুমুখীকরণের চেষ্টা করলেও এখনো মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক থেকে।

রিয়াদ মাহমুদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখানে কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায়। এ দেশের তৈরি পোশাক সম্পর্কে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ভালোভাবে অবগত। তারা এখন জুতার অর্ডার দিতে উৎসাহী হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রম খরচ কম হওয়ায় ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশি কারখানাগুলো সিনথেটিক জুতার প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে পারে। ফলে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ও নতুন ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছে।’

‘বড় ব্র্যান্ডগুলো আগামী মার্চ পর্যন্ত শোয়েনিভার্সের কারখানা বুকিং দিয়েছে। চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনার কারণে ক্রেতারা এখন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানিয়েছে—এইচঅ্যান্ডএম, পুমা, ডেকাথলন, ফিলা ও কাপ্পার মতো ব্র্যান্ডগুলোর কার্যাদেশ বেড়ে যাওয়ায় নন-লেদার জুতার রপ্তানি বেড়েছে।

নন-লেদার জুতার প্রধান বাজার স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, ইতালি ও জার্মানি।

চামড়ার চেয়ে ভালো

ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, গত ১০ বছরে দেশের নন-লেদার জুতা রপ্তানি গড়ে বার্ষিক ২৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। চামড়ার জুতা রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মাত্র ছয় শতাংশ।

চামড়ার জুতা রপ্তানি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪৮৩ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৪৪ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

তবে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নন-লেদার জুতা রপ্তানিকারকরা মাত্র চার শতাংশ নগদ প্রণোদনা পান জানিয়ে রিয়াদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘চামড়ার জুতা খাতে তা ছিল ১৫ শতাংশ।’

নন-লেদার জুতা রপ্তানির ভবিষ্যৎ

এডিসন ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শহীদ মনে করেন, দ্রুত প্রবৃদ্ধির কারণে নন-লেদার জুতা শিল্প ভবিষ্যতে রপ্তানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তবে সময় মতো পণ্য পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় নাইকি ও অ্যাডিডাসের মতো শীর্ষ ব্র্যান্ড বাংলাদেশে আসেনি।

ফ্রান্স ও জার্মানিতে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাফ সুজের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত উল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ক্রেতারা বেশি অর্ডার দেওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের রপ্তানি বেড়েছে।’

টিকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাফ সুজের দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ হাজার জোড়ারও বেশি।

দেশে অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘২০২১ সাল থেকে আরএফএল নন-লেদার জুতা রপ্তানি শুরু করে। বর্তমানে ৩৭ দেশে আমাদের জুতা রপ্তানি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিপুল চাহিদা এবং দ্রুত প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বিবেচনায় এ খাতটি দ্রুত অন্যতম প্রধান রপ্তানি আয়কারী খাত হিসেবে সামনে আসতে পারে।’

প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে

জেনিস সুজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির খান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উচ্চ শুল্ক এড়াতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।’

‘শুল্ক কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ কাজে লাগানো নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি।’

‘স্থানীয় উৎপাদকদের এখন আলোচনা করতে ও রপ্তানি আদেশ পেতে কমপক্ষে সাড়ে তিন মাস লাগবে,’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘চামড়া ও নন-লেদার জুতার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সত্ত্বেও শুল্ক কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে গত দুই দশকে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে আটকে আছে।’

তার ভাষ্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে বছরে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা আমদানি শুল্ক পেয়ে থাকে। বন্ডেড ওয়্যারহাউজে কাঁচামাল আনতে হয়।

কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক কমিয়ে দিলে ও বন্ডেড ওয়্যারহাউজের শর্ত ছাড়া কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে সরকারের রাজস্ব বহুগুণ বাড়তে পারে।

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাভারের ট্যানারি শিল্পে কমপ্লায়েন্স না থাকায় চামড়ার জুতা রপ্তানি বাড়াতে কারখানার মালিকরা হিমশিম খাচ্ছেন। নন-লেদার জুতা শিল্পে এ ধরনের সমস্যা নেই। তাই রপ্তানি বেড়েছে।’

বিশ্ববাজার গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সিমাইজ মার্কেট রিসার্চের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অ্যাথলেটিক জুতার বাজারমূল্য ছিল ৬৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার।

২০৩০ সালের মধ্যে এই বাজার বছরে সাত দশমিক ১১ শতাংশ হারে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রপ্তানিতে টানা পতন, পাটশিল্পে বড় ধাক্কা

