তৈরি পোশাক খাতের ক্রেতাদের বাংলাদেশ ভ্রমণ নিরাপদ করতে তাদের সঙ্গে গানম্যানসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এবং এ খাতের উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যে সরকার ও কারখানা মালিক, বায়িং হাউসগুলোর সমিতিসহ বিভিন্ন পক্ষ থেকে এ বার্তা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছেও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) ই-মেইল করে সরকারের এ উদ্যোগের কথা জানিয়েছে বৈশ্বিক ক্রেতাদের। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএও পোশাক খাতের চলমান সংস্কারের সঙ্গে যুক্ত অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও বায়ার্স ফোরামের মাধ্যমে ক্রেতাদের একই ধরনের বার্তা দিয়েছে। অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স অবশ্য ইতিমধ্যে জানিয়েছে যে, তাদের সদস্য ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেওয়া অব্যাহত রাখবে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও ক্রেতাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথা বলেছেন।
বিজিবিএর মহাসচিব আমিনুল ইসলামের পাঠানো ই-মেইলে বলা হয়েছে, ‘১ জুলাই গুলশান ট্র্যাজেডির পর বাংলাদেশ সরকার পোশাক ক্রেতাসহ সকল বিদেশির নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তৈরি পোশাক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল ভ্রমণকারী বাংলাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা সুবিধা পাবেন।’ এ জন্য সংগঠনটি ক্রেতা বা তাদের প্রতিনিধিদের ঢাকা ভ্রমণের বিস্তারিত সূচি আগে থেকে পাঠানোর অনুরোধ করেছে ওই চিঠিতে। আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গুলশান ট্র্যাজেডির পর সরকার সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এর মধ্যে পোশাক খাতের ক্রেতাদের নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিল্পপুলিশ ও ডিএমপির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দু’পক্ষই পোশাক খাতের ক্রেতাদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো ক্রেতা প্রতিনিধি ঢাকায় এলে তাকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল এবং হোটেল থেকে কারখানা পর্যন্ত যাতায়াত নিরাপদ করতে ডিএমপি ও শিল্পপুলিশ সহায়তা দেবে। এ জন্য বিজিবিএর পক্ষ থেকে ক্রেতাদের ভ্রমণের সিডিউল চাওয়া হয়েছে। যাতে কে কখন আসবেন তা আগে থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করা যায়। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, পোশাক খাতের ক্রেতাসহ সকল বিদেশি নাগরিকের বিশেষ নিরাপত্তার জন্য বিজিএমইএ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। কোনো ক্রেতা প্রয়োজনে গানম্যান চাইলেও সে ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া বিমানবন্দর থেকে হোটেলে আসা বা কারখানা পরিদর্শনে যাওয়ার জন্য বিজিএমইএকে কোনো ক্রেতা জানালে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। ১ জুলাই রাজধানী ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশসহ ২২ জন নিহত হন। যার মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক। এর পরের সপ্তাহে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে একই ধরনের হামলা হয়। এসব ঘটনার পরে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্ক করে। অনেক বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। আবার অনেকে বাংলাদেশে অফিস করা সাময়িক বন্ধ রেখেছেন। পোশাক খাতের ক্রেতাদের কেউ কেউ আসছেন না বলে উদ্যোক্তারা বলছেন।