Home Blog Page 8

ট্রাম্পের শুল্ক বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার পোশাকশিল্পে বড় ধাক্কা: নিউইয়র্ক টাইমস

কোভিড মহামারির পর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা তাদের তৈরি পোশাকশিল্পে ধস নামতে দেয়নি। এ শিল্পকে ভিত্তি করে নিজেদের সমৃদ্ধির প্রত্যাশা জিইয়ে রেখেছিল। পোশাক রপ্তানিতে দেশ দুটির প্রধান বা বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন করে শুল্কারোপের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পোশাক ব্যবসায়ীদের ওপর বড় ধাক্কা লাগতে যাচ্ছে।  

বুধবার (২ এপ্রিল) ট্রাম্পের নতুন শুল্কের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দিতে হবে ৩৭ শতাংশ শুল্ক। আর শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।  এতে দেশ দুটির ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  উভয় দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের শঙ্কা, তারা হয়তো আর বড় উৎপাদনকারী শক্তিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবেন না। তাদের অর্ডারগুলো কম শুল্কযুক্ত ও বড় শিল্প শক্তিসম্পন্ন দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়ে যাবে।

শ্রীলঙ্কার জয়েন্ট অ্যাপারেল অ্যাসোসিয়েশন ফোরামের পরামর্শক তুলি কুরে বলেন, ‘আমাদের তো দেখছি শোকবার্তা লিখতে হবে। ৪৪ শতাংশ কোনো রসিকতা কথা নয়। ’ একই অবস্থা বাংলাদেশেরও। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কার কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদরা। যা বাংলাদেশকে নতুন করে অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করেন তারা।  

তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক কমানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।  তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছাতে পারব। ’

শুধু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কাই নয়; ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপ বিশ্বব্যাপী পোশাক শিল্পের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত দেশগুলোকে বড় দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। ইকুইটি গবেষণা সংস্থা উইলিয়াম ব্লেয়ারের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত তৈরি পোশাকের প্রায় ৮৫ শতাংশ উৎপাদন করে, সেসব দেশের ওপর গড়ে ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, পোশাক প্রস্তুতকারী দেশগুলোকে নিশানা করার মধ্য দিয়ে শুধু ওই সব দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না, এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপরও চাপ তৈরি হবে। উইলিয়াম ব্লেয়ারের মতে, পণ্যের খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদেরই জন্যই সমস্যা হতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ৪০ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে এই খাত, যাদের বেশিরভাগই নারী। এ অঞ্চলে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক নারী কর্মী রয়েছেন, সেগুলোর একটি বাংলাদেশ। এত বেশিসংখ্যক নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ দেশটির জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করেছে। 

গত বছর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতন হয়। এর পর থেকে দেশটি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির জন্য তৈরি পোশাকশিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পণ্যের বিক্রি বাড়তে দেখছিলাম, তখন এই ধরণের সিদ্ধান্তকে একটি বাণিজ্যযুদ্ধ বা একটি শুল্কযুদ্ধ বলা যায়। বিষয়টি এখন একটি নতুন চ্যালেঞ্জ এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ’

এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন অনেক তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে, যারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য সরবরাহের জন্য কাজ করে। কিছু কারখানা (নিজেদের তৈরি পণ্যের) ৮০ শতাংশ, আবার কিছু কারখানা ১০০ ভাগ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। এসব কারখানা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অর্ডারগুলো পাওয়ার জন্য বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এই [শুল্কারোপের] সিদ্ধান্ত এসব ব্যবসাকে বিপদে ফেলবে। ’

শ্রীলঙ্কায় তৈরি পোশাকশিল্প খাতে সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ নিযুক্ত রয়েছেন। যারা নাইকি ও ভিক্টোরিয়া’স সিক্রেটের মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের জন্য পোশাক তৈরি করেন। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় অর্ধেক আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তাদের পোশাকের বড় অংশ রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ধসে পড়েছিল। এরপর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রণোদনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়।

ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপের বিষয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক উপমন্ত্রী অনিল জয়ন্ত ফার্নান্দো বলেন, ‘আগামী ৯ এপ্রিল শুল্ক বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার আগে আমরা আলোচনার মাধ্যমে এটি কমানোর সুযোগ আছে কিনা, তা দেখার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে আমরা যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছি তা বিবেচনা করে। ’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ ২০-৩০% কমার শঙ্কা