আপাতদৃষ্টিতে রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ নেই। দেশে বাধ্যতামূলক পাটের মোড়ক ব্যবহারের আইন বাস্তবায়নের গতিও ধীর। সব মিলিয়ে চাহিদা কম থাকায় পাটকল ব্যবসায়ীরা হিমশিম খাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘সোনালি আঁশ’ হিসেবে পরিচিত পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) ৭৭ কারখানার মধ্যে মাত্র দুই ডজন কারখানা পুরোদমে চালু আছে। ফলে পাটের সুতার উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ।

বিজেএসএর চেয়ারম্যান তাপস প্রামাণিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ খাতের অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা অনেক চেষ্টা করছি। হাতে গোনা কয়েকটি কারখানা এখন ভালোভাবে চলছে।’

পাটের সুতা এ খাতের প্রধান রপ্তানি পণ্য। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার পাটের সুতা রপ্তানির পর থেকেই চালান কমছে।

কাঁচা পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাটের সুতার দাম বেশি। তাই অনেক বিদেশি ক্রেতা তুলার সুতা ও পলিপ্রোপিলিনের (পিপি) দিকে ঝুঁকেছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে এই প্রাকৃতিক সুতা থেকে সামগ্রিক রপ্তানি আয় ৪৯২ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

এই বছরগুলোয় পাটের বস্তা ও ব্যাগের রপ্তানিও কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয় ৮৫৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। আগের বছরের তুলনায় ছয় শতাংশ কম।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে ৩৪১ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

তাপস প্রামাণিক বলেন, ‘কম্পোজিট কারখানাগুলোর অবস্থাও ভালো নয়।’

তার মতে, ‘বিশ্ববাজারে আমরা ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছি। আমরা ভারতে রপ্তানি করতাম। ভারত সরকার অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পর সেখানে রপ্তানি কমেছে।’

‘কাঁচা পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাটের সুতার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ খাত অতীতের মতো নীতিগত সহায়তা পায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাধ্যতামূলক পাটমোড়ক আইন দেশের বাজারে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে আমরা এই মন্দা সময় পার করতে পারতাম।’

চাল, গম, ভুট্টা, ডাল ও আটাসহ ১৯ নিত্যপণ্য প্যাকেজিংয়ের জন্য পাটের বস্তা বাধ্যতামূলক করে ২০১০ সালে আইন করে সরকার।

যাহোক, চাল কলের আইন মেনে চলা শুরু করতে পাঁচ বছর লেগেছিল। অনেকে তখন থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগের দিকে ঝুঁকে আছেন।

বিজেএসএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেশের বাজারে প্লাস্টিকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংক ঋণের কারণে বেশিরভাগ কারখানা ন্যূনতম কার্যক্রম বজায় রাখতে উৎপাদন অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ পাটকল সমিতির মহাসচিব আব্দুল বারিক খান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রপ্তানি কমলেও আমাদের কিছু নির্দিষ্ট খরচ আছে। বর্তমান আয় থেকে কোনো রকমে ব্যাংক ঋণের সুদ মেটাচ্ছি।’

মজুদদাররা কাঁচা পাটের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা আগে উচ্চ দামের জন্য পাটের খারাপ ফলনকে দায়ী করেছিলেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পাট উৎপাদন ১৮ শতাংশ কমে ৭৫ লাখ ৬৫ হাজার বেলে (এক বেল প্রায় ১৮২ কেজি) নেমেছে।

কল মালিকরা পাটের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত করে বস্তা, ব্যাগ, সুতা ও সুতলি উৎপাদন করে প্রধানত রপ্তানি বাজারের জন্য।

দেশের শীর্ষ পাট রপ্তানিকারক জনতা-সাদাত জুট মিলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হেলাল আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সুতা উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচা পাট বিক্রি হচ্ছে প্রায় চার হাজার টাকায়।’

‘রপ্তানিতে দাম কমছে। তুরস্ক ও উজবেকিস্তানে পাটের সুতার চাহিদা কমেছে। সেখানকার কার্পেট নির্মাতারা এখন পাটের সুতার বিকল্প খুঁজছেন। সার্বিকভাবে পাট শিল্পের অবস্থা ভালো নয়।’

হেলাল আহমেদ আরও বলেন, ‘কেনাকাটায় প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকারের উদ্যোগের পর সম্প্রতি দেশে পাটের ব্যাগের চাহিদা বেড়েছে। তবে সরকারের উচিত প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার সীমিত করার জন্য বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আসা যার ভিত্তিতে কারখানাগুলো উৎপাদনের পরিকল্পনা করতে পারবে।’

তিনি জানান, যে কারখানায় একসময় দিনে তিন শিফটে চলত, এখন এক শিফটে কমিয়ে আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আগামী মৌসুমে পাটের চাষাবাদ বাড়তে পারে। উৎপাদন বাড়লে আগস্টের পর থেকে পাটশিল্পের সংকট কাটতে পারে।’

National Defense Authorisation Act to boost US textile industry: NCTO

Hailing the House of Representatives for passing the fiscal year 2024-25 National Defense Authorisation Act (NDAA), the National Council of Textile Organisations (NCTO) said the legislation contains provisions that support a strong domestic textile and apparel manufacturing industrial base and aims to expand procurement of American-made defense-related textiles.

