Home Blog Page 53

লোকসান কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় পোশাকশিল্প খাত

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত ও দেশব্যাপী চলমান কারফিউর কারণে পোশাকশিল্পে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন রপ্তানিকারকরা। পাশপাশি বিদেশি খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো সময়মতো পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য তাদের ওপর চাপ দিচ্ছে।

চার দিন কারখানা বন্ধ থাকায় পোশাক রপ্তানিকারকরা সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও উৎপাদন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের বিশ্বাস, উৎপাদন বাড়িয়ে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

গত সপ্তাহের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে ১৮ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তারা বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও জাহাজিকরণে বাধা এমন একসময়ে এসেছে যখন এই খাতটি বিশ্ববাজারে ব্যবসা ফিরে পেতে চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত দেশের পোশাক রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক দুই শতাংশ কমে ৩৩ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রেতারাও দ্রুত পণ্য পাঠানোর জন্য পোশাক রপ্তানিকারকদের ওপর চাপ দিচ্ছেন। কারণ পশ্চিমে সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাসের আগে তাদের দোকানগুলো নতুন ডিজাইনের পণ্য দিয়ে ভরতে হবে। সে সময় সেখানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর ক্রিসমাসের পণ্য জাহাজিকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় টি-শার্ট ও পোলো শার্ট পাঠানো এক রপ্তানিকারক বলেন, ক্রেতারা সংকটের কথা শুনতে চান না। তারা চান সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা হোক। করোনা মহামারি, চলমান রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ ও পশ্চিমের ক্রেতাদের ওপর বিশাল মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ ব্যবস্থা ঘুরে দাঁড়াতে হিমশিম খাচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে লোহিতসাগরে চলমান সংকটের কারণে চলতি বছর পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা আরো বড় ধাক্কা খেয়েছে। এই সংকটের কারণে বাণিজ্যিক জাহাজ পরিচালন খরচ দ্বিগুণ হয়েছে।

এই সংকটের কারণে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পণ্য চালানে আগের সময়ের তুলনায় কমপক্ষে এক মাস বেশি সময় লাগছে। বাণিজ্যিক জাহাজগুলো সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচল করতে না পারায় দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরিপ হয়ে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার ঘুরে চলতে বাধ্য হচ্ছে।

অনেক ক্ষেত্রে, আন্তর্জাতিক পোশাক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো বেশি টাকা খরচ করে উড়োজাহাজে পণ্য পাঠাতে বলছে যাতে সময়মতো পণ্য দোকানগুলোয় পৌঁছাতে পারে। এক কেজি পোশাক যদি নৌপথে ইউরোপে পাঠানো হয়, তাহলে খরচ পড়ে প্রায় ১০ সেন্ট বা এরও কম। কিন্তু, একই পরিমাণ পণ্য ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে পাঠালে খরচ হয় চার ডলারের বেশি। পোশাক রপ্তানিকারকরা বলেন, শুক্রবার কারখানা খোলা রাখার চিন্তা করছেন, যাতে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা যায়। এছাড়াও, কার্যাদেশ বাতিল ও ব্যয়বহুল উড়োজাহাজে পণ্য চালান এড়াতে পারেন। এছাড়া কাঁচামালের ঘাটতির কারণে সময়মতো পণ্য সরবরাহ কঠিন হচ্ছে। সংঘাতের কারণে গত সপ্তাহে কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহ সম্ভব হয়নি। লোকসান কমাতে ওভারটাইম দিয়ে কারখানা চালু রাখতে হবে। ক্রিসমাসের প্রস্তুতির জন্য ক্রেতারা দ্রুত পণ্য পেতে চান।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় দিনে স্পিনিং, উইভিং, ডাইং ও ফিনিশিংসহ বস্ত্র খাতে ৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার লোকসান হয়েছে। যদিও ক্রেতারা কার্যাদেশ বাতিল বা পণ্যের দামে ছাড় চাচ্ছেন না, তারা কার্যাদেশ দিতে দেরি করছেন। ফলে কারখানায় সুতা ও কাপড় জমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে দু-এক দিনের মধ্যে তারা বৈঠকে বসবেন। কার্যাদেশ বাতিল না করতে বা পণ্যের দামে ছাড় না চাইতে অনুরোধ করবেন তারা।

ক্রয়াদেশের পোশাক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়াই এখন চ্যালেঞ্জ

ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলোতে পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত সময় কাজ করছেন শ্রমিকরা। ক্রয়াদেশের পোশাক যথাসময়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এদিকে প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে শিল্প পুলিশ।

শ্রমিকের কর্মচাঞ্চল্যে আবারও মুখর হয়েছে শিল্প-কারখানা। সব অস্থিরতা পেছনে ফেলে সবাই এখন মনোযোগ দিয়েছেন পণ্য উৎপাদনে।

চলমান কারফিউয়ের মধ্যেও সরকারি নির্দেশনা মেনে ময়মনসিংহ অঞ্চলের সব শিল্প-কারখানায় আবারও শুরু হয়েছে পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম। নিটিং, ডায়িং, স্পিনিং, গার্মেন্টস প্রতিটি খাতের কর্মীদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। কর্মীদের সুনিপুণ হাতে তৈরি এসব পোশাক রপ্তানি হবে ইউরোপের দেশগুলোতে। ময়মনসিংহের ভালুকা-ত্রিশালের সব শিল্প-কারখানায় রয়েছে কর্মব্যস্ততা। কোথাও কোথাও কাজ চলছে কয়েক শিফটে। কাজের চাপ বাড়লেও অসন্তোষ নেই শ্রমিকদের মধ্যে। দ্রুত সময়ে কাজে যোগ দিতে পারায় খুশি তারা।

