গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ১৯ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৯২ টন। আগের অর্থবছরে (২০১৪-১৫) দেশে এখান দিয়ে মোট পণ্য আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৪০ হাজার ৮০৩ টন। অর্থাৎ গত অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৩ টন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৫ সালের দিকে জানুয়ারি, ফেরুয়ারি ও মার্চে দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায়, তার ধারাবাহিকতায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছিল কম। এছাড়া কাস্টমসে নানা হয়রানির কারণেও ওই সময়ে বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি কমতে শুরু করে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়ানো, প্রতিটি কেমিক্যাল পণ্য টেস্টে পাঠানো, দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা হয়রানির কারণে এখান থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন আমদানিকারকরা।
বেনাপোল বন্দরের উপকমিশনার মারুফুর রহমান জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৮৩ হাজার ২৯৮ টন। এর পর আগস্টে ৯৮ হাজার ২৫২ টন, সেপ্টেম্বরে ৭১ হাজার ৮৭০, অক্টোবরে ৭৫ হাজার ৪৩৪, নভেম্বরে ৮১ হাজার ৩৮৯, ডিসেম্বরে ৯০ হাজার ৬০৭ টন পণ্য আমদানি করা হয়। এর পর জানুয়ারিতে ৯১ হাজার ৩৬৮ টন পণ্য আমদানির মাধ্যমে ২০১৬ সাল শুরু করে বেনাপোল স্থলবন্দর। পরবর্তীতে ফেরুয়ারিতে ৬৫ হাজার টন, মার্চে ৮৫ হাজার, এপ্রিলে ৮০ হাজার ৭২৮, মে মাসে ৯৮ হাজার ও জুনে ৯৮ হাজার ৫০০ টন পণ্য আমদানি করা হয়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, গত অর্থবছরের শুরুতে লাগাতার অবরোধ আর দফায় দফায় হরতালের কারণে বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি কমে গিয়েছিল। এ অবস্থা কেটে যাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা আবার নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানি শুরু করেছেন। বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ খান জানান, রাজনৈতিক অচলাবস্থা কেটে যাওয়ার পর দেশের বাজারে পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা আমদানি বাড়িয়েছেন। অর্থবছরের শেষ দুই মাসে বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এখানকার আমদানি কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরাও কাজ করছি।
এ ব্যাপারে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মাঝামাঝি দেশে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল। এজন্য দেশের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসার পর দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোয় আমদানি পণ্যের চাহিদা বাড়ে। যে কারণে ওই সময়ের পর থেকেই বেনাপোল স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে গতি ফিরে আসে।