Home বাংলা নিউজ আর্থিক খাত নিয়ে অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা: সিপিডি

আর্থিক খাত নিয়ে অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা: সিপিডি

আর্থিক খাত নিয়ে অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা: সিপিডি

আর্থিক খাতের সেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট দেশের ব্যবসায়ীরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ব্যাংক থেকে ঠিকমতো সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ছে। এর পাশাপাশি অবকাঠামোয় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। সুশাসনের অভাব এখনও বড় সমস্যা। আর নিরাপত্তা সমস্যা দিন দিন বড় হচ্ছে। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় বেশিরভাগ ব্যবসায়ী চলতি ২০১৬ সালকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আশাবাদী।

 

সিপিডি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষে ‘গ্গ্নোবাল কমপিটিটিভনেস রিপোর্ট-২০১৬-১৭’ এর জন্য এ জরিপ করে। গতকাল বুধবার গ্গ্নোবাল কমপিটিটিভনেস রিপোর্টের পাশাপাশি এই সমীক্ষার ফল প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে সিপিডি। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এই প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

 

অবকাঠামো, প্রযুক্তি, আর্থিক পরিবেশ, বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা, ব্যবসা পরিচালনা ও উদ্ভাবন, নিরাপত্তা, সুশাসন, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের মতামত চাওয়া হয় জরিপে। দেশের ৮৯টি বড় ও মাঝারি মানের শিল্প প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।

জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের ৬৫ ভাগ মনে করেন, আর্থিক সেবার ব্যয় ব্যবসাকে বাধাগ্রস্ত করছে। আর্থিক খাতে পণ্য ও সেবা সীমিত। ব্যবসা শুরুর জন্য পুঁজি পাওয়া বেশ কষ্টকর। পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করার বিষয়টি আগের মতো স্বাভাবিক নেই। ৭৪ ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন পুঁজিবাজারের ইনসাইডার ট্রেডাররা সুবিধা পান। বাজারের দুর্বল পর্যবেক্ষণ এখনও উদ্বেগের কারণ। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যে ঝুঁকিগুলো ব্যবসায়ীরা দেখছেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জ্বালানি মূল্য। এত সমস্যার মধ্যেও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ২০১৬ সাল বিনিয়োগ সহায়ক বছর হবে। কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই, মূল্যস্ফীতি সহনশীলতার মধ্যে রয়েছে এবং অবকাঠামো খাতে কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ব্যবসায়ীদের মতে বিদ্যুৎ খাত ছাড়া অবকাঠামো খাতে বিশেষ উন্নতি হয়নি। তারা বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে এ খাতের সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ চান তারা। আইসিটি খাতকেও ইতিবাচকভাবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন আইসিটি খাতে দক্ষতা বেড়েছে। তবে সড়ক, রেল, আকাশ ও নদীপথ নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের অন্ত নেই। এসব বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তারা। ব্যবসা ও বিনিয়োগে গতি বাড়াতে বেশ কিছু খাতে সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, কর সম্পর্কিত নীতি. ভ্যাট আইন, ভূমি সংস্কার ও কোম্পানি আইনে সংস্কার দরকার।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা মনে করেন অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতায় বাজার উন্নত হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে নতুন প্রতিযোগী আসছে বাজারে। তবে প্রতিযোগিতা বাড়লেও বড় কয়েকটি গ্রুপের হাতে বাজার দখলে রয়েছে। এজন্য প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে সিপিডি।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের তুলনায় অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস ও বেআইনি কর্মকাণ্ড ব্যবসাকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জরিপে অংশ নেওয়া ৬৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের সেবা নির্ভরযোগ্য নয়। যে কারণে ব্যবসায় নিরাপত্তা ঝুঁকি অন্যতম উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুশাসন প্রশ্নে অধিকাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, বাংলাদেশের দুর্বলতার অন্যতম বিষয় সুশাসনে ঘাটতি।