একজন পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘অনেকদিন বন্ধ ছিল আমরা অস্থির হয়ে ছিলাম। এখন কাজ করছি, ভালো লাগছে। কাজ করে টাকা উপার্জন করছি, পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলছি এটাই আনন্দ।’

ময়মনসিংহ ভালুকার শেফার্ড জিনস লিমিটেডের এডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স এইচআর ম্যানেজার ইফতেখারুল আলম বলেন, ‘প্রডাকশনে আমাদের টার্গেট পূরণ হচ্ছে। প্রতিটি শ্রমিক সুন্দরভাবে যার যার দায়িত্ব পালন করছে, কোনো অনুপস্থিতি নেই।’

সাম্প্রতিক অস্থিরতায় চারদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় সারাদেশের মতো বড় দাগে ক্ষতির মুখে পড়েছে ময়মনসিংহ অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। কারখানা খোলার পর ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। অর্ডারের পোশাক যথাসময়ে ক্রেতাদের কাছে শিপমেন্ট করাই এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব তাদের।

ময়মনসিংহের সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেডের এডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স পরিচালক মেজর মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কাজ বন্ধ থাকায় উৎপাদন কিছুটা কমে গিয়েছিল। সঠিক সময়ে ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দেয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়েছে। আশা করবো যে, আমাদের ক্রেতারা এবং আমাদের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন সরকারি এবং বিজিএমইএ, তারা সবাই মিলে একত্রে এই চ্যালেঞ্জ পার করার জন্য যেখানে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার তারা আমাদের সে সহযোগিতা করবেন। রপ্তানি যথাযথ সময়ে করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে সবসময়।’

ময়মনসিংহের শেফার্ড গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার মো. মোকলেসুর রহমান বলেন, ‘অনেক দূর থেকে শ্রমিকরা আমার এখানে এসে যোগদান করেছে। এভাবে থাকলে আমাদের অর্থনীতির চাকা খুব ভালোভাবেই চলবে। ৯৮ শতাংশ শ্রমিকই উপস্থিত হয়েছে। এর জন্য আমাদের উৎপাদনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

এদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা। শ্রমিকদের চলাচলের পথে শিল্প পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ময়মনসিংহ জোন শিল্প পুলিশ-৫ এর পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা আমাদের বিভিন্ন দল নজর রাখে। এছাড়াও আমাদের অন্যান্য দলগুলোও সজাগ থাকে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’

ময়মনসিংহের ভালুকা ও ত্রিশালে নিটিং, ডায়িং, স্পিনিং, গার্মেন্টসসহ ৩০০ এরও বেশি শিল্পকারখানা রয়েছে। যেখানে কাজ করেন দুই লাখেরও বেশি শ্রমিক।

কর্মীর হাতে মেশিনগুলো সচল থাকলেই সচল থাকে দেশের অর্থনীতি। এতে ছেদ পড়লেই যেমন মুখ থুবড়ে পড়ে অর্থনীতির চাকা তেমনি ঘোর অমানিশার অন্ধকার নেমে আসে লাখ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর পরিবারে। যেকোনো দুর্যোগ- অস্থিরতায় গার্মেন্টস শিল্পে যেন কোনো আঁচর না লাগে এমনটাই প্রত্যাশা এই খাত সংশ্লিষ্টদের।

উৎপাদন বন্ধ থাকায় পোশাক রপ্তানি খাতে লোকসান ৭ হাজার কোটি টাকা

গেল সপ্তাহে চার দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের রপ্তানি হারিয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার। আর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকা। এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

ক্রেতাদের নানা শর্ত আর বিধিনিষেধ যেখানে সর্বদা ছায়ার মতো, সেই তৈরি পোশাক খাতে যেন পান থেকে চুন খসলেই উদ্বেগ বাড়ে।

কয়েকদিনের অস্থিরতা যেন পোশাক রপ্তানির খোলা আকাশে ছড়িয়েছে কালো ধোঁয়া। কেননা গেল ১৯ থেকে ২২ জুলাই টানা ৪দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার রপ্তানি হারিয়েছে দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। এসময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ, ওয়াশিং আর ডায়িং খাতে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার।

এমনিতেই গেল অর্থবছরের ১১ মাসে আশানুরূপ হয়নি পোশাক রপ্তানি। এই সময়ে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এমন নেতিবাচক ধারার মধ্যে দেশের অধিকাংশ কারখানায় চলছে এখন শীতকালীন পণ্যের উৎপাদন। এছাড়া বড়দিন উপলক্ষ্যে ক্রয়াদেশের উপযুক্ত সময় পার করছে তৈরি পোশাকখাত। এমন সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।

বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বায়াররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে নাই। আগামীদিনের যেই অর্ডারগুলো এইসময়ে প্লেস হওয়ার কথা ছিল তা অন্যদেশে চলে গিয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া আমাদের জন্য চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তা, উৎসে কর কমানোসহ কাস্টমস, ব্যাংকিং নীতিমালায় শিথিলতা এবং আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজিএমইএ’র সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘এই আঘাত পুষিয়ে নেয়া কষ্টকর হবে। কারণ যোগাযোগের অভাবে ক্রেতাদের কাছে আমাদের ইমেজ হারিয়েছি।’

