Home Bangla Recent ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন ৫০% নারী পোশাককর্মী

১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন ৫০% নারী পোশাককর্মী

শ্রম আইনে দিনে আট কর্মঘণ্টার কথা বলা হলেও বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কর্মরত অর্ধেকের বেশি নারী শ্রমিক এর চেয়ে বেশি কাজ করেন। কারো কারো ক্ষেত্রে কর্মঘণ্টা চৌদ্দও ছাড়িয়ে যায়।

কর্মজীবী নারীদের সংগঠন ‘কর্মজীবী নারী’ ও কেয়ার বাংলাদেশের ‘ঐক্য’ প্রজেক্ট পরিচালিত এক গবেষণায় নারী শ্রমিকদের কাজের এই চিত্র উঠে এসেছে।

সোমবার সোনারগাঁও হোটেলে ‘কর্মক্ষেত্রে তৈরি পোশাক শিল্পখাতের নারী শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাকির হোসেন।

গবেষণার জন্য ঢাকা ও গাজীপুরের ৬৪টি পোশাক কারখানার ১৫০ জন নারী শ্রমিককে বেছে নেয়া হয়।

এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক শ্রমিক দৈনিক ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করার কথা জানিয়েছেন। ১০ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করেন ৫০ শতাংশের বেশি শ্রমিক; এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ শ্রমিক ১১-১২ ঘণ্টা

হকাজ করেন। এছাড়া ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করে ৮ শতাংশ নারী শ্রমিক। দুই শতাংশ শ্রমিক ১৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন।

মাত্র ১ শতাংশ শ্রমিক দিনে আট ঘণ্টা কাজ করার কথা জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, কর্মক্ষেত্রে বাচনিক হয়রানি অর্থাৎ গালি ও কটু কথার শিকার হতে হয় প্রায় ৮৫ শতাংশ নারী শ্রমিককে। যৌন হয়রানির শিকার হয় ১৩ শতাংশ নারী শ্রমিক। ৭১ শতাংশ নারী শ্রমিককে মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রতিনিয়ত চাকরি হারানোর ভয় বা ছাঁটাইয়ের ভয়ে থাকেন তারা। চড় বা আঘাতের মতো শারীরিকভাবে হয়রানির শিকার হন ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক।

এ ধরনের হয়রানির ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশ নারী শ্রমিকই জানেন না যে তারা অভিযোগ করতে পারবেন বা তাদের অভিযোগের অধিকার আছে।

এ গবেষক আরও জানান, তার পরিচালিত গবেষণাটির ৭৮ শতাংশ নারী শ্রমিক বলেছে, তারা মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছেন। ৩৭ শতাংশ শ্রমিক চার মাসের জায়গায় দুই থেকে তিন মাসের জন্য ছুটি পেয়েছেন, তবে এদের নয় শতাংশ বেতন ছাড়া ছুটি পেয়েছেন। ১৮ শতাংশ জানেন না মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা। আর ৪৩.৭ শতাংশ নারী শ্রমিক জানেন না তারা দীর্ঘমেয়াদি মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে পারবেন।

রাতের পালায় কাজের জন্য সম্মতি নেয়ার আইনি কাঠামো থাকলেও ১৫ শতাংশ শ্রমিককে সবসময় বাধ্যতামূলকভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে হয় বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

জাকির হোসেন বলেন, ‘গবেষণাটির প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী শ্রমিককে নৈশকালীন দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে।’

কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার পলিসি বাস্ত্মবায়ন বাধ্যতামূলক করা, গার্মেন্টসে নারী ও পুরম্নষকে সচেতন করার জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার সুপারিশ করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here