রাজধানীতে শেষ হল দুই দিনব্যাপী ৭ম ডেনিম অ্যান্ড জিন্স প্রদর্শনী। শেষদিনে দেশী-বিদেশী দর্শনার্থী বিশেষ করে তরুণ-তরুণী, ফ্যাশন ডিজাইনার ও বিদেশী ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর ছিল প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ।
প্রদর্শনীতে আসা ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পোশাক খাতে নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে জিন্স বা ডেনিম পণ্য। ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। বিদেশী ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে ডেনিমে। ডেনিমের উন্নয়নে তাই আলাপ-আলোচনা, প্রদর্শনী ক্রমেই বাড়ছে। ডেনিম পণ্য দেশের রফতানি আয়কে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেবে।
দেশের ডেনিমপণ্য বিশ্ববাজারের চাহিদা পূরণে ব্যাপক অবদান রাখছে বলে মনে করেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। প্রদর্শনী ঘুরে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরুষের ব্যবহৃত জিন্স রফতানিতে তিন বছর ধরে ইউরোপের দেশগুলোর বাজারে চীন থেকেও এগিয়ে বাংলাদেশ। এমনকি বিশ্বে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেনিম বা জিন্স উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজনকে অপরিহার্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আয়োজকরা জানান, এবারের প্রদর্শনীর বিষয়বস্তু ছিল ‘ডেনিম ম্যাসআপ’ যা অ্যামব্রয়ডারি, এমবেলিশমেন্টস, সিকুয়েন্স, পেইন্টসহ ডেনিমে নানা সংযোজন অর্থাৎ সর্বশেষ ট্রেন্ড এবং ফ্যাশনকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করছে। গুচি, ডিঅ্যান্ডজি, টমি হিলফিগার, র্যাঙলারসহ অনেক ব্র্যান্ড এ ট্রেন্ডকে গ্রহণ করছে। জারা এবং এইচঅ্যান্ডএমের মতো রিটেইলাররা ২০১৭ সালের জন্য ‘ডেনিম ম্যাসআপ’-কে ডেনিমের আকর্ষণীয় ট্রেন্ড মনে করছে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠান সিদ্দিক সন্সের মার্কেটিং ম্যানেজার আলী দুসা বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান মূলত ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) ও এশিয়া অঞ্চলে ব্যবসা করে। তবে সম্প্রতি ইইউর অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশে আসছে। সে জন্য তারাও তাদের বাজার বাড়াতে এ দেশে এসেছেন। কারণ, বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলংকায় তাদের পণ্যের গুদাম আছে। যেখান থেকে সহজেই পণ্য সরবরাহ করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। ভারতের এলএনজে ডেনিমের মহাব্যবস্থাপক উদয় ডি রানে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই তারা বাংলাদেশে ডেনিম কাপড় রফতানি করছেন। প্রদর্শনীতে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিদেশী ক্রেতাদের ধরা। কারণ, বাংলাদেশ বর্তমানে তৈরি পোশাক ব্যবসার কেন্দ্রস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে সব সময়ই ক্রেতাদের আনাগোনা থাকে।
বাংলাদেশের র্যাংক ডেনিম টেক্সটাইলের পরিচালক সুবজিত সামাদ্দার বলেন, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে গুণগতমানসম্পন্ন ডেনিম পণ্য সরবরাহে বাংলাদেশের সক্ষমতাকে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সামনে উপস্থাপন করাই এ প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য। ডেনিম শিল্পের সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা এবং ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করাটাও এ আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ডেনিমস অ্যান্ড জিন্স ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা সন্দ্বীপ আগরওয়াল বলেন, ডেনিম ফেব্রিক্সের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ হচ্ছে দ্রুততম বর্ধনশীল গন্তব্য। ডেনিমের আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দ্রুত বাড়ছে। শক্তিশালী টেক্সটাইল ভিত্তির ওপর বাংলাদেশের পোশাক খাত অবস্থান করছে যা এশিয়ার অনেক দেশে নেই।