এ অবস্থায় বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় পোশাক খাতে বিশেষ সহায়তার দাবি উঠলেও তা সরকারের পক্ষেও মানা কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের এখন আর্থিক সক্ষমতা অনেক কম। চাইলেই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে তা কিন্তু না। বাজেট পরিস্থিতি কিন্তু তা বলে না। অন্য জায়গায় তাদের সহায়তা দিতে পারে যা হতে পারে জ্বালানি, গ্যাস, লজিস্টিক ও কাস্টমস ফি কমিয়ে।’

২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলারের মোট রপ্তানি আয়ের ৪ হাজার ৬৯৯ কোটিই ছিল তৈরি পোশাকের।

Bangladesh RMG sector faces major setbacks amid curfew and internet blackout

The ongoing curfew and internet blackout in Bangladesh have severely impacted the manufacturing industries, particularly the readymade garments (RMG) sector. According to industry insiders, RMG exports are projected to decline by 15 to 20% during the next summer season (January to March 2025) due to the recent disruptions and factory shutdowns.

SM Mannan Kochi, President of the Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA), highlighted the gravity of the situation, stating, “International buyers are losing confidence and dependency on us. The amount of loss this incident is causing to our image cannot be explained in terms of money.”

Figure: All RMG factories gradually reopened today.

Garment and textile factories started to gradually reopen yesterday after being kept shut for four days. All factories are reopened today. However, all large, medium and small companies will be in deep trouble in the coming days due to the current situation.

 Talking to the Textile Today Mohammad Mezbah Uddin, Head of Marketing, Kimberley Design said, “We are exporting RMG goods in more than 15 countries including USA, UK, Australia, Japan and Middle East. Around 3,000 employees are working in our company. We’re facing a severe trouble due to internet blackout for the lastseveral days.” 

“We cannot book of our ready products due to the internet blackout. As a result, the shipments will be postponed. Air shipment will cost us a double. Now RMG and its related industries incurred huge loss.”

According to Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) President SM Mannan Kochi, RMG sector incurred a loss of Tk16,000 crore daily.

According to data from the Chattogram Port Authority (CPA), only 415 Twenty Equivalent Unit (TEU) containers were shipped to private Inland Container Depots (ICDs) in 24 hours until Monday morning, compared to the average daily delivery of around 4,000 containers.

However, only 415 containers were shipped to the private Inland Container Depots (ICDs) in 24hours till 8.00 am on Monday, against the average delivery of around 4,000 containers per day.

কারখানা, বন্দর ও ইন্টারনেট চালু হওয়ায় আবারো আশার আলো দেখছেন রপ্তানিকারকরা

কারফিউ শিথিল হওয়ায় বুধবার (২৪ জুলাই) পুরোদমে শুরু হয়েছে কারখানাগুলোর কার্যক্রম, ব্যাংকগুলোও খুলেছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ ফেরার ঘটনাও চট্টগ্রাম বন্দরে কাস্টমস প্রক্রিয়া আংশিকভাবে চালু করার সহায়ক হয়েছে। এতে পাঁচ দিন পর আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পুরোপুরি সচল হওয়ার আশা তৈরি হয়েছে।

এসব ঘটনা রপ্তানিকারকদের জন্য অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে, যারা দেশে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাপ্রবাহের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। এ সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও শিপিং লিঙ্ক ব্যাহত হওয়ায়বন্দরেও জমতে থাকে রপ্তানি না হওয়া পণ্যের চালান। 

কোটাসংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়ে বাংলাদেশ, যা নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার মধ্যরাতে জারি করা হয় কারফিউ।

শিল্পের অভ্যন্তরীণরা বলছেন, বাকি বিশ্বের সাথে বাণিজ্য ও লেনদেনের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে পেরেছেন তারা, বৈশ্বিক ক্রেতারাও বুঝতে পেরেছেন সরবরাহে সাম্প্রতিক ব্যাঘাতের ঘটনা একটি দৈব দুর্বিপাক– যাতে বাংলাদেশের সরবরাহকারীদের কোনো দায় ছিল না। 

কিছুক্ষেত্রে অবশ্য ক্রেতাদের নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহের জন্য এবং অর্ডার বাতিল হওয়া ঠেকাতে রপ্তানিকারকদের বিমানে চালান পাঠাতে হবে, যাকে নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্য অন্যতম বলেই উল্লেখ করেন তারা।  

একয়দিনে কয়েক হাজার রপ্তানি চালান, যার প্রায় ৮০ শতাংশই পোশাক পণ্যের আটকা পড়েছিল দেশের প্রধান বন্দরে। একইভাবে বিপুল সংখ্যক আমদানির কনটেইনারও আটকা পড়ে।  

পোশাক পণ্য থেকে শুরু করে টেক্সটাইল, সিরামিক, ইস্পাত ও সিমেন্টের মতো শিল্পকে বিপুল লোকসান গুনতে হয়েছে, দৈনিক যার পরিমাণ ১,৬০০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। 

এমতাবস্থায় সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক সভায় ব্যবসায়ী নেতারা কারখানা চালু রাখার জন্য দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগ ফিরিয়ে আনা এবং কারফিউ শিথিল করতে অনুরোধ করেন। 

