রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এই সাত মাস সময়ে ৬৯ কোটি ৩৮ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি হয়েছে ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে। এ হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ আয় বেশি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে। গত অর্থ বছরের একই সময়ে চামড়া ও চামড়াপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৬৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ খাতে সাত মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ। সরকারি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবি সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে সব ধরনের পণ্য ও সেবা রপ্তানিতে মোট ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সবচেয়ে বড় খাত পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ অবস্থায় চামড়া খাতে ১২ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধিকে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
ইপিবি সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছর চামড়া খাতে ১১৬ কোটি ৯ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। চামড়াজাত পণ্য থেকে ৩৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য রয়েছে। চামড়ার পাদুকা থেকে আয়ের লক্ষ্য থাকছে ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। এর মধ্যে তিন উপখাতে সাত মাসে এসেছে ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
উদ্যোক্তারা বলছেন, চামড়া শিল্প এখন দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শিল্প খাত। রপ্তানিতে ভবিষ্যতে বড় আয়ের উত্স হবে চামড়াজাত পণ্য রফতানি। বর্তমানে তৈরি পোশাকের পরই দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। কাঁচামাল হিসেবে দেশি চামড়ার ব্যবহার হওয়ায় সর্বোচ্চ মূল্যসংযোজন হয় এ খাতে। ফলে এ খাতে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর।
ইপিবি সূত্র জানায়, গত অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার। এবার চামড়া রপ্তানিতে আয় দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলারে। সাত মাসে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ সময়ে চামড়াপণ্য রপ্তানিতে আয় দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৩২ লাখ ডলারে। আগের বছরের একই সময়ে এ খাতে আয় হয়েছিল ২০ কোটি ৪১ লাখ ডলার। সাত মাসে ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে চামড়া থেকে তৈরি পণ্য রপ্তানিতে। একই সময়ে ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে চামড়ার পাদুকা রপ্তানিতে। সাত মাসে এ খাতে আয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলারে। আগের বছরের একই সময়ে পাদুকা রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। রপ্তানিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা এবং মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক মুক্ত সুবিধা ভোগ করছে এ খাত। তবে চামড়া শিল্পের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো ২ শতাংশের কম। এ খাতে আরো সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টর। এত বড় বাজার ধরতে নিজস্ব ব্যান্ডের উন্নতির পাশাপাশি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।