Home Bangla Recent ‘মজুরি বৃদ্ধিতে বাধা শ্রমিক সংগঠনের ঐক্যের অভাব’

‘মজুরি বৃদ্ধিতে বাধা শ্রমিক সংগঠনের ঐক্যের অভাব’

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকারের ঘোষিত নতুন মজুরি বোর্ডে যৌক্তিক ও ন্যূনতম মজুরি কত দাবি করা যাবে এ নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যেই মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে সংগঠনগুলো ভিন্ন ভিন্ন মজুরি কাঠামোর দাবি করছে। তাই শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন শ্রমিক নেতারা। তাঁরা মনে করেন, প্রয়োজনীয় ঐক্য সংহতি না থাকাই মজুরি বৃদ্ধির লড়াইয়ে প্রধান বাধা হবে। গার্মেন্ট খাতের শ্রমিকদের ৭০টির বেশি সংগঠন আছে। এর মধ্যে ২০টিই সরকার, মালিক এবং বেসরকারি সংস্থা এনজিওর দালাল বলে মনে করেন তাঁরা।

গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্যোগে ‘মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান বিবেচনায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কত হওয়া উচিত’ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় বক্তারা এই আশঙ্কার কথা জানান। এ ছাড়া শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বর্তমান বাজারদর বিবেচনা করে ১৮ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণের দাবি জানান।

গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি কমরেড সাইফুল হক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্টের ১৮ হাজার টাকার মজুরির যৌক্তিকতার সঙ্গে একমত পোষণ করে বক্তারা ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তাঁরা আরো বলেন, শ্রমিকের মজুরির দাবির কথা এলেই মালিকের সক্ষমতার প্রশ্ন তোলা হয়; কিন্তু অদ্যাবধি গার্মেন্ট মালিকদের প্রকৃত সক্ষমতা কত তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা হয়নি। মালিকদের মুনাফার পরিমাণকে আড়াল করার জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয় না।

নেতারা আরো বলেন, পরিবারের ন্যূনতম প্রয়োজন মেটাতে হলে পরিবারের একজন কর্মক্ষম মানুষকেই প্রধান আয়ের দায়িত্ব নিতে হয়। তাই জীবন যাপন ব্যয়, সিপিডি গবেষণা অনুযায়ী খাদ্য পুষ্টি মান অর্জন, অক্সফামের হিসাব, সরকার ঘোষিত পে স্কেলের বেতন কাঠামো, প্রতিযোগী দেশগুলোর মজুরি এসব বিবেচনায় কোনোভাবেই ১৮ হাজার টাকার কম নয়।

উন্নয়নশীল দেশের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাবে না কেন উল্লেখ করে ধারণাপত্রে বলা হয়, সরকারের দাবি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের স্তর থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্তরে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে শ্রমিকরা মানসম্পন্ন জীবন যাপন করার মতো মজুরি পাবে না, এটা হতে পারে না। আবার অর্থনীতির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক গতিশীলতা বাড়ে। এ কারণেই প্রতিটি উন্নত দেশের শ্রমিকদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মান উন্নত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের সঞ্চালনায় এতে ধারণাপত্র উপস্থান করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমিত্র কুমার দাশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here