It helps preserve the Berry Amendment supply chain and authorises the department of defense (DoD) to take steps to build up the defense textile stockpile.

The legislation directs DoD to be more transparent and disclose all waivers submitted for the procurement of defense textiles not made in the United States.

Related News

In addition to supporting and expanding the critical Berry Amendment, which requires the Department of Defense to purchase cent per cent US-made textiles and clothing, the legislation includes two new key provisions important to the domestic textile industry.

It authorises the secretary of defense to establish pre-positioned stocks of defense textiles needed to support contingency operations, while requiring the secretary to develop a plan to mitigate delays in meeting the demand for a ramp up in defense textile articles.

It increases public transparency for domestic non-availability determinations (DNADS) on an annual basis, while requiring the under secretary of defense for acquisition and sustainment to develop and maintain a list of DNADs and share it with Congress and industry.

“We….urge the Senate to pass this critical legislation this year,” said NCTO president and chief executive officer Kim Glas in a statement.

“The US textile industry provides high-tech, functional components for the U.S. government, including more than $1.8 billion worth of vital uniforms and equipment for our armed forces annually. It is vital to America’s national security that the U.S. military maintain the ability to source high-quality, innovative textile materials, apparel and personal equipment from a vibrant US textile industrial base,” he added.

রপ্তানি বাজার ধরে রাখতে আরএমজিতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিকল্প নেই: বিশেষজ্ঞরা

তৈরি পোশাক খাতের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের হিস্যা ধরে রাখতে কারখানাগুলোতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস অপরিহার্য। আর এর জন্য সরকারি নীতি সহায়তা এবং ব্র্যান্ড, ক্রেতা ও উৎপাদনকারীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্ব অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

১৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঢাকায় বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটার্নাল ডেবট আয়োজিত দ্বিতীয় বাংলাদেশ এনার্জি প্রসপারিটি ২০৫০ সম্মেলনের সমাপনী দিনে বক্তারা এ কথা বলেন।
১১ ডিসেম্বর থেকে বিয়াম ফাউন্ডেশনে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে রূপান্তর এবং বৈশ্বিক ও দেশীয় সংকটের মধ্যেও টেকসই বিদ্যুৎ নীতি অর্জনের ওপর জোর দেওয়া হয়। 

