তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর আদায় বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে কর ও শুল্ক-সংক্রান্ত নীতিমালা কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য করার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যালয়ে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব দাবিদাওয়া তুলে ধরেন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। আজকের সভায় নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ছাড়াও বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘উৎসে কর বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সেটি না হলে অন্তত দুই বছরের জন্য এটি বন্ধ করা উচিত।’ অবশ্য এনবিআরকে দেওয়া লিখিত প্রস্তাবে বিজিএমইএ উৎসে কর শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা এবং তা আগামী পাঁচ বছর কার্যকর রাখা ও করদায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছে।
সুবিধা চাওয়ার কারণ হিসেবে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে গত বছর পোশাকের চাহিদা কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ। এদিকে ভারত সরকার গত বছর পোশাক রপ্তানিতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে নিজেদের ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে। এদিকে আমাদের অবকাঠামো সমস্যা আছে। সারা দিন গ্যাস থাকে না। তারপরও আমরা ডিজেল দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখছি।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক রপ্তানিতে ১০ বছরে গড়ে ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। কিন্তু এখন সেটি ৩ শতাংশে এসে থেমে গেছে। রানা প্লাজা ধসের পর ১ হাজার ২০০ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে পোশাক খাত একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আগামী দুই বছর টিকে থাকতে পারলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এই দুই বছরের জন্য আমরা নীতিসহায়তা চাইছি।’
আগামী বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য বিজিএমইএ প্রাতিষ্ঠানিক বা করপোরেট কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, উৎসে কর কর্তনকে সর্বনিম্ন কর বিবেচনা না করে আগের মতো চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য করা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিলে মূসক অব্যাহতি, এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) বাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া, ফায়ার ফাইটিং পাম্প ও স্প্রিংকলারসহ অগ্নিনিরাপত্তার সব যন্ত্রপাতি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানির দাবি জানিয়েছে।
বিকেএমইএর সহসভাপতি আসলাম সানি বলেন, পৃথিবীর কোনো উৎপাদনশীল রাষ্ট্রে উৎসে কর নেই। এখানেও তুলে দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘বিমান ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে হাজার হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হয় সরকারকে। আমরা ভর্তুকি চাই না, নীতিসহায়তা চাই।’