পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ আরও কয়েকটি খাতের অবকাঠামো নির্মাণে চীনকে বড় অঙ্কের অর্থায়নের প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ। বিশেষ করে দেশটির বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রস্তাবিত দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়তা চাওয়া হবে। উভয় দেশের মধ্যে ১৪তম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) সভায় এ দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ। আজ সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে এ বৈঠক। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফর করার কথা রয়েছে। আজকের বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরকালে ওই সব বিষয়ে চুক্তি হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানান।
বৈঠকে অংশ নিতে চীনের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী গোয়াও ইয়ানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনে কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন। এর আগে ২০১৪ সালের ৪ জুন চীনের কুনমিং শহরে ১৩তম জেইসি সভা হয়েছিল। ইআরডি এশিয়া উইংয়ের প্রধান আসিফ-উজ-জামান সমকালকে বলেন, জেইসি সভায় চীনা বিনিয়োগের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর বাইরে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
বৈঠক নিয়ে ইআরডির প্রস্তুত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ, দেশটির অর্থায়নে প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ দরপত্র প্রক্রিয়া এবং বায়ার্স ক্রেডিটসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। দেশটির কাছে কোটা ও শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের দাবি জানাবে বাংলোদেশ। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি, রফতানি এবং আমদানি আরও সহজ করার বিষয়ে অলোচনা হবে। ইআরডির এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পসহ অবকাঠামো খাতের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ প্রস্তাব দেওয়া হবে।
ইআরডি সূত্র জানায়, তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারের ৪০ শতাংশের বেশি চীনের দখলে। তবে শ্রমের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার উদ্যোক্তারা সুবিধাজনক বিনিয়োগের স্থান সন্ধান করছেন। ফলে এ খাতে দেশটির বিনিয়োগ আসার ব্যাপক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি আরও কমিয়ে আনার চেষ্টাও চলছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে যা ছিল ৬৮০ কোটি ডলার। চীনের প্রেসিডেন্ট তিন দিনের সফরে ঢাকা আসছেন আগামী ১০ অক্টোবর। তার সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকা-বেইজিং দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে আরও গতি পাবে।