বাংলাদেশের পোশাক ও পরিবহন খাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস নিয়ে একটি সেশনে এথিক্যাল ট্রেডিং ইনিশিয়েটিভের প্রোগ্রাম এভিডেন্স অ্যান্ড লার্নিংয়ের সিনিয়র ম্যানেজার মুনির উদ্দিন শামীম পোশাক খাতে জ্বালানি রূপান্তর বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। ‘তৈরি পোশাক খাতে নিঃসরণ কমাতেই হবে আমাদের ব্যবসা ধরে রাখতে। আর কোনো বিকল্প নেই।’ 
ইউরোপে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন আইন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিউ ডিলিজেন্স’-এর (এইচআরইডিডি) প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২০২৭ সালের পর আইনটি যখন বাস্তবায়ন শুরু হবে, তখন সব ব্র্যান্ডের জন্যই এ আইন মানা বাধ্যতামূলক হবে।
আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় বিধিমালা ও নীতিমালার উপস্থাপনায় জানানো হয়, বর্তমানে অনেক ক্রেতাকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি সার্টিফিকেট (আরইসি) দেখাতে হয়।
এথিক্যাল ট্রেডিং ইনিশিয়েটিভ (ইটিআই) হলো ট্রেড ইউনিয়ন, এনজিও ও কোম্পানিগুলোর একটি জোট, যা বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করে।
মুনির উদ্দিন শামীম জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ২০০টির বেশি পোশাক কারখানা লিড সনদপ্রাপ্ত—যা শিল্পের মোট ইউনিটের ৪ শতাংশ। এই সনদপ্রাপ্ত কারখানাগুলো সবুজ কারখানা হিসেবে বিবেচিত। 
তিনি বলেন, ক্রেতারা এখন পণ্যের গুণগত মানের পাশাপাশি এর উৎপাদন প্রক্রিয়াজুড়ে যে শ্রমিক জড়িত, তাদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে কি না সেটিও দেখছে। 
‘তাই ইউরোপীয় বাজার ধরতে উৎপাদনকারীকে কমপ্লায়েন্স মেনে চলতে হবে। আমাদের লিড সার্টিফাইড পোশাক কারখানা আরও বাড়াতে হবে।’ 
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোট হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি আসে ইইউ অঞ্চল থেকে।  আর দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে।
ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড লিন্ডেক্স।
লিন্ডেক্স বাংলাদেশের লিয়াজোঁ অফিসের দক্ষিণ এশিয়ার টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থাপক কাজী মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, লিন্ডেক্স একটি সুইডিশ ব্র্যান্ড। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, চীন, হংকং, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন অফিস আছে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় ভোক্তারা মূল্যের চেয়ে উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়। পণ্য যে অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে, সেই অঞ্চলের মানুষের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে তারা সতর্ক। 
‘তারা দেখে এসব ব্র্যান্ডকে যারা পণ্য সরবরাহ করে, তারা কতটা টেকসই—যাকে আমরা বলি “গ্রিন ক্লেইমস”।  এটা প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ,’ বলেন তিনি।
ইকবাল আরও বলেন, ইউরোপীয় বাজারে গত দুই-তিন বছরে কর্পোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স ডিরেক্টিভ, এক্সটেন্ডেড প্রোডিউসার রেসপন্সিবিলিটি-র (ইপিআর) মতো অনেক নতুন আইন প্রনণয়ন হয়েছে। এসব আইনের অধীনে ২০২৬ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে সামাজিক ও পরিবেশগত নীতিমালা মেনে পণ্য বিক্রি বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, টেকসই পরিবেশ তৈরি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অবদান রাখতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। ‘এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে দ্রুত কাজ করতে হবে।’ 
বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী দেশ ভিতেনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, পাকিস্তান নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। লিন্ডেক্স বাংলাদেশের কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, ‘তারা যদি ২০৩০-এর মধ্যে কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারে আর বাংলাদেশ যদি না করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কম মূল্যে পণ্য দিলেও এখান থেকে পণ্য কিনবে না।’ 
‘কারণ ইউরোপে যদি পণ্য বিক্রি করতে না দেয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য কেনার কোনো মানে হয় না,’ বলেন তিনি। 
তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপীয় ক্রেতাদের প্রভাবিত করার জন্য পণ্য ছাড়ের চেয়ে আপনি সামাজিক এবং পরিবেশগত কী ধরনের এক্সিলেন্স করছেন, এটা বড় ধরনের মার্কেটিং টুল। আমরা কার্বন নিঃসরণ কত শতাংশ কমাচ্ছি, সেটা আমাদের বড় মার্কেটিং টুল।’
সেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্লাইমেট-টেক কোম্পানি সলশেয়ার-এর ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ কার্বন নিঃসরণ দ্রুত কমাতে সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং সৌরশক্তি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এথিক্যাল ট্রেডিং ইনিশিয়েটিভের প্রোগ্রাম এভিডেন্স অ্যান্ড লার্নিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মুনির উদ্দিন শামীম ব্র্যান্ড, ক্রেতা এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক তৈরি, দায়িত্বশীল ক্রয়ের চর্চা, জ্বালানি রূপান্তরকে মূলধারায় আনা, জলবায়ু ইস্যুতে যৌথ দায়িত্ব গ্রহণ এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর জোর দেন।
অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোকে (এসএমই) সহায়তা দেওয়া; সরকার, ক্রেতা ও কারখানার মধ্যে কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করা; সব কারখানার জন্য সাসটেইনিবিলিটি রিপোর্টিং বাধ্যতামূলক করা; সচেতনতা ও সক্ষমতা বাড়ানো এবং নীতি সহায়তা।
মুনির উদ্দিন শামীম অর্থনৈতিক কূটনীতি শক্তিশালী করা, সহজ অর্থায়ন প্রাপ্তি, শিল্প খাতে কার্বন নিঃসরণ কয়ামতে বাজেট বরাদ্দ, কর অব্যাহতি এবং সরকারের নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার সুপারিশ করেন।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার জন্য তারা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ‘প্রতিটি কারখানাকে জ্বালানি সাশ্রয়ী করার জন্য আমরা কাজ করছি।’ 
তিনি জানান, একটি পাইলট প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় প্রতিটি কারখানাr একটি ম্যাপিং করা হবে, তারা এখন কোথায় আছে। 
ফজলে শামীম আরও বলেন, তারা একটি সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। ‘বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ একসঙ্গে কাজ করছে। এর জন্য আমরা ক্রেতাদের কাছেও ফান্ড চাচ্ছি।’ 
তিনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতি পিস পোশাক তৈরিতে কতটুকু কার্বন নিঃসরণ হয়, তা জানতে একটি গবেষণা পরিচালনা করা হবে। ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন বলবে এই পণ্যর জন্য এতটুকু কার্বন নিঃসরণ করা করা যাবে, তখন সেই অনুযায়ী নিঃসরণ কমানোতে কাজ করা হবে।’ 
ফজলে এলাহি বলেন, ‘আমাদের এর জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন । সরকার যেন দ্রুত স্মার্ট গ্রিড করে। সেখান থেকে আমরা গ্রিন এনার্জি কিনতে পারব। আমার কাছে হিসাব থাকবে কতটুকু গ্রিন এনার্জি আমি ব্যবহার করেছি।’ 