তিনটি মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক বৈঠক করতে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে যান বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শোভন ইসলাম। পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোয় ক্রেতারা চীন থেকে মেয়েদের পোশাকের ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তরে ইতিবাচক মনোভাবও দেখায়।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে গতকাল শুক্রবার মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করে শোভন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর আমি আবার সেই ক্রয়াদেশ নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা এখন দেখছি, দেব করছে। তার মানে ব্যবসার সুযোগটি এখন অনিশ্চিত। উল্টো একাধিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, শুল্কের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমবে। সেটি হলে আগামী শরৎ ও শীত মৌসুমে পোশাকের ক্রয়াদেশ ২০–৩০ শতাংশ কমতে পারে।’

শোভন ইসলামসহ কয়েকজন রপ্তানিকারকের সঙ্গে প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের কথা হয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে এখনই বড় আকারে কিছু না–ও হতে পারে। তবে অতিরিক্ত শুল্ক বজায় থাকলে ক্রয়াদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বাড়তি ব্যয়ের হিসাব–নিকাশ শুরু করেছে। ফলে বাংলাদেশ সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা দরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের নিয়ে সরকার কী করছে জানতে বাণিজ্য উপদেষ্টার শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তিনি বলেন, পুরো বিষয়টি বুঝতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আগামীকাল রোববার জরুরি বৈঠক হবে বলেও জানান তিনি।

দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই এমন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। হোয়াইট হাউসের গোলাপবাগানে গত বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তাতে বিশ্বের সব আমদানিকারক দেশের ওপর গড়ে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তার বাইরে বেশ কিছু দেশের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। চীন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

রয়টার্স ও ভিয়েতনাম প্লাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক প্রতিরোধে গত ফেব্রুয়ারিতে বিলাসবহুল গাড়ি, সোলার সেল, রাসায়নিকসহ ৩০টির বেশি মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্ক পর্যালোচনার শুরু করে ভারত। কারণ, তাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হবে। গত মাসে ৫৫ শতাংশ মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে ভারত। অন্যদিকে ভিয়েতনাম গত সপ্তাহে অটোমোবাইল, কৃষিপণ্য, ইথানলসহ ১৬ ধরনের পণ্যে শুল্ক কমিয়েছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ২৬ ও ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে।

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক। আর সেই পোশাক রপ্তানির একক বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছরের বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের ১৮ শতাংশের গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা তাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এই বাজারে যাঁরা জুতা ও চামড়াজাত পণ্য, হোমটেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য ইত্যাদি পণ্য রপ্তানি করেন, তাঁরাও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চার–পাঁচ বছর থাকলে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের দ্রুত আলোচনা শুরু করা দরকার।

বাংলাদেশের শীর্ষ পণ্য রপ্তানির অন্যতম হোমটেক্সটাইল। গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই খাত প্রায় পাঁচ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় এসেছে। নতুন শুল্কের কারণে বাজারটিতে রপ্তানি কমার শঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা।

বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) সাবেক চেয়ারম্যান এম শাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হোমটেক্সটাইলে আমাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। দেশটির ওপর পাল্টা শুল্ক বসেছে ২৯ শতাংশ। আর আমাদের পণ্যে ৩৭ শতাংশ। ফলে পাকিস্তান স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, হোমটেক্সটাইলে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গ্যাস–বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, নগদ সহায়তা কমানো এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে হোঁচট খেল।

US tariff: 2 garment workers’ unions announce protest

Two garment workers’ federations — National Garment Workers Federation (NGWF) and United Garment Workers Federation (AGWF) — have announced a protest programme in response to the United States’ recent decision to increase tariffs on Bangladeshi garment exports by 100%.

The federations will organise a human chain and submit a memorandum to the US Embassy in Dhaka on Wednesday at 11am. 

The protest is aimed at condemning what the unions described as an “unjust and discriminatory” move that will severely impact Bangladesh’s economy, its export earnings, and especially the country’s garment workforce.

