Home বাংলা নিউজ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক: এমসিসিআই

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক: এমসিসিআই

এমসিসিআই

সব শ্রেণির গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছে গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলো। তবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করার এ প্রস্তাবকে অসংগতিপূর্ণ ও অযৌক্তিক বলে মনে করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই)। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ালে তা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এমসিসিআই। সে জন্য মেট্রোপলিটন চেম্বার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবটি বিইআরসির মাধ্যমে পুনর্বিবেচনা কিংবা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছে।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিষয়ে গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে লিখিত আকারে এই বক্তব্য পাঠিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার। এতে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত কমে আসছে। তাই এই সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা ছাড়া ভবিষ্যতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিকল্প জ্বালানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। গৃহস্থালিসহ সব শ্রেণির ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানির বণ্টন ও মূল্যহার কীভাবে সুষম ও স্বল্প হতে পারে সরকারকে তা খুঁজে বের করা দরকার। এমসিসিআই মনে করে, শুধু মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে গ্যাস খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু সমস্যা যেমন গ্যাস ব্যবহারে মিটারে গরমিল, অবৈধ সংযোগ, অসাধু উপায়ে বিল কমিয়ে দেওয়ার মতো বিষয়গুলো রোধ করা গেলে মাত্রাতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি না করেও পরিস্থিতির সুরাহা করা সম্ভব। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিইআরসি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে। তখন বিভিন্ন শ্রেণিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়েছিল। এক বছর যেতে না যেতেই কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করছে। ফলে এই প্রস্তাব বিইআরসির আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে এমসিসিআই।

এবার বিইআরসিতে গৃহস্থালি মিটারযুক্ত গ্রাহক শ্রেণির জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা, দুই বার্নারের চুলার মাসিক বিল ৬৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ক্যাপটিভ জেনারেটরের জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৮ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বৃদ্ধি করে ১৯ টাকা ২৬ পয়সা, শিল্পের জন্য প্রতি ঘনমিটার ৬ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে ১০ দশমিক ৯৫ টাকা এবং বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ৯ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে বৃদ্ধি করে ১৯ দশমিক ৫০ পয়সা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সিএনজি স্টেশন, সার কারখানা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্ল্যান্টে ব্যবহৃত গ্যাসের দামও বৃদ্ধির প্রস্তাব রয়েছে। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বলেছে, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব গৃহীত হলে পরিবহন খরচ, বাণিজ্যিক উৎপাদন ও নিত্যপণ্যের খরচ বেড়ে যাবে। এমন অপরিকল্পিত গ্যাসের দাম বৃদ্ধি দেশের তৈরি পোশাকশিল্পসহ অন্য অনেক খাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতাকে ব্যাহত করবে। এ ছাড়া গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি ২০২১ সালকে সামনে রেখে দেশের পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করাকেও বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করে এমসিসিআই।