তৈরি পোশাকের পণ্য ও সেবায় ভ্যাট মওকুফ, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির ওপর মূসক বাতিল ও রফতানিতে উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। একই সঙ্গে অডিটের নামে হয়রানি বন্ধ ও সবার জন্য সমান কর্পোরেট টেক্স প্রণয়নের দাবি করেছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় এনবিআর’র চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় নিট পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আগামী তিন বছরে গার্মেন্টস পণ্য রফতানিতে উৎসে কর সম্পূর্ণ মওকুফের প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে কর্পোরেট কর ১০ শতাংশ হারে নির্ধারণসহ মোট ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
সভায় বিজিএমই’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাক খাতে ৩০ বিলিয়ন ডলার রফতানিতে উৎসে কর আসে ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এ সোর্স ট্যাক্স (উৎসে কর) বাতিল করে দিন। পোশাকসহ সব খাতে কর্পোরেট কর ১০ শতাংশ করে দিন। পাশাপাশি এনবিআরের অডিট ব্যবস্থা অনলাইন ভিত্তিক করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এনবিআরকে দেয়া লিখিত প্রস্তাবে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে উৎসে কর শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা। স্থায়ীভাবে উৎপাদিত রফতানি সংশ্লিষ্ট পণ্য ও ল্যাবরেটরি টেস্ট চার্জ, কনসালটেন্সি চার্জসহ ৩৯টি সেবা পণ্যের ক্ষেত্রে ভ্যাট মওকুফসহ রিটার্ন দাখিল করা থেকে অব্যাহতি প্রদান। আগামী বাজেটে সংগঠনটি প্রাতিষ্ঠানিক বা কর্পোরেট কর ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়।
এছাড়া উৎসে কর কর্তনকে সর্বনিম্ন কর বিবেচনা না করে আগের মতো চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য করা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিলে মূসক অব্যাহতি, এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) বাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া, ফায়ার ফাইটিং পাম্প ও স্প্রিং কলারসহ অগ্নি নিরাপত্তার সব যন্ত্রপাতি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানির করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের অডিট কার্যক্রমের জন্য দলিলাদি দাখিলের সময়সীমা ৩ মাসের পরিবর্তে ৬ মাসের বিধান রাখা। অপরদিকে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা, কর্মসংস্থান, রফতানি ও জাতীয় স্বার্থে পোশাক শিল্পের সক্ষমতা ধরে রাখা ও এর সুরক্ষার জন্য রফতানি বিলের উপর শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প শুল্ক কর্তন করা হতে তৈরি পোশাক শিল্পকে অব্যহতি প্রদান করার কথাওও জানানো হয়।
এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা জনিত কার্যক্রমে ব্যবহৃত সকল উপকরণ সিসি ক্যামেরা ও তার যন্ত্রাংশ, আর্চওয়ে ইত্যাদি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া দাবি জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার বলেন, দেশি পণ্য বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে সকলকে সমান সুযোগ দেয়া হবে। সরকারের এক্সপোর্ট গ্রো করতে হবে। তা না হলে উন্নয়নশীল দেশে যাওয়া সম্ভব হবে না।