The protest follows a new directive issued by US Trade Representative Katherine Tai, who included Bangladesh among three countries facing the heightened tariff rate on apparel exports. The unions argue that this decision unfairly targets Bangladesh, even though the country already faces higher tariffs in the US market compared to many others.

“The US has imposed this 100% tariff hike despite Bangladesh being one of the most compliant garment-exporting countries. This will jeopardise the livelihoods of over 3.5 million female garment workers,” NGWF President Amirul Haque Amin said in a joint statement.

Currently, around 84% of Bangladesh’s total exports are garments, and a significant portion of these go to the US market. Union leaders expressed concern that the new tariff regime will hurt not only trade but also the country’s progress in women’s empowerment, economic development, and poverty reduction.

“The decision contradicts the values of women’s freedom and economic justice that the US itself promotes,” said Kamrun Nahar, president of AGWF.

The federations urged national and international media, rights organizations, and labour activists to stand in solidarity and amplify the voices of Bangladesh’s garment workers.

BGMEA seeks buyers’ support in tariff issues

The country’s apparel manufacturers urged buyers to be patient and support them regarding the United States’ tariff on Bangladeshi export items.

Md Anwar Hossain, administrator of the Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association, made the call in a letter sent to the buyers, brands, and retailers.   

He said that with the continued support of the buyers, Bangladesh is striving to make the industry globally competitive, sustainable, and socially impactful, particularly for the millions of workers, many of whom are women, whose livelihoods depend on this sector.

‘We believe that with solidarity and collaboration, we will be able to address these challenges effectively,’ the letter reads.

The recent announcement of the reciprocal tariff, particularly the 37 per cent tariff on Bangladeshi exports to the United States, has placed the country’s manufacturers in an unexpectedly challenging situation.

As the US remains the single largest export market, accounting for nearly one-fifth of the apparel exports, this sudden measure has caused deep concern among Bangladesh exporters and the buyer community retailing in the United States.

‘We fully recognise that this has created pressure at your end. The uncertainty surrounding cost structures, supply chain planning, and long-term sourcing decisions is significant, and we acknowledge your circumstances with utmost sincerity,’ he added.

He also said that the government of Bangladesh and the private sector are treating this issue with the utmost seriousness and the government has already consulted with key industry stakeholders, and further high-level discussions are expected imminently.

The government has also engaged with US authorities, sincerely intending to align our bilateral trade relationship, he said.

‘We are aware that several brands and retailers have already reached out to their Bangladeshi suppliers, expressing concern, and in some cases, discussing possible measures to mitigate the impact,’ he said adding that transferring the burden downstream to suppliers at this early stage will only exacerbate the stress.

In this regard, he urged the buyers to be patient.

On April 3, the United States imposed a steep 37 per cent reciprocal tariff on Bangladeshi exports, raising concerns about the resultant economic fallout and declining trade competitiveness for Bangladesh.

RMG workers Savar demo ends as Pride Group factories agree to clear dues following layoffs

Workers from two readymade garment factories of Pride Group – HR Textile Mills and Fashion Knit Garments – demonstrated in front of their factories in Savar today (7 April) demanding the immediate reopening of their factories.

They protested by staging a sit-in in front of their factories around 7:30am, said police.

Later, a meeting was held between the representatives of the workers and the factory authorities in the presence of law enforcement officials around 12:30pm, during which an agreement was signed stating that all the dues of the workers will be paid by May.

When asked about the worker unrest, Managing Director (Administration and Compliance) of the factories Monirul Islam told TBS, “We have already reached a solution in the presence of all parties, including army, Industrial Police, representatives of the owners and the workers. The situation is currently normal and an agreement has been signed after reaching a solution through discussions.”

The Business Standard has obtained a copy of the agreement, which says workers’ salaries for March will be paid by 15 April, and the authorities will try their best to pay salaries for the first six days of April.

Besides, other benefits of the workers will be paid by the authorities by 10 May in line with the Bangladesh Labour Law 2006.

The resignation and dismissal of workers will be dealt with as per the Labour Law, and dues in these cases will be cleared within 30 working days, the agreement said.

According to the workers, the garment divisions of the factories had announced layoffs without prior consultation.

