Home বাংলা নিউজ চট্টগ্রাম কাস্টমসের অর্ধেক রাজস্ব আসে ৫০ প্রতিষ্ঠান থেকে

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অর্ধেক রাজস্ব আসে ৫০ প্রতিষ্ঠান থেকে

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অর্ধেক রাজস্ব আসে ৫০ প্রতিষ্ঠান থেকে

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ছয় হাজার ৯৭১টি প্রতিষ্ঠান গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে দিয়েছে ৩১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব। তবে মাত্র ৫০ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই এসেছে রাজস্বের প্রায় অর্ধেক। ৭১৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে তালিকার শীর্ষে আছে আবুল খায়ের গ্রুপ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তরা মোটরস দিয়েছে ৪৯৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আর তৃতীয় স্থানে থাকা গ্রামীণফোন রাজস্ব দিয়েছে ৩৫৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সততা ও স্বচ্ছতা বিবেচনায় এনে শীর্ষ ১০ রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক কাস্টম দিবসে পুরস্কৃত করবে এনবিআর।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার এহতেশামুল হক সমকালকে বলেন, ‘সর্বশেষ অর্থবছরে ছয় হাজার ৯৭১টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৩১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছি আমরা। শুল্কায়ন কার্যক্রম সহজ করা, খালাস-উত্তর নিরীক্ষার মাধ্যমে ফাঁকিকৃত অর্থ আদায় ও বকেয়া আদায়ে গুরুত্ব দেওয়ায় রাজস্বের পরিমাণ বেড়েছে।’ তিনি জানান, নিয়মিত রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা ও স্বচ্ছতা বিবেচনায় এনে আন্তর্জাতিক কাস্টম দিবসে ১০ ব্যবসায়ীকে সম্মাননা দেবে এনবিআর। এ ছাড়া শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায়ও প্রয়োজনে অগ্রাধিকার পাবেন তারা।

জানা গেছে, গত অর্থবছরে এককভাবে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসার শুল্কায়ন করে এ কৃতিত্ব অর্জন করে তারা। ছয় হাজার ৯৭১টি প্রতিষ্ঠানের আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য শুল্কায়ন করে এ রাজস্ব আহরণ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। ভোজ্য তেল, জ্বালানি তেল, খাদ্যদ্রব্য, মেশিনারিজ, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি, রেফ্রিজারেটর এবং লোহা ও ইস্পাত জাতীয় পণ্য থেকেই এসেছে রাজস্বের বেশিরভাগ। ভোজ্য তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব দিয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। চিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব দিয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। গুঁড়োদুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব দিয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া ছোলা, মসুর ডাল, আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙুরসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানিকারকরা রাজস্ব দিয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পদ্মা পেট্রোলিয়াম অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম অয়েল, যমুনা পেট্রোলিয়াম অয়েল ও ইস্টার্ন রিফাইনারি রাজস্ব দিয়েছে চার হাজার ২১০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে এককভাবে শত কোটি টাকার বেশি রাজস্ব দিয়েছে ৩১টি প্রতিষ্ঠান। আবুল খায়ের গ্রুপ, উত্তরা মোটরস ও গ্রামীণফোনের পরে ২৯৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে শীর্ষ তালিকার চতুর্থ স্থানে আছে মেনুকা মোটরস লিমিটেড। এ ছাড়া মেঘনা গ্রুপের ইউনাইটেড এডিবল অয়েল ২৬০ কোটি ২৭ লাখ ও তানভীর অয়েল লিমিটেড ২৭০ কোটি ৪৮ লাখ, সিটি গ্রুপের ফারজানা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ১৪৬ কোটি ৪৫ লাখ ও ভট অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ১০৪ কোটি ৮৩ লাখ, কেএসআরএম ২২৬ কোটি ২ লাখ, আজিয়াটা লিমিটেডের রবি ২২২ কোটি ৬৬ লাখ, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন ২১৯ কোটি ৭ লাখ, টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড ২১৪ কোটি ৫৪ লাখ, টিকে গ্রুপের শবনম ভেজিটেবল অয়েল ২১৪ কোটি ২০ লাখ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ ১৮৮ কোটি ১২ লাখ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ১৮৪ কোটি ২২ লাখ, সিঙ্গার বাংলাদেশ ১৭৯ কোটি ৪৮ লাখ, আরএফএল প্লাস্টিক ১৬২ কোটি ৬২ লাখ, এমআই সিমেন্ট কারখানা ১৪৪ কোটি ৬২ লাখ, প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ, বিএসআরএম ১২১ কোটি ৬৭ লাখ, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড ১২০ কোটি ৮৪ লাখ, ওয়ালটন ১১৯ কোটি ৫৯ লাখ, এমজেএল বাংলাদেশ ১১৯ কোটি ৩২ লাখ ও সেভেন রিং বাংলাদেশ সিমেন্ট কোম্পানি ১০৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে আছে শীর্ষ তালিকায়।