এরপর কারফিউ ধীরে ধীরে শিথিল হতেও শুরু করেছে, গতকাল ৭ ঘণ্টা্র জন্য তা হয়েছিল; শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়। যা শিল্প ও ব্যবসার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এর ফলে গত সপ্তাহের ব্যবসায়িক ক্ষতি ও সরবরাহ চক্রের ব্যাঘাত কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হয়েছেন রপ্তানিকারকরা।  

পোশাক খাতের জন্য বড় স্বস্তি

দেশের অন্যতম বৃহৎ পোশাকপণ্য রপ্তানিকারক ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার টিবিএসকে বলেন, ‘আমরা আমদানি-রপ্তানি করতে পারছি, সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে বলে মনে হচ্ছে। এখন যদি ইউটিলিটি (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট প্রভৃতি) সেবাগুলো স্থিতিশীল থাকে, তাহলে আমরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব বলে মনে করি।’

বন্দর কার্যক্রমেও অচলাবস্থা থেকে উন্নতির আভাস মিলছে। ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের জেরে টানা পাঁচদিন আমদানি ও রপ্তানির কার্গো হ্যান্ডলিং বন্ধ থাকার পরে– মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১,৫০০ টিইইউ এবং গতকালকে প্রায় ২ হাজার টিইইউ হ্যান্ডলিং করেছে। কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, দিনে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টিইইউ হ্যান্ডলিংয়ের স্বাভাবিক সময়ের সক্ষমতায় ফিরতে তাঁদের আরও কয়েকদিন লাগবে। 

ইপিজেডে বৃহত্তম স্থানীয় বিনিয়োগকারী প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ ফেরার পরে– বায়ারদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানাতে এখন তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে কীভাবে উৎপাদন ও পণ্য সরবরাহের ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে তাঁদেরকে জানানো হচ্ছে। 

তিনি বলেন, ‘বায়ারদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক আছে, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কারণে হঠাৎ হওয়া এই ব্যাঘাতকে তারা ছাড় দিতে পারে।’ রপ্তানির কার্যাদেশ (অর্ডার) বাতিল কোনো আশঙ্কা নেই জানিয়ে বলেন, “আশা করি, আমরা এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।’

তানভীর জানান, গত পাঁচদিনে কারখানা বন্ধ থাকায় প্যাসিফিক জিন্সের উৎপাদনে প্রায় ১ কোটি ডলার (১০ মিলিয়ন) এর ক্ষতি হয়েছে। এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য কোম্পানিকে তার আগের পরিকল্পনাও সংশোধন করতে হচ্ছে। 

তিনি আরও জানান, ‘এই ব্যাকলগের কারণে শুধু এসব পণ্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ উৎপাদন পরিকল্পনাও প্রভাবিত হয়েছে। সাপ্লাই চেইনকে স্বাভাবিক করে আগের অবস্থায় আনতে অন্তত আরও দুই মাস সময় লাগবে।’ 

‘তবে আমার আশঙ্কার কারণ হলো, এর মধ্যে কিছু পণ্য হয়তো এয়ার-শিপমেন্ট করতে হবে। চালান পাঠাতে দেরি হওয়ার কারণে কিছু পণ্যের জন্য বায়াররা ডিসকাউন্ট (মূল্যছাড়) চাইতে পারে।’

টিএডি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন বলেন, ইতিবাচক দিকটি হচ্ছে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ও অন্যান্য প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বায়াররা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। ‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময়টা আমরা ফোনকল ও এসএমএসের মাধ্যমে সব বায়ারের সাথে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করেছি।’

ইন্টারনেট চালু হওয়ার পরে উভয় পক্ষই – যেসব ইমেইল পাঠানো সম্ভব হয়নি সেগুলো আবার পাঠাচ্ছে। আশিকুর রহমান আশা করেন যে, আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যেই বায়ারদের সার্বিক উৎপাদন ও রপ্তানি চালানের পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘আপডেটেড’ তথ্যপ্রদান করা সম্ভব হবে।  

নিজস্ব বায়িং হাউজের মাধ্যমে টিএডি গ্রুপ প্রতিমাসে প্রায় ৭০ লাখ পিস পোশাকপণ্য রপ্তানি করে। কারখানা বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ লাখ পিসের চালান বিলম্বিত হতে পারে। 

তানভীরের সাথে একমত পোষণ করে তুহিন জানান, এসব পণ্য আগামী শীত মৌসুমের শেষ সময়ের জন্য, যেগুলো বিমানে করে পাঠাতে বিপুল ভাড়া গুনতে হবে। তা না করলে, ওই মৌসুমের ব্যবসা পুরোটাই হারাবেন তারা।  

বিজিএমইএ’র এই পরিচালক বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী বছরের (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) শীতের মৌসুমের (অর্ডারের) জন্য আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই যোগাযোগ  শুরু করতে পারব, কারণ জুলাই-আগস্ট হচ্ছে এ মৌসুমের অর্ডারের সময়।’ 

নিটওয়্যার রপ্তানিকারক এবং ফতুল্লাহ গার্মেন্টসের প্রধান নির্বাহী ফজলে শামীম এহসান জানান, উৎপাদনে ক্ষতির পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জোটের সম্মুখীনও হতে পারেন রপ্তানিকারকরা। একারণে বায়াররা বিমানে চালান পাঠানোর জন্য চাপ দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।   

