গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির উেস কর বিদ্যমান শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে আরো কমানোর দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি চায় এটি কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হোক। এনবিআরে পাঠানো বাজেট প্রস্তাবে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার এনবিআরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি তুলে ধরা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আগামী জুনে সরকার পরবর্তী অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
গত বছরের বাজেটে সরকার সব ধরণের রপ্তানির উপর উেস কর শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দেড় শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়। এটি কমানোর দাবিতে রপ্তানিকারকরা একাট্টা হন। বিজিএমইএ’র নেতারা ওই কর কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীরও দ্বারস্ত হন। শেষ পর্যন্ত সেটি কমিয়ে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়। তবে এবার আরো কমানোর দাবি জানানো হলো। সেই সঙ্গে এটিকে সর্বমিম্ন কর হিসেবে বিবেচনা না করে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানানো হয়েছে।
এর যুক্তি হিসেবে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশের বাজারে তৈরি পোশাকের দর ক্রমাগতভাবে কমছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান প্রায় আট শতাংশ। পরিবহন ব্যয়সহ অন্যন্য খরচ বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে মজুরি বেড়েছে ২১৯ শতাংশ। ফলে ব্যবসার খরচ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। এছাড়া কারখানা পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের শর্ত অনুযায়ী কারখানার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। ফলে চাপের মুখে পড়েছে পোশাক শিল্প। এ পরিস্থিতিতে উেস কর কমানো প্রয়োজন।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি ফেরদৌস পারভেজ বিভন ইত্তেফাককে বলেন, বর্তমানে গার্মেন্টস খাতের উদ্যোক্তারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। এ কারণে উেস কর কমানোর দরকার। অবশ্য এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ পোশাক খাত তথা রপ্তানির উেস কর কমানোর যৌক্তিকতা দেখছেন না। তারা বলছেন, বর্তমানে যে পরিমাণ সম্ভাব্য মুনাফা অনুমাণ করে কর ধার্য করা হচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ঠিক নয়। ফলে অনেক অর্থ অপ্রদর্শিত হয়ে যাচ্ছে।
বাজেটের জন্য বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে মোট ১২টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। পোশাক খাতের কর্পোরেট কর বিদ্যমান ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সংগঠনটি বলছে, এ সুযোগ পেলে তা বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে। এছাড়া অগ্নিনির্বাপকসহ গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক অব্যাহতি দেয়ার দাবিও জানিয়েছে বিজিএমইএ। বর্তমানে ফায়ার ডোর, স্প্রিঙ্কলারসহ বেশকিছু যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক রয়েছে। এসব খাতে শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদাভাবে আনতে হওয়ায় এইচএস কোডে (পণ্যের পরিচিতি নম্বর) জটিলতা তৈরি হয়। ফলে শুল্ক স্টেশনে আমদানিকারকদের জটিলতায় পড়তে হয়। বাড়তি ‘খরচ’ও করতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর সমাধান চায় আমদানিকারকরা।