Production at the factories was about to start today after the Eid vacation. When the workers arrived at the factories in the morning, they found a notice at the entrances with the layoff announcement, workers said.

The workers then took positions in front of the factories and started to protest.

According to the notices, layoffs have been declared at the two factories till 30 April.

The textile division, administration (Partial) and security division of HR Textile Mills Limited along with the administration (Partial) and security division of Fashion Knit Garments Limited will remain operational, said the notices.

Confirming the matter, Monirul told The Business Standard, “The decision was taken due to gas shortage, financial complexity and reduction of work orders.

“The authorities are working to solve the problem and I hope the two factories will restart their production soon after solving the crises,” Monirul added.

Monirul further said the factory authorities had cleared all dues of the workers before announcing the Eid vacation.

Wishing anonymity, a female worker from Fashion Knit told TBS, “Although the factory was to be opened today, we found a notice which stated that the factory will remain closed till 30 April upon arriving for work in the morning. The authorities did not discuss the matter with us before taking the decision.

“At first, the authorities told us that the workers would get 50% of their salaries during the closure. How will we run our families with this short amount of money? We urge the authorities to either reopen the factory or let us go after clearing our outstanding dues. We will find jobs someplace else,” the female worker said.

A worker of HR Textile Mills Limited said, “Problems are arising regularly as there has not been enough work at the factory for a long time. We urge the owners to either reopen the factory or clear our dues and let us go if they fail to keep the factory operational.”

According to factory sources, the two factories had been facing financial pressure due to Covid-19 pandemic and Russia-Ukraine war.

Currently, the two factories are facing a tough time due a shortage of work orders resulting from financial complexity and not getting enough gas in due time, sources said.

Meanwhile, members of the army and Industrial Police have been deployed in the area to keep the situation normal, police added.

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আজ বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ প্রকাশিত একটি চার্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ কার্যত মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তাই, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ ‘ডিসকাউন্টেড রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ ধার্য করা হয়েছে।

যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে ট্রাম্প প্রশাসন ‘লিবারেশন ডে’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ চালু করেছে।

এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের পণ্য আমদানির ওপর প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে কিছু দেশের জন্য এই শুল্কহার আরও বেশি।

৩৭ শতাংশ ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’র এই ঘোষণা বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশে। কারণ, পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানির ওপর দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল, যার সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকার শিল্পখাতের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই উচ্চ শুল্ক বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দুর্বল করে দিতে পারে।

এই নীতির আলোকে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ২৬ শতাংশ। মার্কিন চার্ট অনুযায়ী, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর ৫২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে।

পাকিস্তানি পণ্য আমদানির ওপরও ২৯ শতাংশ ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের মতে, পাকিস্তান মার্কিন পণ্যে ৫৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

হোয়াইট হাউজ নতুন এই শুল্ক কাঠামোকে ব্যাখ্যা করছে, দীর্ঘদিনের একতরফা বাণিজ্য সম্পর্কের সংশোধনমূলক ব্যবস্থা হিসেবে। তবে অর্থনীতিবিদ ও বাণিজ্য সংস্থাগুলোর একাংশ সতর্ক করে বলছে, এই নীতি প্রতিশোধমূলক শুল্কের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং এতে করে মার্কিন ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের ব্যয় বেড়ে যাবে।

৩৭ শতাংশ ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নিয়ে বাংলাদেশ এই নীতির আওতায় সবচেয়ে বেশি শাস্তিপ্রাপ্ত দেশগুলোর মধ্যে পড়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের উপরে রয়েছে কম্বোডিয়া (৪৯ শতাংশ শুল্ক) ও শ্রীলঙ্কা (৪৪ শতাংশ শুল্ক)।

এ ছাড়া, মার্কিন বাণিজ্য নীতির দীর্ঘদিনের লক্ষ্যবস্তু চীন ৩৪ শতাংশ ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’র সম্মুখীন হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য এই হার ২০ শতাংশ এবং বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

ঈদের ছুটি শেষে উৎপাদনে ফিরেছে ৪১.৪৯ শতাংশ পোশাক কারখানা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত পোশাক কারখানাগুলো।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত পোশাক কারখানাগুলো। ঈদের ছুটি শেষে কিছু কারখানা খুললেও অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ২ হাজার ১০৪টি সক্রিয় পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত উৎপাদনে ফিরেছে ৮৭৩টি, যা মোট কারখানার ৪১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। বাকি ১ হাজার ২৩১টি অর্থাৎ ৫৮ দশমিক ৫১ শতাংশ পোশাক কারখানা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