বিকেএমইএ’র সহসভাপতি এহসান আরও জানান, আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের সম্ভাব্য ওভারলোডের কারণে আগামী বছরের শীত মৌসুমের পোশাক পণ্যের নমুনা পাঠাতেও প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছেন রপ্তানিকারকরা। অথচ সময়মতো এসব নমুনা পাঠাতে না পারলে, আগামী শীত মৌসুমের জন্য কার্যাদেশও খুব কম পাওয়া যাবে।  

বন্দরে জট কাটাতে লাগবে অন্তত এক সপ্তাহ

ইন্টারনেট সংযোগ আংশিক ফেরার পরে বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ও শুল্ক কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। বন্দরে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।

তবে ইন্টারনেট পুরোমাত্রায় সচল না থাকার কারণে সিঅ্যান্ডএফ ও শিপিং এজেন্টসহ রপ্তানি সংশ্লিষ্ট অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসও আংশিক খোলা রাখা হয়, এতে সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে কাস্টমস অফিসের মাত্র চারটি কম্পিউটারে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে পারছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।

বন্দর ও কাস্টমসের কর্মকর্তাদের ধারণা, বন্দরে কনটেইনার জট কাটিয়ে উঠতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো: ওমর ফারুক টিবিএসকে বলেন, বুধবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের ওয়ান স্টপ সার্ভিস কার্যক্রম চালু হয়। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের শুল্কায়ন শেষে আউটপাস নিয়ে এলেই বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি টর্মিনালের ইয়ার্ড থেকে প্রতিদিন স্বাভাবিক সময়ে ৩,৫০০ থেকে ৪,৫০০ টিইইউ কনটেইনার ডেলিভারি হয়। শুক্রবার থেকে এই সংখ্যা প্রায় শূণ্যের কোটায় নেমে আসে। এমন পরিস্থিতিতে, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ম্যানুয়ালি শুল্কায়ন শুরু করায়– মঙ্গলবার ১,৫০০ আমদানি কনটেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে প্রতিদিন ২ হাজার আমদানি পণ্যের বিল অব এন্ট্রি এবং ৫ হাজার রপ্তানি পণ্যের বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হয়। সিএন্ডএফ এজেন্টরা তাদের নিজেদের অফিস থেকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারে এসব বিল দখিল করেন। 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার ইমাম গাজ্জালি টিবিএসকে বলেন, ব্যবসায়ীরা এখন আমদানি ও রপ্তানির সকল পণ্য খালাস করতে পারছেন। কারো পে অর্ডার ও চালান না থাকলে– আমরা অঙ্গীকারনামা নিয়ে মাল খালাস করতে দিচ্ছি। 

তিনি বলেন, বুধবার থেকে পুরোদমে চালু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন। যেসব পণ্যের বিল অব এন্ট্রি আগে দাখিল করা হয়েছে, কাস্টমস কর্মকর্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেগুলোর শুল্কায়ন সম্পন্ন করছেন। সিএন্ডএফ এজেন্টদের অফিসে পুরোপুরি ইন্টারনেট চালু না হওয়ায় – কাস্টমস কয়েকটি কম্পিউটারে অ্যাসাইকুডা সফটওয়্যার একসেস দিয়েছে। সেখানে সিএন্ডএফ এজেন্টরা বিল অব এন্ট্রি এবং বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল করতে পারছে।

পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে একসাথে কাজ করতে বিজিএমইএ-ক্যাসকেল বৈঠক

পোশাক কারখানাগুলোর জন্য ভিন্ন ভিন্ন ক্রেতাদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আচরণ বিধি এবং একাধিক অডিট সম্পাদন কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানগুলোর সময় এবং অর্থের অপচয় করে না, বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অডিট প্রক্রিয়া জটিল এবং কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন কষ্টসাধ্য করে। শিল্পকে টেকসই করার জন্য পোশাক সমন্বিত আচরণ বিধি প্রনয়ণ ও কারখানায় অডিট করার জন্য প্রটোকলগুলোকে একত্রিত করা জরুরি।

এরকম একটি প্রেক্ষাপটে পোশাক শিল্পে পরিবেশগত ও সামাজিক সমন্বিত আচরণ বিধি প্রণয়ন ও অডিট করার জন্য প্রটোকলগুলোকে একত্রিত করার বিষয়ে একসাথে কাজ করার ব্যাপারে ক্যাসকেল (সাবেক সাসটেইনেবল অ্যাপারেল কোয়ালিশন) এর সিইও কলিন ব্রাউন ও বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক আশিকুর রহমান (তুহিন), পরিচালক শামস মাহমুদ, পরিচালক আবরার হোসেন সায়েম, পরিচালক মোঃ মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক শেহরিন সালাম ঐশী।

বৈঠকে সোশ্যাল ও টেকনিক্যাল অডিটের জন্য শিল্পে সর্বজনস্বীকৃত একটি সমন্বিত আচরণবিধি (ইউনিফাইড কোড অব কনডাক্ট) প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি কচি বিশ্বব্যাপী ক্রেতা, প্রস্তুতকারক এবং শ্রমিকসহ সব স্টেকহোল্ডারের সুবিধার্থে এ ধরনের একটি সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ক্যাসক্যাল’কে আহবান জানান। তিনি বলেন, এটি ছাড়া শিল্পকে দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করা সম্ভব হবে না।

