Home Bangla Recent পোশাক খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে আড়াইশ’ কোটি টাকার প্রকল্প

পোশাক খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে আড়াইশ’ কোটি টাকার প্রকল্প

দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নয়নে দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ‘তৈরি পোশাক খাতে কর্মপরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় আড়াই’শ কোটি টাকা। মূলত রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) শক্তিশালী করার মাধ্যমে জাতীয় উদ্যোগের আওতাধীন তৈরি পেশাক কারখানার সংস্কার কাজ সমাপ্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শ্রম পরিদর্শন সংক্রান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধি, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বেটার ওয়ার্ক কর্মসূচীর পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে এ প্রকল্প সাহায্য করবে। সরকারের নিজস্ব তহবিলের পাশাপাশি এতে বড় অংকের অর্থ সহায়তা আসবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মাধ্যমে (আইএলও)। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পানা কমিশনে পাঠিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরি পোশাক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। ওই ঘটনার পর দেশি-বিদেশি নান উদ্যোগে অনেকটা নতুন রূপে তৈরি হয়েছে খাতটি। এতে ছোট ছোট কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও বড় কারখানাগুলো প্রযুক্তি ও কর্মপরিবেশের দিক হয়ে উঠছে বিশ্ব মানের। যা ইতোমধ্যেই উন্নত বিশ্বের ক্রেতাদের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং আইএলও। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্র অর্জনকারী খাত তৈরি পোশাকের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন এবং শোভন কাজের নিশ্চয়তা প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এ শিল্পের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

এর আগে তিন বছরমেয়াদী ‘তৈরি পোশাক খাতে কর্মপরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কারখানা ভবন ও অগ্নি নিরাপত্তা মূল্যায়ন, শ্রম পরিদপ্তর সংস্কার, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বাড়ানো, রানাপ্লাজায় আহতদের পুনর্বাসন এবং বেটার ওয়ার্ক কর্মসূচী নেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে শুরু হওয়া কাজের মধ্যে যেসব এখনো চলমান রয়েছে সেগুলো শেষ করা হবে। এক্ষেত্রে ১ম পর্যায়ের প্রকল্পের মাধ্যমে যাচাইকৃত ৮ শতাধিক কারখানা নিয়মিত ফলোআপের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে লেবার ইন্সপেক্টরদের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ, আরসিসি অফিসের জন্য সাপোর্ট সার্ভিস ও সরঞ্জাম ক্রয়সহ আরো কিছু কার্যক্রমের কথা বলা হয়েছ।

বর্তমানে দেশের বেশ কিছু কারখানা যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) এবং গ্রিন বিজনেস সার্টিফিকেশন ইনকরপোরেট (জিবিসিসিআই) কর্তৃক সবুজ কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে। কারখানাগুলো সবুজ শিল্পায়ন কার্যক্রমের সূচক লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইনের (লিড) সনদ পেয়েছে। কারখানা নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষা করে ভবন নির্মাণ এবং উত্পাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে সেগুলোকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কঠিন মান যাচাই প্রক্রিয়া শেষে এ সনদ দেয় ইউএসজিবিসি। দেশের প্রায় ৭০ কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কারখানা সর্বোচ্চ প্লাটিনাম ক্যাটাগরির। আরও ২৮০টি সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সবুজ কারখানা তৈরিতে সারা বিশ্বে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এমনকি ভারতেও প্লাটিনাম ক্যাটাগরির কারখানার সংখ্যা মাত্র তিন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৪৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আইএলও সংস্থান করবে ২০৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এ টাকা কানাডা, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডির তহবিল থেকে আসবে। বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে। প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে অননুমোদিত প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here