সার্কভুক্ত দেশগুলো এক জোট হলে এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বাণিজ্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এ দেশগুলো বিশ্ব বাণিজ্যে অনেক বেশি অবদান রাখে। অথচ নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য খুবই কম। তাই সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা নেওয়া হলে সব দেশই উপকৃত হবে। সব দেশের প্রবৃদ্ধিতেই তা ভূমিকা রাখবে। গতকাল রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সার্ক চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্টি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে যৌথভাবে আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্ভাবনা দ্বার উন্মোচন এবং করণীয়’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ী, গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সার্ক চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্টির সভাপতি সুরাজ বৈধ্য বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অধিকাংশ মানুষই ভালো। কিছু সন্ত্রাসীর কারণে এ অঞ্চলের মানুষগুলো ভাবমূর্তি সংকটে রয়েছে। এ অঞ্চলের ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ ভালো। বাকি শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ মানুষ সন্ত্রাস বা জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত। আর এদের জন্যে অবশিষ্ট মানুষকে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। ভারত আর পাকিস্তানের পারমাণবিক বোমা এ অঞ্চলের মানুষের জন্যে হুমকি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের চিন্তার বিষয় হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা রয়েছে। এছাড়া দুদেশের মধ্যে মতবিরোধও চরম। এই উদ্বেগজনক অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসা উচিত। তিনি আরো বলেন, অনেক প্রত্যশা থাকলেও সাম্প্রতিক বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সময় সার্ক অঞ্চলের মানুষের জন্যে সার্ক তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। তারপরও এ অঞ্চলের ৯৫ শতাংশ মানুষ চায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতিষ্ঠান সার্ক ঠিকে থাকুক। তবে সার্কের বর্তমান কাঠামো থেকে বের হয়ে একে নতুনভাবে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সার্কের নতুন ভিশন হতে পারে পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া এবং প্রযুক্তি ও মানব সম্পদের উন্নয়নে আরো উদ্যোগ নেওয়া। এছাড়া পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে অর্থনৈতিক সম্পদকে আরো গতিশীল করা। বক্তব্যের শেষদিকে সুরাজ বৈধ্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর জনগণের অবাধ চলাচলের পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, সার্কের দেশগুলোর মানুষের মধ্যে প্রধান সমস্যা দারিদ্র্য। এরপরও এককভাবে সবদেশই অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের সীমানা মানুষের তৈরি। সার্কভুক্ত দেশগুলো এক জোট হলে, নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ালে সব দেশই লাভবান হতে পারে। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বক্তারা বলেন, বিশ্বের অন্য অঞ্চলগুলো যেখানে নিজেদের মধ্যে বড় অংশের বাণিজ্য করে, সেখানে সার্কের দেশগুলো মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ নিজেদের মধ্যে করে। এছাড়া আঞ্চলিক বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ অবকাঠামো খুবই দুর্বল। রুলস অব অরিজিনেও রয়েছে অনেক জটিলতা।