ক্যাসকেল এর সিইও বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প দুর্দান্ত অগ্রগতি অর্জন করলেও শিল্পে আরও করনীয় আছে। আমরা প্রত্যেকে, – সাপ্লাই চেইনে সকলেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। বিজিএমইএ ও ক্যাসকেল একসাথে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহন করে পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে সাপ্লাই চেইন জুড়ে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে অভিন্ন লক্ষ্য অর্জন করতে পারে, শিল্পের জন্য টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারে।

বৈঠকে শিল্পের আরও বিকাশের জন্য, ডিউ ডিলিজেন্স ডাইরেকটিভের মতো আসন্ন প্রবিধানগুলো অনুসরণ করা এবং কর্মীদের কল্যাণ বাড়াতে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, তথ্য শেযার, অনুশীলন ও উদ্ভাবনামূলক সমাধান প্রভৃতি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, ক্যাসকেল একটি গ্লোবাল প্লাটফর্ম, যার অধীনে ব্র্যান্ড, এনজিওসহ ৪০০ এর বেশি সদস্য রয়েছে। বৈঠকে ক্যাসকেল এর সিইও, সমন্বিত আচরণ বিধি প্রণয়নের বিষয়ে সদস্যদের প্রতি বিজিএমইএ এর প্রতিশ্রুতি প্রতিষ্ঠিত করতে ক্যাসকেল এর অধীনস্থ সদস্যদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করবেন, এ মর্মে সম্মতি জানান।

উভয়পক্ষ একমত পোষণ করেন, ক্যাসকেল কারখানা পর্যায়ে আচরণ বিধি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিবে, যাতে করে এ বিষয়গুলো প্রতিপালনে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বাড়ে।

আবার কর্মচাঞ্চল্য শিল্পকারখানায়, ক্ষতি পোষানো নিয়ে দুশ্চিন্তা

কারফিউর কারণে বন্ধ থাকা শিল্পকারখানার একটা অংশ গত মঙ্গলবার চালু হয়েছিল। বাকি থাকা অধিকাংশ কারখানা গতকাল বুধবার উৎপাদনে ফিরেছে। ফলে চার–পাঁচ দিন পর দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোয় কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে।

জানা যায়, ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ময়মনসিংহের ভালুকাসহ বিভিন্ন এলাকার তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, প্লাস্টিক পণ্য, সিমেন্ট, ইস্পাতসহ অন্যান্য শিল্পকারখানায় গতকাল সকাল থেকে উৎপাদন শুরু হয়। অধিকাংশ শ্রমিকই কাজে যোগ দিয়েছেন। চট্টগ্রামের অধিকাংশ কারখানা গত মঙ্গলবার উৎপাদন শুরু করেছিল। নগরের কর্ণফুলী ও চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) কারখানাগুলো গতকাল চালু হয়েছে।

সব পোশাক কারখানা চালু হয়েছে। এখন সময়মতো আমদানি করা কাঁচামাল বুঝে পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা।

আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহসভাপতি, বিজিএমইএ

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, সব পোশাক কারখানা চালু হয়েছে। এখন সময়মতো আমদানি করা কাঁচামাল বুঝে পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা চান না তাঁরা। কারণ, ইতিমধ্যে ৪০-৫০ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। এটার জের সামলাতেই হিমশিম খেতে হবে অনেককে।

এদিকে আমদানি-রপ্তানিকারকদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে পোর্ট ও শিপিং ড্যামারেজ চার্জ মওকুফের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত এ চার্জ আরোপ করা উচিত হবে না।

শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্নোটেক্স গ্রুপের ধামরাই ও মিরপুরের কারখানা গতকাল চালু হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত চার দিনের ক্ষতি পোষাতে মাসখানেক সময় লাগবে।

স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শীতের পোশাক বেশি রপ্তানি করি। এখন আমাদের কাজের ভরা মৌসুম। সাধারণত আমরা ৯-১০ ঘণ্টা উৎপাদন করি। গত চার দিন উৎপাদন করতে পারিনি। তাই শুক্রবারও কাজ করে ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করব। এ ছাড়া প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে বেশি কাজ করে ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করা হবে। তাতেও এক মাস সময় লাগবে।’

গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় আরেক শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক তুসুকা গ্রুপের পাঁচটি কারখানাও গতকাল উৎপাদনে ফিরেছে। এসব কারখানায় শ্রমিকের উপস্থিতির হার ছিল ৯১ শতাংশ। কারফিউর কারণে ওভারটাইম শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে তুসুকা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরশাদ জামাল প্রথম আলোকে বলেন, উৎপাদন মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কারখানায় ইন্টারনেট চালু না হওয়ায় পণ্য পাঠানো যাবে না। কারণ, পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনভিত্তিক। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরেও আমদানি-রপ্তানির পণ্যের জট লেগে গেছে।

গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকার সায়েম ফ্যাশন নামের সোয়েটার কারখানাটি দুই শিফটে দৈনিক ২২ ঘণ্টা চালু থাকে। গত কয়েক দিনের ক্ষতি পোষাতে কারফিউর মধ্যে পুরোদমে কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সায়েম ফ্যাশনের পরিচালক আবরার হোসেন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আমরা কমপক্ষে এক সপ্তাহ পিছিয়ে পড়েছি। সে কারণে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে আমরা পণ্য রপ্তানির জন্য বাড়তি সাত দিন সময় চেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিল্প পুলিশ থেকে আমাদের কারখানায় শ্রমিকদের প্রবেশ করানোর সময় বিশেষ নিরাপত্তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আমরা সেটি মেনে চলার চেষ্টা করছি।’