Protest for increment hike: Ashulia situation improves  

The unrest in Ashulia’s industrial area, originating from ongoing protests by RMG workers over annual increment hikes, has improved somewhat on the first day of the week.

Production activities remained normal in most factories here.
However, despite the government’s announcement of a 4% annual increment increase, workers in some apparel factories in Ashulia continued their strike, demanding a 15% increase instead.

According to BGMEA sources, production activities were suspended in 10 factories within the industrial area. Among these, workers at four factories either walked out or staged a strike despite reporting to work in the morning. Additionally, five factories were closed under the “no work, no pay” provision as per section 13(1) of the Bangladesh Labour Act, while one factory remains closed with paid leave for workers.
An official from the Industrial Police told The Business Standard that there were some disturbances in 7/8 factories. However, following discussions, workers in half the factories resumed their duties.

Mohammad Mominul Islam Bhuiyan, Superintendent of Police for Industrial Police-1, told TBS that the situation in Ashulia is calmer compared to recent days. “Work is ongoing in most factories, and we are actively engaging with all stakeholders to further stabilise the situation,” he added.
Worker layoffs amid protest

Reports have emerged of worker layoffs in several factories amidst ongoing protests in the industrial area, where workers are demanding increment hikes. The Industrial Police and labour leaders have also confirmed the situation.

While the exact number of affected factories and workers remains unclear, Mohammad Mominul Islam Bhuiyan Superintendent of Industrial Police-1, told TBS that approximately 300 workers have been laid off across three factories. Among them, two factories implemented layoffs under Section 26(1) of the Bangladesh Labour Act, while one acted under Section 23(1).
Khairul Mamun Mintu, legal affairs secretary

পোশাক শিল্প : বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ কী ?

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে আর্থিক ও প্রশাসনিক সমস্যাগুলোর কারণে উৎপাদনের ক্রয়াদেশ ভারতের দিকে স্থানান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু ক্রয়াদেশ ভারতের বিভিন্ন পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, যেমন গোকলদাস, ট্রাইডেন্ট এবং ওয়েলস্পানের কাছে চলে যাওয়ায় তাদের শেয়ারদর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। গত সোমবার ভারতের শেয়ারবাজারে এসব কোম্পানির শেয়ারদর ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম মানিকন্ট্রোল বলছে, বাংলাদেশের সরকারের অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের অধীনে থাকা ৩২টি লোকসানি পোশাক কোম্পানির মালিকানা বিক্রি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি শ্রমিক আন্দোলন ও বেতন-ভাতা না দেওয়ার সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে হতে পারে। বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের গ্রেপ্তারও তাদের সমস্যাগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের ১৬৯টি কোম্পানির মধ্যে প্রধানত টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পে ৩২টি কোম্পানি বিক্রি করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা জনতা ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে সহায়তা করবে।
ভারতের বাজারে পাঞ্জাবভিত্তিক হিমাতসিংকা সাইড লিমিটেডের শেয়ারদর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে এবং ট্রাইডেন্ট লিমিটেডেও শেয়ারদর ১৩.৯৬ শতাংশ বেড়ে ৩৯.২৭ রুপি হয়েছে। অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারদরও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেমন গোকলদাস এক্সপোর্টসের শেয়ারদর ৮ শতাংশ বেড়ে ১০৫০ রুপি এবং ওয়েলস্পান লিভিংয়ের ৬.৬ শতাংশ বেড়ে ১৭৫ রুপি হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের পোশাক শিল্পের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে, যেখানে ওয়ালমার্ট এবং এইচঅ্যান্ডএমের মতো বিশাল ব্র্যান্ডগুলো ক্রেতা হিসেবে রয়েছে।
তবে বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তারা তাদের অর্ডারগুলো ভারতে চলে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ।

RMG BANGLADESH NEWS