বিজিএমইএর দেয়া অঞ্চলভিত্তিক খোলা-বন্ধের চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৮৫৪টি পোশাক কারখানার মধ্যে মাত্র ৩২৮টি খোলা হয়েছে, বন্ধ রয়েছে ৫২৬টি। অর্থাৎ মাত্র ৩৮ দশমিক ৪১ শতাংশ কারখানা উৎপাদনে ফিরেছে।

ঢাকার অদূরে অবস্থিত সাভার, আশুলিয়া ও জিরানী শিল্পাঞ্চলে মোট ৪০৩টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ২১৫টি উৎপাদনে ফিরেছে, যা মোট কারখানার ৫৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বাকি ১৮৮টি বন্ধ রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে মোট ১৮৮টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ৯৮টি চালু করা হয়েছে, যা মোট কারখানার ৫২ দশমিক ১৩ শতাংশ। বন্ধ রয়েছে ৯০টি পোশাক কারখানা।

ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত ৩২১টি পোশাক কারখানার মধ্যে ১০৭টি চালু করা হয়েছে, বাকিগুলো ছুটিতে রয়েছে। খোলা কারখানার হার ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে রয়েছে মোট ৩৩৮টি পোশাক কারখানা। এর মধ্যে ১২৫টি চালু হয়েছে, যা মোট কারখানার ৩৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। বন্ধ রয়েছে ২১৩টি কারখানা।

অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন প্রদানের অগ্রগতি নিয়ে বিজিএমইএর দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২ হাজার ৯৯টি পোশাক কারখানা ফেব্রুয়ারির পূর্ণ বেতন পরিশোধ করেছে, যা মোট কারখানার ৯৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বাকি পাঁচটি অর্থাৎ শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ কারখানা এখনো শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি।

এছাড়া ২ হাজার ৭৬টি কারখানা মার্চ মাসের আংশিক বেতন (১৫ বা ৩০ দিন) পরিশোধ করেছে, যা মোট কারখানার ৯৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। বাকি ২৮টি অর্থাৎ ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ কারখানা এখনো শ্রমিকদের বেতন দেয়নি। যেসব কারখানা এখনো ফেব্রুয়ারির বেতন দেয়নি, তাদের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে আটটি ও চট্টগ্রামে পাঁচটি।

বিজিএমইএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটি শেষে ধাপে ধাপে সব পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হবে।এজন্য সব কারখানাকে শতভাগ বেতন প্রদান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক কমাতে হবে

দেশের দুই পোশাক রপ্তানিকারকের মতে, প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশের উচিত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক তুলে নেওয়া অথবা তা উল্লেখযোগ্য হারে কমানো।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্মাণ সামগ্রী, কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে।

আজ বৃহস্পতিবার শীর্ষ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শুল্ক শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক কমানো সম্ভব হবে।’

বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তার মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক কাঠামোর ফলে ভারত ও পাকিস্তান থেকে পোশাক রপ্তানি বাংলাদেশের তুলনায় সস্তা হতে পারে। কারণ সেসব দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছে।

‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগীদের তুলনায় উচ্চ রপ্তানি শুল্ক ও চীন থেকে শিল্প স্থানান্তর নিয়ে অনিশ্চয়তা বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। রাজস্বের জন্য আমদানি করের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা এখন শুল্ক শিথিল করার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

বাংলাদেশ যখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসার বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। মার্কিন শুল্ক বাংলাদেশের পোশাক খাতের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা চাপে পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশই আক্রান্ত হচ্ছে না। প্রায় ৬০ দেশে এর প্রভাব পড়বে।’

‘তবে বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের ওপরও শুল্ক বেড়েছে। যেমন—চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ ও ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক বসবে।’

‘নিঃসন্দেহে, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বাড়বে। ফলে মূল্যস্ফীতিও বেড়ে যাবে।