কারফিউর কারণে বন্ধ থাকা নারায়ণগঞ্জের এমবি নিট ফ্যাশন কারখানাও উৎপাদন শুরু করেছে। গতকাল সকাল নয়টায় তাদের ৯০ শতাংশ কর্মী কাজে যোগ দেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের ৮০০ পোশাক কারখানা আবার চালু হয়েছে। কারফিউর কারণে কারখানা বন্ধ থাকার সময়ের মজুরি শ্রমিকেরা পাবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে ওভারটাইম করে এ সময়ের ছুটি সমন্বয় করা হবে।

তৈরি পোশাক কারখানার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করে আদজি ট্রিমস। তুরাগ ও ধামরাইয়ে তাদের দুটি কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। তুরাগের কারখানায় ৬০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত হলেও ধামরাইয়ে ৯৬ শতাংশই কাজে যোগ দেন।

জানতে চাইলে আদজি ট্রিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘সরবরাহব্যবস্থায় কিছু ছোটখাটো সমস্যা রয়েছে। আশা করছি, দু–এক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

গাজীপুরের টঙ্গীর মাজুখানে এক্সক্লুসিভ ক্যান নামের কারখানাও উৎপাদনে ফিরেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রঙের ছোট-বড় ক্যান, আইসক্রিমের বক্স, মবিলের ক্যান, ওষুধের বোতল তৈরির এ কারখানায় দুই শিফটে কাজ হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাতের শিফটে কাজ করা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

এক্সক্লুসিভ ক্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার কর্মীরা প্রায় সবাই উপস্থিত হয়েছেন। গতকাল ইন্টারনেট না থাকায় দাপ্তরিক কাজে কিছু সমস্যা হয়েছে।

অফিস-ব্যাংক-পোশাক কারখানায় সীমিত পরিসরে কাজ শুরু

বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েকদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতির পর আজ থেকে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

তিন দিনের সাধারণ ছুটির পর বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে অফিস-আদালতের কার্যক্রম। আজ রাজধানীসহ চার জেলায় সাত ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে বুধবার সকাল ১১টা থেকে চার ঘন্টার জন্য সরকারি–বেসরকারি সব অফিস খোলা থাকবে।

এছাড়া গতকাল দিনের বেলাতেই বিভিন্ন রুটে সীমিত পরিসরে চলতে শুরু করেছে দূরপাল্লার যানবাহন।

মঙ্গলবার রাত থেকে সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে ইন্টারনেট চালু করা হয়েছে।

এছাড়া মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল শুরু হয়েছে। যানবাহন বেড়েছে ঢাকার সড়কেও। সীমিত পরিসরে খুলছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সড়কে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এবং বিজিবির সদস্যদের টহল রয়েছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে ১৬ জুলাই থেকে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে সংঘাতে রূপ নেয়। এর জেরে বৃহস্পতিবার থেকে অচলাবস্থা তৈরি হয় আমদানি ও রপ্তানিতে। আর পরদিন শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারির পর বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ শিল্পকারখানা।

পোশাক কারখানা খুলছে আজ

তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে আজ বুধবার। কারফিউ থাকলেও পোশাক খাত-সংশ্লিষ্ট পণ্য পরিবহন করা যাবে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে এ বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, পোশাক শ্রমিকদের কারখানা থেকে দেওয়া কার্ড দেখালেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহায়তা করবে। পোশাক কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া পোশাক কারখানা অধ্যুষিত এলাকায় সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিদের মধ্যে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে এ বৈঠক হয়। জানতে চাইলে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ায় বিদেশি ব্র্যান্ড-ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন হয়েছে। আশা করছি, পুরোদমে কাজ করে বিগত কয়েক দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে পোশাক খাত।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শাটডাউন কর্মসূচি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে কারফিউ জারি হলে গত শনিবার যৌথ সভায় পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। পরে বুধবার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্দরের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। এতে শিল্পের জন্য আমদানি করা কাঁচামাল বন্দর থেকে ছাড় করানো যায়নি। বন্দরে পৌঁছানো রপ্তানি পণ্যও জাহাজীকরণ সম্ভব হয়নি। এক বিবৃতিতে বিজিএমইএ সভাপতি দাবি করেছেন, কারখানা বন্ধের কারণে পোশাক খাতে দিনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামে খুলল এক দিন আগে

চার দিনের অচলাবস্থা শেষে গতকাল চালু হয় চট্টগ্রামের পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা। শ্রমিকরা দিনভর কর্মস্থলে মুখর ছিলেন। যদিও কারফিউর কারণে গণপরিবহন কম থাকায় কর্মস্থলে যেতে ও ফিরতে ভোগান্তি পোহান শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেশির ভাগ কারখানায় ৯৭ শতাংশ শ্রমিক এসেছেন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অন্যতম প্রধান ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাত কারখানাও গতকাল খুলে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের বিশেষ পাসে চলে কারখানাটি। জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল বলেন, গত কয়েক দিনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, দেশের স্বার্থে আমরা নতুনভাবে শুরু করতে পারব।

জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ধাপে ধাপে স্বাভাবিক হবে পুরো পরিস্থিতি। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়। বুধবার থেকে অন্যান্য কারখানার চাকাও সচল হবে। কারখানা কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

আশুলিয়ায় চলেছে ১০% কারখানা

ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় গতকাল সীমিত পরিসরে চলেছে পোশাক কারখানা। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কারখানাগুলোর প্রধান ফটকে রাখা হয় বাড়তি নিরাপত্তা। শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার হয় নিজস্ব পরিবহন। সকাল ৮টার মধ্যে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশুলিয়া এলাকায় পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার ১০ শতাংশের মতো কারখানা কার্যক্রম চালায়।

সরেজমিন বেলা ৩টায় হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একেএইচ গ্রুপের কারখানায় শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায়। কারখানার ডিএমডি আবুল কাশেম সমকালকে জানান, সকাল ৮টায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। নিজস্ব নিরাপত্তায় শ্রমিকদের কর্মস্থলে আনা ও বিকেলে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। একই এলাকায় আল মুসলিম গ্রুপের কারখানার নিরাপত্তা কর্মকর্তা সজীব হোসেন জানান, কিছু কারখানায় সীমিত পরিসরে কাজ হয়েছে। বুধবার থেকে পুরোদমে চলবে আশা করছি।

Protective textiles can unlock pathways to profitable diversification

Recently, the BGMEA and industry leaders are emphasizing on the increasing demand for non-cotton apparel, which showed a notable 78% surge in its share of total fiber production over the last five years.

The Bangladesh ready-made garments industry is currently facing tough competition from other leading exporters such as China, Vietnam, Italy, and Spain, which heavily contribute to non-cotton exports. Non-cotton apparel globally accounts for a 75% share of global exports.

Figure: Protective equipment for industry.

In this perspective, we need to recognize the potential for market growth through diversification in the apparel sector. Currently, Bangladesh primarily exports low-cost items, but this segment is becoming saturated in mandatory exports. So for the steady growth of RMG industry, we need to diversify our apparel export basket.

 Protective textile – a way to dynamic change for diversification

The future of clothing is getting focused on functionality, driven by advancements in technical textiles. Protective textiles play a crucial role in addressing potential life-threatening hazards, posing a danger to individuals that include heat, fire blasts, impact cuts and chemical splashes and dirt. These advancements make protective textiles more necessary and valuable.

According to an opinion shared by Abdullah Hil Rakib, Managing Director of team group, the global market for technical textiles is projected to reach $208.5 billion by 2024, up from $178.92 billion in 2020. The market is assumed to grow further to $298.1 billion by 2030. Europe currently represents the largest regional market for technical textiles, accounting for an estimated 28.8% share of the global total.

The technical textile market is projected to grow to $224.4 billion by 2025 at an average annual growth rate of 4.2%. Meanwhile, the global PPE market is projected to pass $93 billion by the end of 2025.

Overall market of protective textile is expanding to be utilized for oil and gas refining workers, civil defense, firefighting, and military personnel equipment where ballistic protection is essential. After Covid-19 medical textile has been led to grow. So, we can dive into the protective textile market to increase the benefits from those potential sources where we can increase demand.

The market where we can we grow

According to the US Bureau of Labor Statistics, work-related injuries and illnesses decreased to 2.8 incidents per 100 workers in 2019, down from about 10.9 incidents per 100 workers in 1972. This stats decline about the significance of need the protective equipment for safety concerns. In this perspective, US industry would choose to produce or import protective textile for necessity.

The most common industrial protective equipment are helmets, hardhats, respirators, dusk masks, safety gloves eyewear, ear protection, face shields, goggles, fall arrest systems, safety gloves, welding gloves, welding jackets, footwear and clothing. Bangladesh readymade garments industry can take steps to produce these items to unlock this potential market. The greatest competitive advantage in the technical textile sector is possessing a unique product based on proprietary technology, which comes after extensive investment in R&D and product development strategies.

The top 10 militaries in the world have around 30 million military personnel and at least 4-6 meters of fabrics are required per person per year.

The US Dept of Defense has keen interest in using natural fibers to develop next generation warfighter personal protective equipment. This necessity can be the right scope for diversification of manufacturers. Before starting this particular segment of production, the factories must upgrade technology and ensure right materials procurement.

Ballistic performance things for military protection have many diversified options where any industry can generate revenue by discovering functionality of protection. This area of equipment includes soft body armor, metal sheet, warp beam, protection shield etc. India has already embarked on this path with 13 industries producing ballistic performance shields using Aramid fibers.

Protective textiles compilation

Feasibility study titled “Scaling up the Production of Technical Textiles (TT) including Personal Protective Equipment (PPE) in Bangladesh” was conducted by Deutsche Gesellschaft für Internationale Zusammenarbeit (GIZ), a German-based organization. The study highlighted Bangladesh’s challenges in technical textile exports, attributing them to complexities in raw material sourcing and meeting testing or certification standards.

China and India have already established their presence in the advanced protective textile market. Compared to them, Bangladesh lags behind in adopting technology and ensuring a reliable supply chain for raw materials.

According to the feasibility study, factories are set to upgrade their technology and adopt lean manufacturing practices. Relevant departments will focus on securing suitable raw materials and ensuring high-quality production. Additionally, other departments will familiarize themselves with the requirements for meeting testing and certification standards.

The report highlighted, “Once manufacturers establish a dependable supply of materials, upgrade their operations, and master the required testing and certification procedures, significant opportunities for product diversification emerge.”

In this context, Bangladesh is a newcomer to the technical textile segment. By focusing on pre-protection services, there is an opportunity to enter a market that could become saturated and upgraded in the future global market. Introducing protective textiles could pave the way for product diversification and potentially increase demand.

RMG BANGLADESH NEWS