দক্ষিণ আমেরিকার হন্ডুরাসের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়তে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

‘শুল্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত, যাতে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে কার্যকরভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারি। আমাদের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধের নির্দেশ

দেশীয় সুতাশিল্পের সুরক্ষায় স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাকসুদা খন্দকারের সই করা এক চিঠির মাধ্যমে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রদত্ত তথ্য, অংশীজনের মতামত গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় অনুসন্ধানে সাব্যস্ত হয়েছে, বাংলাদেশে সব ধরনের সুতা আমদানিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত মূল্য অপেক্ষা স্থলবন্দর থেকে সুতা আমদানিতে উল্লেখযোগ্য হারে অবমূল্যায়ন করা হয়।
 
দেশীয় সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এই অবমূল্যায়িত মূল্যের সঙ্গে প্রতিযোগী হতে পারছে না। চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশে উৎপাদিত সুতার গড় মূল্য প্রায় সমান। অথচ স্থলবন্দর ব্যবহার করে আমদানি করা সুতার মূল্য অনেক কম।

ভারতের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করে দ্রুত শিপমেন্ট করার কারণে দেশের অভ্যন্তরে কম দামে প্রবেশের ফলে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা আমদানি করা সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্প খাত অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়ছে।
 
এমন অবস্থায় সব স্থলবন্দরের মাধ্যমে সুতা আমদানি বন্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি অথবা বিদ্যমান এসআরওতে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংশোধনী জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।

এর আগে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে এক চিঠিতে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানায় সুতাকল ও বস্ত্রকলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের সই করা ওই চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকেও (এনবিআর) দেওয়া হয়।
 
সম্প্রতি প্রাক্-বাজেট আলোচনায় সুতা আমদানিতে অধিক হারে শুল্ক-কর বসানো এবং অবৈধভাবে সুতা আমদানি বন্ধের সুপারিশ করে সংগঠনটি। বিটিএমএর (বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার-সংকট, অস্বাভাবিক সুদহার ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের শর্তাবলি পূরণের অজুহাতে রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনার অস্বাভাবিক হ্রাস এবং টাকার অবমূল্যায়নসহ নানা কারণে টেক্সটাইল খাত সমস্যায় পড়েছে। আর ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ডাম্পিং মূল্যে সুতা আমদানি টেক্সটাইল মিলগুলোকে নতুন এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে।’

এনবিআরে দেওয়া চিঠিতে বিটিএমএ সভাপতি উল্লেখ করেন, বিগত সরকার নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির অনুমতি দেয়। কিন্তু এসব স্থলবন্দরে সুতার মান যাচাই করে শুল্কায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বা কারিগরি সক্ষমতা নেই। শুধু আংশিক আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট শিল্পের পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় সুতাকলগুলো।

চিঠিতে আরও বলা হয়, স্থলবন্দর ব্যবহার করে সুতা আমদানি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের টেক্সটাইল শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এতে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। ফলে বিদেশি সুতার ওপর আমদানি-নির্ভরশীলতা বেড়ে যাবে, আমদানি ব্যয় বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে বেকারত্ব।

বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধাসহ অন্য স্থলবন্দর বা কাস্টম হাউসগুলোয় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, সুতার কাউন্ট পরিমাপক যন্ত্র, দক্ষ জনবলের অভাব এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য অনেকাংশে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হচ্ছে না। ফলে সুতার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল আমদানির অনুমতিসহ আংশিক শিপমেন্টের অনুমতি বিদ্যমান থাকায় দেশীয় টেক্সটাইল, বিশেষ করে স্পিনিং মিলগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত ৩০ কাউন্ট সুতার প্রতি কেজি উৎপাদন খরচ এখন ৩ দশমিক ৪০ ডলার। একই সুতা ভারত থেকে আমদানি করলে ২ ডলার ৯০ সেন্ট দাম পড়ছে; যে কারণে স্থানীয় মিল থেকে কেনায় আগ্রহী হচ্ছেন না তাঁরা।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে বিপাকে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা

আগামী ৯ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যকর হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আদেশ। তবে অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকরের পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা ঠিক কী পরিমাণ শুল্ক আরোপের মুখোমুখি হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা এখনো জানেন না, নতুন শুল্ক হার বর্তমান শুল্কের সঙ্গে যোগ করা হবে নাকি প্রতিস্থাপন করা হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তবে ওই আদেশে পণ্যভিত্তিক শুল্ক হারের তালিকা বা কাস্টমস গাইডেন্স দেওয়া হয়নি। এতে বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি খাতে এক ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান শুল্কের বাইরে যদি ৩৭ শতাংশ শুল্ক যোগ করা হয়, তাহলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশের পোশাকের ওপর কার্যকর শুল্ক বর্তমান গড় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশে দাঁড়াবে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে ১০০ ডলারের টি-শার্ট বা জিন্সের চালানে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে আমদানি শুল্ক বাবদ প্রায় ৪৯ ডলার দিতে হবে, যা বর্তমানে মাত্র ১১ দশমিক ৫৬ ডলার।

দেশের অন্যতম বৃহৎ ডেনিম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ ট্রাম্পের আদেশে পরিষ্কারভাবে এটিকে ‘অতিরিক্ত’ শুল্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ৯ এপ্রিলের আগে আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না।’

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আদেশের দ্বারা নির্ধারিত শুল্কের হারগুলো প্রযোজ্য অন্য কোনো শুল্ক, ফি, কর বা চার্জের অতিরিক্ত। তবে তারা দেশ বা পণ্য অনুসারে আর কিছু জানায়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো পরিষ্কার নই। এটি ৩৭ শতাংশ হতে পারে, কিংবা যদি বর্তমান মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) হারের সঙ্গে যোগ করা হয় তাহলে ৫২ শতাংশেরও বেশি হতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য ইতোমধ্যে অনেক পণ্যে ১৫ শতাংশের ওপরে আছে।’

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির জানান, তার প্রতিষ্ঠান এখনো ক্রেতাদের কাছ থেকে হালনাগাদ ট্যারিফের তথ্য পায়নি।

‘তবে বিভিন্ন সূত্র পরামর্শ দিয়েছে, বর্তমান হারকে প্রতিস্থাপন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে, অথবা বর্তমান হারের সঙ্গে যোগ হতে পারে।’

উচ্চ হারের সংকেত দিয়েছে ব্র্যান্ড

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির প্রশাসক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি পোশাক ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুন শুল্ক ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হতে পারে।’

‘সেই ধারণার ওপর ভিত্তি করেই আমরা কৌশল প্রণয়ন করছি। আর নির্বাহী আদেশে স্পষ্টভাবে এটাকে বাড়তি শুল্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শুল্ক সমন্বয় হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এর মূলে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে বৃহত্তর উদ্বেগ।

তার ভাষ্য, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বাণিজ্য অর্থনীতি, যা আমদানির ওপর নির্ভর করে। এই পদক্ষেপ শুধু শুল্কের জন্য নয়, বরং তারা বাণিজ্য প্রবাহকে ওয়াশিংটনের অনুকূলে নিতে চায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিটি অন্যান্য শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বৈশ্বিক সোর্সিং কীভাবে পরিবর্তিত হতে পারে তার একটি ধারণা দিয়েছেন।

চীনের পোশাকের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যেখানে ভিয়েতনামের শুল্ক ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। ভারতের ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কম্বোডিয়ায় ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বাজারের ৯ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। এছাড়া বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ২৪ শতাংশই হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ২০২৪ সালে দেশটিতে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এতে চীন ও ভিয়েতনামের পরে তৃতীয় পোশাক সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এ খাতে ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন এবং বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশেরও বেশি তৈরি পোশাক।

রপ্তানিকারক এবং নীতিনির্ধারকরা একমত যে, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়।

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো অবস্থান রয়েছে। কিন্তু অন্য দেশগুলো যদি শুল্ক হার কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরা দ্রুত বাজার হারাব।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং রপ্তানিকারকরা অবিলম্বে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর বলেন, ‘অন্যান্য দেশ এরই মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে। আমাদেরও একই কাজ করতে হবে এবং তা দ্রুত করতে হবে। এখনও একটি কার্যকর ফলাফল খুঁজে বের করার সুযোগ আছে।’

RMG BANGLADESH NEWS